মুঠোফোনে ফোর–জি ইন্টারনেট নেটওয়ার্কে কাঙ্ক্ষিত গতি পাওয়া যাচ্ছে না
মুঠোফোনে ফোর–জি ইন্টারনেট নেটওয়ার্কে কাঙ্ক্ষিত গতি পাওয়া যাচ্ছে না

দুপুর থেকে ফোর–জি মোবাইল ইন্টারনেটে হঠাৎ ধীরগতি

সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে বিক্ষোভ ও সহিংসতার মধ্যে বাংলাদেশে ১৭ জুলাই রাত থেকে মোবাইল ইন্টারনেট এবং ১৮ জুলাই রাত ৯টার দিকে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট বন্ধ হয়। ২৩ জুলাই রাতে দেশে সীমিত পরিসরে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবা চালু করা হয়। গতকাল রোববার বেলা তিনটা থেকে মুঠোফোনে ফোর–জি ইন্টারনেট চালু হয়েছে। সঙ্গে দেওয়া হয় বোনাস হিসেবে ৫ গিগাবাইট ডেটা। তবে আজ সোমবার দুপুর থেকে ফোর–জি মোবাইল ইন্টারনেট ধীরগতিতে চলছে বলে রাজধানী ঢাকার অনেক ব্যবহারকারী জানিয়েছেন। ফোর–জি নেটওয়ার্কে ইন্টারনেট ব্যবহারে যে গতি সাধারণভাবে পাওয়ার কথা, তা মুঠোফোনে পাওয়া যাচ্ছে না বলে অনেকেই প্রথম আলোর কাছে অভিযোগ করেছেন।

রাজধানীর মিরপুর, বাড্ডা, যাত্রাবাড়ী, শাহবাগ, রামপুরা, ধানমন্ডিসহ বিভিন্ন এলাকার মুঠোফোন ব্যবহারকারীরা জানিয়েছেন, আজ সকাল পর্যন্ত ইন্টারনেটের গতি ঠিকই ছিল, তবে দুপুর থেকে গতি ধীর হয়ে গেছে। মুঠোফোনে নেটওয়ার্ক ফোর-জি দেখালেও কাঙ্ক্ষিত গতি পাওয়া যাচ্ছে না। নাম প্রকাশ না করার শর্তে দেশের দুটি মোবাইল সংযোগদাতা প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, দেশে মুঠোফোনে ফোর-জি ইন্টারনেটের গতি সাধারণত ৩০ এমবিপিএস (১ এমবিপিএস=১০২৪ কেবিপিএস) ও এর বেশি হয়ে থাকে।

ইন্টারনেটের গতি পরীক্ষার জনপ্রিয় ওয়েবসাইট ফাস্ট ডট কম ব্যবহার করে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত বেশ কিছু মুঠোফোনে দেখা যায়, ফোর-জি নেটওয়ার্কে ৩০ কেবিপিএস থেকে ৩ এমবিপিএস পর্যন্ত গতি পাওয়া যাচ্ছে; যা কোনোভাবেই ফোর-জির মানগতি নয়।

জানা গেছে, মোবাইল সংযোগদাতা প্রতিষ্ঠানগুলো ফোর-জির জন্য প্রয়োজনীয় ব্যান্ডউইডথ (ইন্টারনেটের গতি) উন্মুক্ত রেখেছে। কারণ, তা না হলে গ্রাহকদের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দেবে এবং ব্যবসা ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তবে টেলিযোগাযোগ ও ইন্টারনেটের সরকারি নিয়ন্ত্রক সংস্থা চাইলে ব্যান্ডউইডথ সীমিত করে রাখতে পারে। আবার নিয়ন্ত্রক সংস্থার নির্দেশনা অনুযায়ী গ্রাহকদের জন্য ব্যান্ডউইডথ সরবরাহ করতেও বাধ্য থাকে মোবাইল অপারেটররা।

তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান দ্য সফট কিং লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রিফায়েত ইসলাম আজ মুঠোফোনে বলেন, ‘মোবাইল ফোনে নিত্য যে কাজ করি, সেগুলো করতে খুবই কষ্ট হচ্ছে। এক কথায় খুবই ধীর। সেভাবে কাজে দিচ্ছে না মোবাইলের ফোর–জি ইন্টারনেট সেবা।’

ম্যাক্স আইটির মাহবুব হাসান প্রথম আলোকে বলেন, ‘ধীরগতিতে চলছে। সেভাবে কাজে আসছে না। ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট দিয়েই মোবাইল চলাচ্ছি।’ মতিঝিলে কর্মরত ব্যাংকার সাবিয়া শারমিন বলেন, ‘ফোর–জি সেভাবে কাজ করছে না। একটি ওয়েবপেজ খুলতেই অনেকক্ষণ সময় লাগছে। সেভাবে কাজে আসছে না এই ফোর–জি।’

পান্থপথের ফিদা মাহমুদ আশফাক একজন ব্যবসায়ী। তিনি বলেন, ‘এখন সব ব্যবসা ইন্টারনেটের ওপর নির্ভরশীল। মোবাইল ডেটার জন্য সাধারণ মানুষ প্রয়োজনীয় অনলাইন কেনাকাটা ও নানা ধরনের অনলাইন সেবা গ্রহণ করতে পারছেন না। তা ছাড়া মোবাইল ব্যাংকিং/অনলাইন ব্যাংকিং ব্যবহারের ক্ষেত্রে সম্মুখীন হচ্ছেন।’

হঠাৎ মোবাইল ইন্টারনেটের গতি কমে যাওয়ার বিষয়ে জানতে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্‌মেদ পলকের সঙ্গে প্রথম আলোর পক্ষ থেকে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি ফোন ধরেননি। কিছুক্ষণ পর আবার ফোন করলে প্রতিমন্ত্রীর একজন ব্যক্তিগত কর্মকর্তা ফোন ধরেন। তিনি জানান, সন্ধ্যার পর প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলা যাবে, এর আগে সম্ভব নয়।