বাসায় উচ্চ গতির ইন্টারনেট সংযোগের ব্যবহার এখন নাগরিক জীবনযাপনের একটি অনুষঙ্গ। এ জন্য ব্রডব্যান্ড সংযোগ অনেকের বাসাবাড়িতেই দেখা যায়। এই সংযোগ বাড়িতে থাকা মানে স্মার্টফোন, ল্যাপটপ, স্মার্ট টিভিতে ব্যবহারের জন্য তারহীন ওয়াই-ফাই রাউটার অপরিহার্য। একটা রাউটার থেকেই বেশ কিছু যন্ত্রে ইন্টারনেট সংযোগ পাওয়া যায় তার ছাড়া। এই রাউটারগুলো বিদ্যুৎ-সংযোগে চলে। জানেন কি, রাউটার চালাতে মাসে কত টাকার বিদ্যুৎ খরচ হয়?
বাজারে বেশ কিছু ব্র্যান্ডের রাউটার পাওয়া যায়। এর মধ্যে টিপি লিংক, ডি লিংক, টোটো লিংক, নেট গিয়ার, শাওমি, মাইক্রোটিক, সিসকো ও লিংকসিসের তৈরি রাউটার বেশি কেনেন ক্রেতারা। ঘরে ও প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়ে ব্যবহারের জন্য রাউটার সাধারণত আলাদা হয়ে থাকে। বাড়ি ও অফিস বুঝে রাউটারের ক্ষমতাও কমবেশি হয়ে থাকে। দামেও রয়েছে ভিন্নতা। ঘরে সাধারণ কাজের উপযোগী রাউটারগুলোর দাম সাধারণত দুই হাজার থেকে পাঁচ হাজার টাকা। অপর দিকে পেশাগত বা প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়ে ব্যবহৃত রাউটারগুলোর দাম ৩ হাজার থেকে ৭০ হাজার টাকা হয়ে থাকে।
অনেকের মনেই প্রশ্ন জাগে, সারা দিন রাউটার চালু থাকলে কত টাকার বিদ্যুৎ খরচ হয়? বাড়ির রাউটারগুলো সাধারণত ৯ থেকে ১২ ভোল্ট এবং ০.৬০ থেকে ১ অ্যাম্পিয়ারের হয়ে থাকে। ধরি, একটি রাউটার ৯ ভোল্ট এবং ০.৬০ অ্যাম্পিয়ারের। এবার বিদ্যুৎ খরচের হিসাব বের করার জন্য ভোল্ট ও অ্যাম্পিয়ার গুণ করতে হবে। উদাহরণের রাউটারে এই হিসাব হবে ৯ x .০৬ = ৫.৪ ওয়াট।
এদিকে বাংলাদেশের সব বিদ্যুৎ বিলের হিসাব হয় কিলোওয়াট–ঘণ্টা হিসাবে। রাউটারটি ৫.৪ ওয়াটের। ১ কিলোওয়াট–ঘণ্টার হিসাব বের করতে ৫.৪ সংখ্যাকে ১০০০ দিয়ে ভাগ করতে হবে। এক ঘণ্টায় এই রাউটার খরচ করবে .০০৫৪ ওয়াট।
২০২৩ সালের ১ মার্চ থেকে কার্যকর বিদ্যুতের নতুন মূল্যহার অনুযায়ী আবাসিক গ্রাহকের জন্য কয়েকটি ধাপে বিদ্যুৎ বিল আসে। প্রথম ধাপ ০ থেকে ৭৫ ইউনিট পর্যন্ত ৪.৮৫ টাকা, দ্বিতীয় ধাপ ৭৬ থেকে ২০০ ইউনিট ৬.৬৩ টাকা, তৃতীয় ধাপ ২০১ থেকে ৩০০ ইউনিট ৬.৯৫ টাকা, চতুর্থ ধাপ ৩০১ থেকে ৪০০ ইউনিট ৭.৩৪ টাকা এবং পঞ্চম ধাপ ৪০১ থেকে ৬০০ ইউনিট ১১.৫১ টাকা।
যদি ৬.৬৩ টাকা প্রতি ইউনিট মূল্য হয়, তাহলে ৫.৪ ওয়াটের রাউটারে প্রতি ঘণ্টায় খরচ ৬.৬৩ x .০০৫৪ = .০৩৫, অর্থাৎ ৪ পয়সার কম। সারা দিন ৫.৪ ওয়াটের রাউটার ব্যবহার করা হয়, তবে বিদ্যুৎ খরচ হবে ২৪ x ০.০৩৫, অর্থাৎ ৮৪ পয়সা। মাসে খরচ হবে ২৫ টাকার একটু বেশি।