দেশের সফটওয়্যার ও তথ্যপ্রযুক্তি সেবা খাতের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসের (বেসিস) ২০২৪-২৬ মেয়াদের কার্যনির্বাহী কমিটির নির্বাচনে ৩৩ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। আজ শনিবার বিকেল পাঁচটায় নির্বাহী কমিটির ১১ পদে ৩৩ প্রার্থীর চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করেছে নির্বাচন পরিচালনা কমিটি। এবারের নির্বাচনে মোট ৪১ প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন। তবে ১৭ এপ্রিল মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিনে আট প্রার্থী নির্বাচন থেকে নিজেদের সরিয়ে নেন।
১১ সদস্যের নির্বাহী কমিটিতে বেসিসের সাধারণ সদস্য শ্রেণি থেকে আটজন এবং সহযোগী, অ্যাফিলিয়েট ও আন্তর্জাতিক সদস্য শ্রেণি থেকে একজন করে নির্বাচিত হবেন। আগামী ৮ মে বেসিস নির্বাচনের ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। সেদিনই ভোট গণনা করে ফলাফল প্রকাশ করা হবে। আগামী পরশু বিকেল পাঁচটায় রাজধানীর কাকরাইলে আইডিইবি মিলনায়তনে প্রার্থী পরিচিতি সভার আয়োজন করেছে নির্বাচন বোর্ড।
৩৩ প্রার্থী মূলত তিনটি প্যানেলে ভাগ হয়ে বেসিসের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এরই মধ্যে তিনটি প্যানেলের ঘোষণাও এসেছে। ‘টিম সাকসেস’ প্যানেলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন ফ্লোরা টেলিকমের মোস্তাফা রফিকুল ইসলাম। এই প্যানেলের অন্য প্রার্থীরা হলেন সাধারণ সদস্য শ্রেণির তৌফিকুল করিম, মোহাম্মদ আমিনুল্লাহ, মো. শহিবুর রহমান খান, ফারজানা কবির, মো. শফিউল আলম, ইমরান হোসেন, সৈয়দা নাফিসা রেজা এবং এন এম রাফসান জানি (সহযোগী), আবদুল আজিজ (অ্যাফিলিয়েট) ও আবু মুহাম্মদ রাশেদ মজিদ (আন্তর্জাতিক)।
সদস্যদের জরুরি দাবি কর অব্যাহতির সময় বাড়াতে কাজ করতে চায় টিম সাকসেস বলে প্রথম আলোকে জানান মোস্তাফা রফিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘আগামী জুনে মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই আমরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে বিষয়টি সুরাহা করতে চাই। স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে ২০৪১ সাল পর্যন্ত আমরা এই সুবিধা পেতে চাই। তথ্যপ্রযুক্তি কোম্পানির জন্য সহজ আর সুলভে ঋণ পাওয়ার কাজ করতে নীতিমালা পরিবর্তন, পরিকল্পনা বাস্তবায়ন, আর্থিক প্রণোদনা বা সহায়তা নিয়ে আমরা টিম সাকসেস কাজ করব। ডিজিটাল ব্যাংকের মোট ঋণ প্রদানের একটা অংশ তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পের জন্য বরাদ্দ রাখার প্রস্তাবও আমরা দেব।’
বেসিসের বর্তমান সভাপতি রাসেল টি আহমেদের নেতৃত্বে গঠিত হয়েছে ‘ওয়ান টিম’ প্যানেল। এই প্যানেলের অন্য প্রার্থীরা হচ্ছেন সাধারণ সদস্য শ্রেণির উত্তম কুমার পাল, দিদারুল আলম, রাশিদুল হাসান, এ কে এম আহমেদুল ইসলাম, ইকবাল আহমেদ ফখরুল হাসান, এম আসিফ রহমান, কে এ এম রাশেদুল মজিদ এবং সৈয়দ আবদুল্লাহ জায়েদ (সহযোগী), বিপ্লব ঘোষ (অ্যাফিলিয়েট) ও সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল (আন্তর্জাতিক)।
ওয়ান টিম নিয়ে রাসেল টি আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘খাত–সংশ্লিষ্ট ১১ জন পরিচিত মুখ একটি দল হয়ে ওয়ান টিম নামে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে। গতবারের মতো এবারও ওয়ান টিমের প্রত্যেক প্রার্থীই নিজ নিজ ব্যবসায় সফল ও তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পকে এগিয়ে নিতে অঙ্গীকারবদ্ধ। আমাদের দলে বেসিসের নির্বাহী কমিটিতে কাজ করার অভিজ্ঞতাসম্পন্ন প্রার্থী যেমন রয়েছেন, তেমনি বেশ কয়েকজন নতুন মুখও আছেন।’
অ্যাডভান্সড ইআরপির মো. মোস্তাফিজুর রহমানের নেতৃত্বে ‘টিম স্মার্ট’ প্যানেলেও ১১ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। টিম স্মার্টের অন্য প্রার্থীরা হলেন সাধারণ সদস্য শ্রেণির মোহাম্মদ রিসালাত সিদ্দিকী, লিয়াকত হোসেইন, মীর শাহরুখ ইসলাম, এ এস এম রফিক উল্লাহ, মঞ্জুরুল আলম, সৈয়দা নওশাদ জাহান, নিয়াজ মোর্শেদ এবং আরমান আহমেদ খান (সহযোগী), লুতফি হায়দার চৌধুরী (অ্যাফিলিয়েট) ও এ এইচ এম হাসিনুল কুদ্দুস (আন্তর্জাতিক)।
টিম স্মার্ট নিয়ে মোস্তাফিজুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা একটা ভিশন নিয়ে এবার নির্বাচনে এসেছি। সেটা দুই বছরের নয়, ১৫ বছরের। স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের জন্য এই সংগঠনের সব বিভক্তি ভেঙে ও স্বচ্ছতা রেখে একটা পরিষ্কার রূপকল্প তৈরি করা প্রয়োজন। আমরা এ কাজটি করতে চাই।’
বেসিসের মোট সদস্যসংখ্যা ২ হাজার ৪০১। তবে এবারের নির্বাচনে ভোটার হয়েছেন ১ হাজার ৪৬৪ জন। তাঁদের মধ্যে সাধারণ ৯৩২, সহযোগী ৩৮৯, অ্যাফিলিয়েট ১৩৪ ও আন্তর্জাতিক সদস্য শ্রেণিতে ভোটার ৯ জন।