২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে তথ্যপ্রযুক্তি খাতের কর অব্যাহতির মেয়াদ আরও তিন বছর বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। এর পাশাপাশি ল্যাপটপ কম্পিউটারে মূল্য সংযোজন কর (মূসক বা ভ্যাট) প্রত্যাহারেরও প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রস্তাবিত বাজেটের বিভিন্ন বিষয়ে নিজেদের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতি (বিসিএস), ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (আইএসপিএবি), বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব কন্ট্যাক্ট সেন্টার অ্যান্ড আউটসোর্সিং (বাক্কো) এবং ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ই-ক্যাব) নেতারা।
ল্যাপটপের মূল্য সংযোজন কর প্রত্যাহার করার প্রস্তাব করা হলেও গত অর্থবছরের তুলনায় আমদানি শুল্ক ৫ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে। আমদানির খরচ বেশি হওয়ায় ল্যাপটপের দাম খুব বেশি কমবে না বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতির (বিসিএস) সভাপতি সুব্রত সরকার। তথ্যপ্রযুক্তি খাতে কর অব্যাহতির মেয়াদ তিন বছর বাড়ানোর প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়ে তিনি বলেন, ‘কম্পিউটারের একটি গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ প্রিন্টার। গত অর্থবছরে প্রিন্টারের ওপর ১৫ শতাংশ মূসক যুক্ত করা হয়েছিল। এ বছরও প্রিন্টারের ওপর একই পরিমাণে মূসক প্রস্তাব করা হয়েছে। আমরা এই মূসক প্রত্যাহারের দাবি জানাচ্ছি।’
২০২৪-২৫ সালের প্রস্তাবিত বাজেটে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা থাকা সত্ত্বেও ইন্টারনেট সংযোগদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোকে তথ্যপ্রযুক্তি সেবা (আইটিইএস) খাতের অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। এ ছাড়া ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সংযোগদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর ১০ শতাংশ অগ্রিম করও প্রত্যাহার করা হয়নি। পাশাপাশি ইন্টারনেট সংযোগের জন্য প্রয়োজনীয় বিভিন্ন প্রযুক্তিপণ্য যেমন মডেম, ইথারনেট ইন্টারফেস কার্ড, কম্পিউটার নেটওয়ার্ক সুইচ, হাব, রাউটার, সার্ভার ব্যাটারির ওপর ১৫ দশমিক ৫ শতাংশ মূল্য সংযোজন কর (মূসক বা ভ্যাট) আরোপ করা হয়েছে। এর ফলে দেশে ইন্টারনেটের প্রসার বাধাগ্রস্ত হবে বলে মনে করছেন আইএসপি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ইমদাদুল হক। বাজেটে অপটিক্যাল ফাইবার তার আমদানিতে ৪৮ শতাংশ ও আরোপিত ১০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক প্রত্যাহার না করায় গ্রাহকদের ইন্টারনেট খরচ বাড়বে, যা স্মার্ট বাংলাদেশ বাস্তবায়নে বিরূপ প্রভাব ফেলবে বলেও মনে করছেন তিনি।
তথ্যপ্রযুক্তি খাতে কর অব্যাহতির মেয়াদ তিন বছর বাড়ানো হলেও নেশনওয়াইড টেলিকমিউনিকেশন ট্রান্সমিশন নেটওয়ার্ক (এনটিটিএন), সিস্টেম ইন্টিগ্রেশন ও ক্লাউড সার্ভিস করছাড়ের সুবিধা পাবে না। এনটিটিএনের খরচ বাড়ার কারণে ইন্টারনেটের দামও বাড়বে বলে জানিয়েছেন বাক্কোর সভাপতি ওয়াহিদ শরীফ। তিনি বলেন, ‘আমরা আনন্দিত যে আরও তিন বছরের জন্য তথ্যপ্রযুক্তি খাতে কর অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। তবে এ ক্ষেত্রে টাকাবিহীন (ক্যাশলেস) লেনদেন করার শর্ত দেওয়া হয়েছে। আমরা শতভাগ ক্যাশলেস লেনদেন চালু করা নিয়ে চিন্তিত।’
বাজেটে কর অব্যাহতির তালিকায় যুক্ত হয়েছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই), ব্লক চেইন, রোবোটিকস, সফটওয়্যার অ্যাজ আ সার্ভিস (স্যাস) ও ডেটা সায়েন্স—যা ডিজিটাল বাংলাদেশের তরুণদের অনেক বেশি অনুপ্রাণিত করবে বলে জানিয়েছেন ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ই-ক্যাব) সাধারণ সম্পাদক নাসিমা আক্তার। তথ্যপ্রযুক্তি খাতে কর অব্যাহতির মেয়াদ তিন বছর বাড়ানোর প্রস্তাবকেও স্বাগত জানিয়েছেন তিনি।