অগ্ন্যুৎপাতে চাপা পড়া কাগজের বান্ডিলে
অগ্ন্যুৎপাতে চাপা পড়া কাগজের বান্ডিলে

২ হাজার বছর আগে অগ্ন্যুৎপাতে চাপা পড়া কাগজের পাঠোদ্ধার করল এআই

দুই হাজার বছর আগে মাউন্ট ভিসুভিয়াসের অগ্ন্যুৎপাতের ফলে ইতালির পম্পেই নগরী ধ্বংস হয়ে যায়। এর ফলে ১৫ হাজারের বেশি মানুষ মারা যাওয়ার পাশাপাশি পুরো শহরের বাড়িঘর ও রাস্তাঘাট চাপা পড়ে যায় উত্তপ্ত লাভার নিচে। অগ্ন্যুৎপাতে ধ্বংস হওয়ার ঠিক আগমুহূর্তে পম্পেই নগরীর জীবনযাত্রার তথ্য জানতে দীর্ঘদিন ধরেই কাজ করছেন প্রত্নতত্ত্ববিদেরা। এরই মধ্যে সে সময় ব্যবহৃত বেশ কিছু প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনসহ বিভিন্ন বস্তু উদ্ধার করেছেন তাঁরা। তবে উদ্ধার করা বেশ কিছু নিদর্শন অগ্ন্যুৎপাতের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় সেগুলোর তথ্য আজও জানা যায়নি। এবার কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তি ব্যবহার করে দুই হাজার বছর আগে ভিসুভিয়াস অগ্ন্যুৎপাতের নিচে চাপা পড়া কাগজের বান্ডিলে থাকা তথ্য উদ্ধার করেছেন একদল শিক্ষার্থী। এর ফলে ইতিহাস অনুসন্ধানের একটি নতুন যুগের সূচনা হলো বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।

ভিসুভিয়াস অগ্ন্যুৎপাতে চাপা পড়া কাগজের পাঠোদ্ধার করার জন্য ‘ভিসুভিয়াস চ্যালেঞ্জ’ নামের একটি প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। প্রতিযোগিতায় ১৮ শতকে ইতালিতে আবিষ্কার হওয়া প্যাপিরাসের তৈরি পুড়ে যাওয়া কাগজের বান্ডিলের তথ্য উদ্ধার করতে বলা হয়। মিসর, সুইজারল্যান্ড ও যুক্তরাষ্ট্রের তিন শিক্ষার্থীর সমন্বয়ে গড়া একটি দল মেশিন-লার্নিং অ্যালগরিদম ব্যবহার করে কাগজের বান্ডিলে লেখা উদ্ধার করেন। প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হয়ে সাত লাখ মার্কিন ডলার পুরস্কারও জিতেছেন তাঁরা।

জানা গেছে যে অগ্ন্যুৎপাতে চাপা পড়া কাগজগুলো প্রাচীন রোমান শহর হারকিউলেনিয়াম নগরীর সাক্ষ্য বহন করে চলছে। প্রায় ছাই হয়ে যাওয়ায় কাগজগুলোয় থাকা কোনো লেখা এত দিন জানা সম্ভব হয়নি। আপাতদৃষ্টে আগুনে পুড়ে যাওয়া ছাইয়ের স্তূপ মনে হলেও ঐতিহাসিকভাবে কাগজগুলোর গুরুত্ব অনেক। কেননা, প্রাচীন রোমের সময়কার একমাত্র লিখিত নথি হিসেবে এসব কাগজের সন্ধান পাওয়া গেছে।

১৭৫২ সালে উদ্ধার করা কাগজের বান্ডিলগুলোয় থাকা তথ্য জানতে অনেক প্রত্নতত্ত্ববিদ দীর্ঘদিন চেষ্টা করেছেন। কিন্তু পুড়ে যাওয়া কাগজগুলো খুবই ভঙ্গুর হওয়ায় অর্থ উদ্ধার করা যায়নি। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে কাগজগুলোয় থাকা মাত্র কয়েক শ শব্দের অর্থ জানা গেছে, যা কাগজগুলোয় থাকা মোট তথ্যের মাত্র পাঁচ শতাংশ।
সূত্র: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস