‘গুডউইল’ নামের একটি র্যানসমওয়্যার বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। সম্প্রতি ভারতেও এই র্যানসমওয়্যার শনাক্ত হয়েছে। ভারতের ক্লাউডসেক নামের একটি ডিজিটাল নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠান গুডউইল নামের এই র্যানসমওয়্যার বিষয়ে সবাইকে সতর্ক করেছে। তাদের দাবি, সেবামূলক কাজ করতে বাধ্য করার জন্য গুডউইল নামটি বেছে নিয়েছে এই র্যানসমওয়্যারের পেছনের লোকজন। কারণ, কম্পিউটারের নিয়ন্ত্রণ ফিরে পেতে ব্যবহারকারীকে সেবামূলক কাজের শর্ত দেন তাঁরা।
ক্লাউডসেক জানায়, গুডউইল র্যানসমওয়্যারে আক্রান্ত ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে গৃহহীনদের নতুন কাপড় কিনে দেওয়া, শিশুদের ব্র্যান্ডের পিৎজার দোকানে নিয়ে খাওয়ানো এবং জরুরি চিকিৎসাসেবা প্রয়োজন, এমন ব্যক্তিকে আর্থিক সহায়তার কথা বলা হচ্ছে। এ তিন কাজ সম্পন্ন হলে নিজের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে ফেসবুক বা ইনস্টাগ্রামের মতো সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে একটি পোস্ট দিতে হবে। এ শর্তে রাজি না হলে কম্পিউটারে থাকা গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সাময়িক বা স্থায়ী মুছে ফেলা, কোম্পানির তথ্য হাতিয়ে নেওয়া, কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়ার মতো নানা হুমকি দেওয়া হচ্ছে।
ভারতের এনডিটিভি জানিয়েছে, এ বছরের মার্চ মাসে প্রথম ক্লাউডসেকের গবেষকেরা এই র্যানসমওয়্যার শনাক্ত করেন। এই সাইবার হামলার পেছনে যাঁরা রয়েছেন, তাঁরা আর্থিক সুবিধা নেওয়ার বদলে সামাজিক ন্যায়বিচার প্রচারে আগ্রহী। একবার এই র্যানসমওয়্যার কম্পিউটারের নিয়ন্ত্রণ নিলে তা কম্পিউটারে থাকা সব তথ্য, ছবি, ভিডিওসহ গুরুত্বপূর্ণ ফাইল এনক্রিপ্ট করে লক করে ফেলে। তাঁদের কাছে থাকা বিশেষ ‘কি’ ছাড়া এই ফাইলগুলো খোলা যায় না।
যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা গবেষকদের মতে, র্যানসমওয়্যার থেকে সুরক্ষিত থাকতে ই–মেইলে আসা কোনো সন্দেহজনক লিংকে ক্লিক করা যাবে না। কারণ, র্যানসমওয়্যার হামলা চালানোর জন্য ব্যবহারকারীকে বোকা বানিয়ে তাঁর কম্পিউটারে ক্ষতিকর প্রোগ্রাম প্রবেশ করানো হয়। ক্ষতিকর এ প্রোগ্রাম ই–মেইলের লিংক বা অ্যাটাচমেন্টের আড়ালে লুকানো থাকে। যখন ব্যবহারকারী ওই লিংকে ক্লিক করেন বা ডকুমেন্ট খোলেন, তখনই কম্পিউটার আক্রান্ত হয়। কম্পিউটারের নিয়ন্ত্রণ ওই প্রোগ্রামের নিয়ন্ত্রণে চলে যায়। ফলে প্রোগ্রামটি কম্পিউটারের সব ফাইল এনক্রিপ্ট করে মুক্তিপণ দিতে বার্তা প্রদর্শন করে। স্মার্টফোনেও এ ধরনের আক্রমণ হতে পারে। র্যানসমওয়্যার সমস্যার কোনো পূর্ণাঙ্গ সমাধান নেই। তবে এ ধরনের আক্রমণ থকে ফাইল নিরাপদ রাখতে নিয়মিত তথ্য আলাদা ডিভাইসে সংরক্ষণের অভ্যাস গড়তে হবে। এ ছাড়া হালনাগাদ নিরাপত্তাব্যবস্থা ব্যবহার করতে হবে।