সৃজনশীল কাজ যাচাইয়ের ক্ষেত্রে ভুল করছে এআই
সৃজনশীল কাজ যাচাইয়ের ক্ষেত্রে ভুল করছে এআই

এআই সফটওয়্যারের ভুলের কারণে চাকরির সাক্ষাৎকার থেকে বাদ পড়লেন পাকিস্তানি নারী

পাকিস্তানে সাম্প্রতিক একটি ঘটনার পর চাকরির নিয়োগপ্রক্রিয়ায় এআই সফটওয়্যার বা টুল ব্যবহারের প্রয়োজনীয়তা ও নির্ভরযোগ্যতা নিয়ে নতুন করে বিতর্ক শুরু হয়েছে। দামিশা ইরফান নামের একজন নারীর কনটেন্ট রাইটারের চাকরির সাক্ষাৎকার থেকে বাদ পড়ার পর এ বিতর্ক শুরু হয়। দামিশার নিজের হাতে লেখা মৌলিক আধেয় (কনটেন্ট) কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই দিয়ে লেখা বলে ভুলভাবে শনাক্ত করেছে এআই ডিটেক্টর। ফলে তিনি সাক্ষাৎকার থেকে বাদ পড়ে যান। ঘটনাটি এআইয়ের ওপর অতিরিক্ত নির্ভরতার কারণে প্রতিভা মূল্যায়নের ক্ষেত্রে বাধা সৃষ্টি হয়েছে বলে প্রশ্ন উঠেছে।

গত কয়েক বছরে চিকিৎসা, আইন ও কনটেন্ট তৈরির মতো জটিল ক্ষেত্রে এআই উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি সাধন করেছে। তবে সৃজনশীল কাজের মৌলিকতা নির্ধারণে এআইয়ের ব্যবহার এখনো সমস্যা সৃষ্টির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। পেশাজীবীদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম লিংকডইনে তাঁর অভিজ্ঞতা নিয়ে দামিশা লেখেন, ‘আমার লেখাটি এই “ভুল” এআই টুলের কারণে বাতিল হলো, যা সত্যিকার সৃজনশীলতা এবং এআই দিয়ে লেখা কনটেন্টের মধ্যে সঠিকভাবে পার্থক্য করতে সক্ষম নয়।’

দামিশা প্রশ্ন তোলেন, ‘আমরা কি এই ভুল প্রযুক্তির কারণে প্রতিভা হারাতে বসেছি?’ তাঁর লিংকডইনের পোস্টটি পাকিস্তানে ব্যাপক সাড়া ফেলে এবং অনেক ব্যবহারকারীও তাঁদের একই ধরনের অভিজ্ঞতা শেয়ার করেন। দামিশা ছাড়া আরও অনেক কন্টেন্ট নির্মাতা অভিযোগ করেছেন যে তাঁদের আসল কাজও প্রায়ই এআই ডিটেক্টর দ্বারা ভুলভাবে শনাক্ত হচ্ছে। একজন মন্তব্যকারী লেখেন, ‘আমি সাম্প্রতিক কিছু কনটেন্ট তৈরিতে এআইয়ের সামান্য সহায়তা নিয়ে তৈরি করেছি। কিছু লাইন এআইয়ে দিয়ে লেখা হলেও আমার সম্পূর্ণ লেখাই এআই দিয়ে তৈরি বলে শনাক্ত করা হয়েছে।’ আরেকজন মন্তব্য করেন, ‘নব্বই শতাংশের বেশি এআই ডিটেক্টর মৌলিক লেখাকেও এআই-নির্মিত বলে চিহ্নিত করে এবং অধিকাংশ ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত গ্রহণকারীরা এ ধরনের ফলাফল যাচাই করার প্রয়োজনবোধ করেন না।’

দামিশার তাঁর পোস্টের শেষে এআই টুল ব্যবহারে অধিক দায়িত্বশীলতার আহ্বান জানিয়ে লেখেন, ‘আসল সৃষ্টিশীল প্রতিভা যেন প্রযুক্তির এই ভুলের কারণে হারিয়ে না যায়, সেদিকে আমাদের সচেতন থাকা উচিত।’ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এআই প্রযুক্তি আমাদের জীবনের নানা ক্ষেত্রে গভীর প্রভাব ফেলছে। তবে এই প্রযুক্তিকে কখনোই মানবিক বিবেচনার বিকল্প ভাবা উচিত নয়। বিশেষ করে সৃজনশীল কাজের ক্ষেত্রে প্রকৃত প্রতিভা মূল্যায়ন করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

সূত্র: ইন্ডিয়াটাইমস ডটকম