স্মার্টফোনে আড়ি পাততে সক্ষম অ্যাপ বা স্পাইওয়্যারের সাহায্যে নির্দিষ্ট ব্যক্তির অনলাইন বা দৈনন্দিন কার্যক্রমে নজরদারি করে থাকে সাইবার অপরাধীসহ বিভিন্ন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান। এ জন্য বিভিন্ন অ্যাপের মাধ্যমে ফোনে গোপনে স্পাইওয়্যার প্রবেশ করায় তারা। চাইলে বেশ কিছু কৌশল অবলম্বন করে ফোনে নজরদারি ঠেকানো যায়।
ইন্টারনেট ব্যবহার না করলেও নজরদারি থেকে মুক্তি মেলে না। আমরা যেখানেই যাই না কেন, আমাদের অবস্থানের তথ্য সংগ্রহ করতে থাকে ফোন। ফোন হ্যাক হয়েছে, এমন সন্দেহ তৈরি হলে বা কোনো সন্দেহজনক গতিবিধি নজরে এলে প্রাথমিক পদক্ষেপ হিসেবে ফোন বন্ধ করে দিতে হবে। এতে ফোন সব ধরনের সংযোগ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে। এর ফলে সাময়িক অসুবিধা হলেও বড় ধরনের বিপদ এড়ানো সম্ভব।
এয়ারপ্লেন মোড চালু থাকলে ফোনের ব্লু-টুথ, ইন্টারনেটসহ মোবাইল নেটওয়ার্ক স্বয়ংক্রিয়ভাবে বন্ধ হয়ে যায়। এর ফলে ফোনের মাধ্যমে ব্যবহারকারীর অবস্থান জানার পাশাপাশি অনলাইন বা দৈনন্দিন কার্যক্রমে নজরদারি করা সম্ভব হয় না। আর তাই ফোনে কোনো অস্বাভাবিক কার্যক্রম নজরে এলে সাময়িকভাবে এয়ারপ্লেন মোড চালু করতে হবে।
গ্লোবাল পজিশনিং সিস্টেম বা জিপিএসের মাধ্যমে ব্যবহারকারীদের অবস্থান শনাক্ত করেও ফোন হ্যাক করা যায়। এর ফলে ব্যবহারকারীদের সর্বশেষ অবস্থানের তথ্য সংগ্রহ করতে থাকে সাইবার অপরাধীরা। এ সমস্যা সমাধানে প্রয়োজন ছাড়া ফোনের জিপিএস সুবিধা বন্ধ রাখতে হবে। জিপিএসের মাধ্যমে অবস্থান শনাক্ত বন্ধ রাখলেও ফোনের অন্য স্বাভাবিক কার্যক্রম চালু থাকে। ফলে কোনো সমস্যা হয় না।
কাজের বা বিনোদনের প্রয়োজনে আমরা অনেকেই নিয়মিত অনলাইন থেকে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের অ্যাপ ডাউনলোড করে থাকি। এ সময় অ্যাপগুলো ফোনের বিভিন্ন যন্ত্রাংশ ব্যবহারের অনুমতি নিয়ে থাকে। যেসব অ্যাপ ফোনে থাকা নম্বর, ক্যামেরা ও মাইক্রোফোন ব্যবহারের অনুমতি নেয়, সেগুলো চাইলেই ব্যবহারকারীদের ওপর নজরদারি করতে পারে। এ সমস্যা সমাধানে ফোনের সেটিংস থেকে পারমিশন অপশনে প্রবেশ করে দেখতে হবে কোন কোন অ্যাপ ফোনে থাকা নম্বর, ক্যামেরা ও মাইক্রোফোন ব্যবহারের অনুমতি নিয়েছে। কাজের সঙ্গে সম্পর্ক না থাকলেও যেসব অ্যাপ অনুমতি নিয়েছে, সেগুলো মুছে ফেলতে হবে।
ফোনের অপারেটিং সিস্টেমসহ বিভিন্ন অ্যাপের হালনাগাদ সংস্করণ নিয়মিত হালনাগাদ করতে হবে। কারণ, অপারেটিং সিস্টেম ও অ্যাপের নিরাপত্তার ত্রুটি কাজে লাগিয়ে ব্যবহারকারীদের ওপর সাইবার হামলা চালানোর পাশাপাশি নজরদারিও করা সম্ভব।
অ্যাপ নামানোর আগে যাচাই করে নিতে হবে। কারণ, ভুয়া অ্যাপের মাধ্যমে ফোনে ম্যালওয়্যার প্রবেশ করিয়ে দূর থেকে নজরদারি করতে পারে সাইবার অপরাধীরা। তাই ক্ষতিকর অ্যাপ থেকে রক্ষা পেতে অ্যাপ নামানোর আগেই নির্মাতাদের বিষয়ে অনলাইনে খোঁজখবর নিতে হবে। জানতে হবে অ্যাপটির বিষয়ে অন্য ব্যবহারকারীদের অভিজ্ঞতাও। অনলাইনে পাওয়া অপরিচিত লিংকে ক্লিক করে অ্যাপ নামানো থেকেও বিরত থাকতে হবে।