স্মার্টফোনে কথা বলা ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারের পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন কাজও করেন অনেকে। কেউ আবার আর্থিক লেনদের তথ্যসহ ব্যক্তিগত বা প্রতিষ্ঠানের গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন তথ্য বা ছবি জমা রাখেন। তাই ফোনে থাকা তথ্য চুরি করার জন্য বিভিন্ন কৌশল কাজে লাগিয়ে নিয়মিত সাইবার হামলা চালিয়ে থাকে হ্যাকাররা। তবে চাইলে বেশ কিছু পদ্ধতি অবলম্বন করে ফোনে থাকা তথ্যের নিরাপত্তা বাড়ানো যায়। পদ্ধতিগুলো দেখে নেওয়া যাক—
তথ্য নিরাপদে রাখতে স্মার্টফোনের পাশাপাশি ই-মেইল, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অ্যাকাউন্টগুলোয় অবশ্যই শক্তিশালী পাসওয়ার্ড ব্যবহার করতে হবে। অ্যাকাউন্টের নিরাপত্তা জোরদার করতে কমপক্ষে ছয় অক্ষরের পাসওয়ার্ড ব্যবহার করতে হবে। পাসওয়ার্ড যত বড় হবে, ততই নিরাপদ। তবে নিজের প্রিয়জন বা পছন্দের জীবজন্তু বা বস্তুর নামের সমন্বয়ে পাসওয়ার্ড দেওয়া যাবে না। পাসওয়ার্ডে অবশ্যই ছোট-বড় অক্ষরের পাশাপাশি একাধিক সংখ্যা ও চিহ্ন ব্যবহার করতে হবে।
নিজেদের তৈরি অপারেটিং সিস্টেম, অ্যান্টিভাইরাস বা অ্যাপের ত্রুটি দূর করার পাশাপাশি নিরাপত্তা বাড়াতে নিয়মিত সেগুলো হালনাগাদ করে থাকে নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলো। এসব সংস্করণে ব্যবহারকারীরা আগের তুলনায় বাড়তি সুবিধা ও নিরাপত্তা পেয়ে থাকেন। তাই ফোনে থাকা তথ্য নিরাপদ রাখতে অপারেটিং সিস্টেম ও অ্যান্টিভাইরাসের পাশাপাশি এতে থাকা বিভিন্ন অ্যাপও নিয়মিত হালনাগাদ করতে হবে।
কাজের প্রয়োজনে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের অ্যাপ ব্যবহার করেন অনেকেই। অ্যাপগুলো নামানোর সময়ই ব্যবহারকারীদের কাছে থেকে ফোনের মাইক্রোফোন, ক্যামেরাসহ বিভিন্ন যন্ত্র ব্যবহারের অনুমিত নেয়। শুধু তাই ফোনে থাকা তথ্য বা ছবি দেখারও অনুমতি নিয়ে নেয়। তাই কোন অ্যাপ কোন ধরনের তথ্য সংগ্রহ করছে, তা জানা প্রয়োজন। ফোনের সেটিংসে প্রবেশ করে সিকিউরিটি অ্যান্ড প্রাইভেসিতে ট্যাপ করলেই পারমিশন ম্যানেজার অপশনে ফোনের কল লগস, ক্যামেরা, কন্টাক্টস, ফাইলস অ্যান্ড মিডিয়া, লোকেশন, মাইক্রোফোন ইত্যাদি ব্যবহারের অনুমতি নেওয়া অ্যাপগুলোর নাম দেখা যাবে। ফোনে থাকা তথ্য নিরাপদ রাখার পাশাপাশি ব্যক্তিগত গোপনীয়তা বজায় রাখতে তালিকায় থাকা অপ্রয়োজনীয় বা অপরিচিত অ্যাপগুলোর তথ্য সংগ্রহের অনুমতি বাতিল করতে হবে।
ফোনে নজরদারি ঠেকানোর জন্য অবস্থান শনাক্তের সুবিধা বন্ধ রাখতে হবে। এ জন্য সব অ্যাপে লোকেশন ট্র্যাকিং করার অনুমতি দেওয়া ঠিক নয়। কোন কোন অ্যাপ অবস্থান শনাক্তের অনুমতি নিয়েছে, তা জানার জন্য স্মার্টফোনের সেটিংসে প্রবেশ করে সিকিউরিটি অ্যান্ড প্রাইভেসি থেকে পারমিশন ম্যানেজার অপশনে ক্লিক করতে হবে। এরপর পরবর্তী পেজে প্রবেশ করলেই ফোনের লোকেশন অপশন ব্যবহারের অনুমতি পাওয়া অ্যাপগুলোর নাম দেখা যাবে। তালিকায় থাকা অপ্রয়োজনীয় বা অপরিচিত অ্যাপগুলোর তথ্য সংগ্রহের অনুমতি বাতিল করতে হবে।
সাইবার হামলা থেকে ব্যবহারকারীদের নিরাপদ রাখতে দুই স্তরের নিরাপত্তা সুবিধা রয়েছে বিভিন্ন অ্যাপে। এ সুবিধা চালু থাকলে পাসওয়ার্ড লেখার পর ব্যবহারকারীর ফোনে বার্তা বা কোড পাঠানো হয়। কোডটি ব্যবহার করেই শুধু অ্যাকাউন্টে প্রবেশ করা যায়। এর ফলে হ্যাকাররা পাসওয়ার্ড হ্যাক করলেও অ্যাকাউন্ট নিরাপদ থাকে। তাই ফোনে থাকা নিজেদের অ্যাকাউন্ট নিরাপদ রাখতে অবশ্যই দুই স্তরের নিরাপত্তা সুবিধা ব্যবহার করতে হবে।
ব্যবহারকারীদের ধরন ও ইন্টারনেট ব্যবহারের ইতিহাস পর্যালোচনা করে পার্সোনালাইজড বিজ্ঞাপন দেখিয়ে থাকে বিভিন্ন অ্যাপ ও ওয়েবসাইট। ব্যবহারকারীদের ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহ করে এসব বিজ্ঞাপন দেখানো হয়ে থাকে। ব্যক্তিগত তথ্যগুলো কাজে লাগিয়ে সাইবার হামলাও চালাতে পারে হ্যাকাররা। তাই প্রয়োজন ছাড়া ফোন থেকে ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহ কার্যক্রম বন্ধ রাখতে হবে। এ জন্য প্রথমে ফোনের সেটিংস থেকে সিকিউরিটি অ্যান্ড প্রাইভেসি অপশনে ক্লিক করতে হবে।এরপর মোর প্রাইভেসি সেটিংসে ট্যাপ করে পরের পৃষ্ঠায় থাকা অ্যাডস অপশন নির্বাচনের পর ডিলিট অ্যাডভার্টাইজিং আইডি নির্বাচিত করতে হবে।