ইন্টারনেটে পাওয়া সব তথ্য বিশ্বাস করা যাবে না
ইন্টারনেটে পাওয়া সব তথ্য বিশ্বাস করা যাবে না

অনলাইনে গুজব ও ভুয়া তথ্যের ব্যাপারে সতর্ক ও সচেতন থাকবেন যেভাবে

প্রযুক্তিগত উন্নতির কল্যাণে মুঠোফোন ও ইন্টারনেট এখন মানুষের হাতের মুঠোয়। জীবযাপনে এর ইতিবাচক প্রভাব থাকলেও সাইবার অপরাধে ক্ষতির পরিমাণও কম নয়। বিশেষ করে গুজব ও ভুয়া তথ্য ছড়ানোর বড় একটি স্থান হয়ে দাঁড়িয়েছে সাইবার জগৎ।

সাইবার নিরাপত্তা ও প্রযুক্তি বিশ্লেষক জেনিফার আলম প্রথম আলোকে বলেন, গুজব মারাত্মক সামাজিক ব্যাধিতে রূপান্তরিত হয়েছে। গুজবের প্রতিকার সচেতনতা ও কঠোর আইন প্রয়োগের মাধ্যমে সম্ভব। গুজব সাধারণত দুই ধরনের—এক. বিনা স্বার্থে, অনিচ্ছাকৃতভাবে হয়ে থাকে। যা কোনো অপরাধ বা অরাজকতা সৃষ্টির উদ্দেশ্যে ছড়ানো হয় না। দ্বিতীয়টি প্রথমটির বিপরীত, অপরাধ ও অরাজকতা সৃষ্টির লক্ষ্যেই এসব গুজব ছড়ানো হয়ে থাকে।

সাইবার নিরাপত্তা গবেষক রাইয়ান মালিক বলেন, ইন্টারনেটে পাওয়া যেকোনো তথ্য যেমন বিশ্বাস করা যাবে না, তেমনি যাচাই-বাছাই ছাড়া এগুলো শেয়ার করাও যাবে না। গুজব প্রতিরোধ ও প্রতিকারের জন্য মানুষের সচেতনতা ও সতর্কতা অত্যন্ত জরুরি।
অনেক সময় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে ইচ্ছাকৃত বা অনিচ্ছায় নানা ভুল তথ্য, ছবি, ভিডিও এবং গুজব ছড়ানো হচ্ছে। মতপ্রকাশের অধিকার আছে সবার, কিন্তু মতপ্রকাশের স্বাধীনতা মানে যা খুশি তা ছড়িয়ে দেওয়া নয়। দেশের আইন মেনে চলতে হবে সবাইকে।

গুজবের বিষয়ে সতর্ক থাকতে জেনিফার আলম কিছু পরামর্শ দিয়েছেন। সেগুলোর দিকে লক্ষ রাখলে এ সমস্যার অনেকটা সমাধান পাওয়া সম্ভব। পরামর্শগুলো দেখে নেওয়া যাক—

  • গুজব ছড়ানোর বিরুদ্ধে অনলাইনসহ সব জায়গায় প্রচারণা চালাতে হবে।

  • সাইবার অপরাধ নিয়ে দেশে বিদ্যমান আইনের প্রচার-প্রসার করা, এতে গুজব ছড়ানোর মতো সাইবার অপরাধ কমানো যাবে।

  • নির্ভরযোগ্য উৎস বা মাধ্যম ছাড়া সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত যেকোনো তথ্যে বিশ্বাস করা যাবে না।

  • যাচাই-বাছাই ছাড়া তথ্য শেয়ার না করা।

  • অন্যকে ভুয়া তথ্য বা গুজব ছড়াতে দেখলে বাধা দেওয়া ও সঠিক তথ্য জানানো।

  • কোনো মিথ্যা, বানোয়াট তথ্য বা গুজব বড় আকারে রটানোর আশঙ্কা থাকলে তার বিরুদ্ধে আগেই সতর্কতা সৃষ্টি ও সচেতনতা তৈরি করা।

  • কোনো সংবাদ দেখার পর সেটি জাতীয় গণমাধ্যমগুলোতে যাচাই করে দেখা।  

  • প্রচলিত নয় এমন ওয়েবসাইট, নিউজ সাইট, পেজ বা গ্রুপের তথ্য বিশ্বাস করার আগে সত্যতা যাচাই করে নেওয়া।

  • তথ্য যাচাইয়ের (ফ্যাক্টচেক) সাইট থেকে তথ্য যাচাই করে নেওয়া।

  • সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেখা সব তথ্য, ভিডিও এবং লেখা বিশ্বাস করার আগে সংবাদমাধ্যম থেকে যাচাই করা।  

  • অনলাইনে সতর্কতা ও সচেতনতাই পারে গুজব থেকে নিরাপদ রাখতে।