রেস্তোরাঁয় ঢোকার পরপরই অনেকে ওয়াই-ফাই পাসওয়ার্ড সংগ্রহে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। বিনা মূল্যে ইন্টারনেট ব্যবহারের সুযোগ থাকায় ইচ্ছেমতো অনলাইনে ঢুঁ মারেন তাঁরা। আর তাই তো ক্রেতাদের আগ্রহ বিবেচনা করে বেশির ভাগ রেস্তোরাঁ বা সেবাপ্রতিষ্ঠান বিনা মূল্যে ওয়াই-ফাই ব্যবহারের সুযোগ দিয়ে থাকে। কিন্তু পাবলিক ওয়াই-ফাই সেবা ব্যবহারে ই-মেইল, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অ্যাকাউন্ট আইডি ও পাসওয়ার্ড, ব্যাংক অ্যাকাউন্টসহ ব্যক্তিগত বিভিন্ন তথ্য চুরির আশঙ্কা থাকে। কারণ, অনেক সময় পাবলিক ওয়াই-ফাই নেটওয়ার্কের নিরাপত্তা তেমন শক্তিশালী হয় না। ফলে সাইবার অপরাধীরা চাইলেই পাবলিক ওয়াই-ফাই থেকে বিভিন্ন তথ্য চুরি করতে পারে। তবে বেশ কিছু কৌশল অবলম্বন করে পাবলিক ওয়াই-ফাই ব্যবহারের সময় নিরাপদ থাকা যায়।
অনেক সময় সাইবার অপরাধীরা কোনো প্রতিষ্ঠান বা স্থানের নাম দিয়ে আলাদা ওয়াই-ফাই নেটওয়ার্ক চালু করে। নাম ও পাসওয়ার্ডে মিল থাকায় ভুল করে অনেকেই সেই নেটওয়ার্কে যুক্ত হন। ভুয়া এসব নেটওয়ার্কে ব্যবহারকারীদের পাসওয়ার্ড চুরির জন্য ভুয়া ওয়েবসাইটের পাশাপাশি বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করা হয়। ফলে ব্যবহারকারীরা নিজেদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রবেশের জন্য অ্যাকাউন্ট আইডি ও পাসওয়ার্ড লিখলেই সেগুলো চলে যায় সাইবার অপরাধীদের দখলে। এ জন্য পাবলিক ওয়াই-ফাই ব্যবহারের সময় সঠিক নেটওয়ার্কে যুক্ত হতে হবে।
এয়ারপোর্টসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের পাবলিক ওয়াই-ফাইয়ে যুক্ত হতে হলে অনেক সময় নিবন্ধন করতে হয়। মূলত, নিরাপত্তার জন্য এ পদ্ধতি অবলম্বন করা হয়। তবে এ পদ্ধতি কাজে লাগিয়ে ব্যবহারকারীদের ই-মেইল ঠিকানায় বা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লগইন করতে বাধ্য করে সাইবার অপরাধীরা। এর মাধ্যমে ব্যবহারকারীদের বোকা বানিয়ে তথ্য সংগ্রহ করে তারা। আর তাই কোনো প্রলোভনে গুরুত্বপূর্ণ কোনো তথ্য পাবলিক ওয়াই-ফাইয়ে দেওয়া যাবে না।
খুব বেশি প্রয়োজন না হলে পাবলিক ওয়াই-ফাই নেটওয়ার্কের মাধ্যমে অনলাইন ব্যাংকিং বা আর্থিক লেনদেন করা যাবে না। পাশাপাশি এইচটিটিপিএস সমর্থন ছাড়া কোনো ওয়েবসাইটে প্রবেশ করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
ওয়াই-ফাই নেটওয়ার্কের পরিধি অনেক দূর পর্যন্ত থাকতে পারে। এ কারণে রেস্তোরাঁ থেকে বের হওয়ার আগে মুঠোফোনে ফরগেট নেটওয়ার্ক নির্বাচন করে পাবলিক ওয়াই-ফাই নেটওয়ার্কের সুবিধা বন্ধ করতে হবে। একই সঙ্গে মুঠোফোনে স্বয়ংক্রিয় সংযোগসুবিধা প্রয়োজন ছাড়া বন্ধ রাখতে হবে। এসব সতর্কতা মেনে না চললে আপনার অজান্তেই আগে ব্যবহার করা বিভিন্ন ওয়াই-ফাই নেটওয়ার্কের সঙ্গে মুঠোফোন যুক্ত হয়ে যাবে।
পাবলিক ওয়াই-ফাই ব্যবহারের সময় ভার্চ্যুয়াল প্রাইভেট নেটওয়ার্ক বা ভিপিএনের সাহায্যে তথ্য নিরাপদ রাখা সম্ভব। কারণ, ভালো মানের ভিপিএনে ব্যবহারকারীদের তথ্য কোড যুক্ত বা এনক্রিপ্ট করে বিনিময় করা হয়। এ কারণে সহজে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সংগ্রহ করতে পারে না সাইবার অপরাধীরা।