বর্তমানে দেশের বিভিন্ন স্থানে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এ বছরের তাপপ্রবাহ ইতিমধ্যে ৭৬ বছরের রেকর্ড ভাঙলেও জীবিকার প্রয়োজনে বাধ্য হয়েই প্রতিদিন রাস্তায় গাড়ি নিয়ে বের হচ্ছেন অনেকে। অতিরিক্ত গরম ও তাপের কারণে গাড়িতে বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয়। আর তাই এ বিষয়ে সচেতন না হলে চলতি পথে গাড়িতে বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিতে পারে। অতিরিক্ত গরমের কারণে গাড়ির বিভিন্ন সমস্যা ও সেগুলো সমাধানের কৌশল জেনে নেওয়া যাক।
গাড়ি চলার সময় ইঞ্জিন গরম হয়ে যাওয়া স্বাভাবিক। তবে প্রতিটি গাড়ির ইঞ্জিনেই গরম সহ্য করার নির্দিষ্ট মাত্রা আছে। গ্রীষ্মকালে গাড়ি চালানোর সময় ইঞ্জিন স্বাভাবিকভাবেই অতিরিক্ত গরম হয়ে যায়। ফলে তীব্র তাপপ্রবাহের সময় ইঞ্জিন অতিরিক্ত গরম হওয়ার কারণে গাড়ির কুলিং সিস্টেম তা নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না। এমনকি অতিরিক্ত গরমের কারণে ইঞ্জিন গরম হয়ে অনেক সময় গাড়িতে আগুনও ধরে যায়। আর তাই গাড়ি চালানোর আগে অবশ্যই থার্মোস্ট্যাট বা রেডিয়েটর ফ্যান ঠিকমতো কাজ করছে কি না, তা পরীক্ষা করতে হবে।
অতিরিক্ত তাপ গাড়ির ব্যাটারির জন্য ভালো নয়। কারণ, উচ্চ তাপমাত্রা ব্যাটারির ইলেকট্রোলাইট থেকে পানির বাষ্পীভবনের হার বেড়ে যায়। এতে ব্যাটারির কার্যকারিতা ধীরে ধীরে কমতে থাকে। আর তাই গাড়ির ব্যাটারির কার্যকারিতা নিয়মিত পরীক্ষা করার পাশাপাশি পুরোনো হলে দ্রুত বদলে ফেলতে হবে। একই সঙ্গে ব্যাটারির তারের সংযোগে ত্রুটি থাকলে তা-ও সমাধান করতে হবে।
অতিরিক্ত গরমের সময় রাস্তায় থাকা পিচের তাপমাত্রা বাড়তে পারে। এতে গাড়ির চাকা অতিরিক্ত গরম হয়ে যায়। ফলে চাকায় কোনো ত্রুটি থাকলে তা ফেটে যেতে পারে। রোদের মধ্যে রাস্তার ওপর দীর্ঘক্ষণ গাড়ি পার্ক করে রাখলেও এ ধরনের সমস্যা হতে পারে। সমস্যা সমাধানে নিয়মিত চাকার বাতাসের চাপ পরীক্ষা করার পাশাপাশি গাড়ি ছায়াযুক্ত স্থানে পার্ক করতে হবে।
গরমের সময় গাড়ির ভেতরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি বাইরের ধুলাবালু থেকে রক্ষা পেতে নিয়মিত গাড়িতে থাকা শীতাতপনিয়ন্ত্রণ যন্ত্র ব্যবহার করেন অনেকেই। কিন্তু অতিরিক্ত গরমের সময় তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণের জন্য বাড়িতে কাজ করতে হওয়ায় ত্রুটিপূর্ণ কমপ্রেসর বা কনডেনসার থাকলে গাড়ির শীতাতপনিয়ন্ত্রণ যন্ত্র নষ্ট হয়ে যায়। এ সমস্যা সমাধানে নিয়মিত গাড়ির শীতাতপনিয়ন্ত্রণ যন্ত্রের কমপ্রেসর পরীক্ষা করতে হবে।
গাড়িতে জ্বালানির পাশাপাশি বিভিন্ন যন্ত্রাংশের জন্য ইঞ্জিন তেল, ট্রান্সমিশন ফ্লুইড ও ব্রেক ফ্লুইড ব্যবহার করা হয়। অতিরিক্ত গরমে ইঞ্জিন তেল, ট্রান্সমিশন ফ্লুইড ও ব্রেক ফ্লুইডের বাষ্পীভবনের হার বেড়ে যায়। ফলে বেশি খরচ হয়। সমস্যা সমাধানে প্রতিদিন গাড়ি চালানোর আগে ইঞ্জিন তেল, ট্রান্সমিশন ফ্লুইড ও ব্রেক ফ্লুইডের পরিমাণ পরীক্ষা করতে হবে।
তাপমাত্রার ওঠানামার কারণে গাড়ির উইন্ডস্ক্রিনে চাপ তৈরি হতে পারে। ফলে সামান্য ফাটল থেকে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মির কারণে গাড়ির রং নষ্ট হয়ে যাওয়ার পাশাপাশি ড্যাশবোর্ড গরম হয়ে যাওয়ার মতো সমস্যাও হতে পারে।
সূত্র: ড্রিভেন কার গাইড