অধ্যাপক ড. এম কায়কোবাদ
অধ্যাপক ড. এম কায়কোবাদ

প্রথম আলোকে ড. কায়কোবাদ

‘আইসিপিসিতে ভালো করতে শিক্ষার্থীদের পেছনে বেশি বিনিয়োগের প্রয়োজন ছিল’

আজ দুপুরেই ঢাকার আইসিসিবিতে প্রোগ্রামিংয়ের বিশ্বকাপখ্যাত আইসিপিসি প্রতিযোগিতার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হয়ে গেছে। কাল হবে প্রতিযোগীদের মহড়া বা মকটেস্ট। বৃহস্পতিবার হবে মূল প্রতিযোগিতা। এর আয়োজক ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিক (ইউএপি)। সহযোগিতা করছে সরকারের তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগ এবং বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল।

এই প্রথমবারের মতো পৃথিবীর সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতা ইন্টারন্যাশনাল কলেজিয়েট প্রোগ্রামিং কনটেস্টের (আইসিপিসি) চূড়ান্ত পর্ব (ওয়ার্ল্ড ফাইনালস) অনুষ্ঠিত হচ্ছে বাংলাদেশে। স্বাগতিক দেশ হিসেবে বাংলাদেশের আট বিশ্ববিদ্যালয়ের আটটি দল চূড়ান্ত পর্বে অংশ নিচ্ছে। দেশের প্রতিযোগী দলগুলোর প্রস্তুতির জন্য অধ্যাপক ড. জাফর ইকবালকে আহ্বায়ক এবং অধ্যাপক কামরুল আহসানকে সদস্যসচিব করে একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করা হয়েছে। বিশেষজ্ঞ কমিটির অন্যতম সদস্য বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ড. এম কায়কোবাদ।

আইসিপিসিতে বাংলাদেশের অংশগ্রহণের ২৫ বছর হয়েছে এবার। বলা যায় দেশের কম্পিউটারবিজ্ঞান শিক্ষায় আইসিপিসির ঐতিহ্য দীর্ঘদিনের। স্বাগতিক দেশ যেহেতু বাংলাদেশ, তাই এবারে বাংলাদেশি দলগুলোর কাছে প্রত্যাশা কিছুটা বেশি। তাই প্রশ্ন, কেমন করবে বাংলাদেশের দলগুলো? প্রায় দুই যুগ ধরে আইসিপিসির আঞ্চলিক ও চূড়ান্ত পর্বের সঙ্গে জড়িত ড. এম কায়কোবাদ। বেশ কয়েক বছর চূড়ান্ত পর্বে উত্তীর্ণ দলের কোচও ছিলেন তিনি। আইসিপিসির চূড়ান্ত পর্বে এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ সাফল্য ২০০০ সালে বুয়েটের ১১তম স্থান। এ দলেরও কোচ ছিলেন ড. কায়কোবাদ।

বাংলাদেশের দলগুলো এবারের আইসিপিসিতে কেমন করতে পারে? আজ দুপুরে এ ব্যাপারে প্রথম আলোর সঙ্গে কথা বলেছেন ড. এম কায়কোবাদ। তিনি বলেন, ‘আমরা আগে কখনো এত বেশি দল চূড়ান্ত পর্বে পাইনি। তবে প্রতিযোগীরা জানতে পেরেছেন পরে। তাঁরা আগে জানতে পারলে ভালো হতো। এত দিন বুয়েট, ঢাকা, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে অন্য বিশ্ববিদ্যালয়কে আইসিপিসি ফাইনালসে দেখা গেছে কম। এবার এর ব্যতিক্রম।’
ওয়ার্ল্ড ফাইনালসে ভালো ফলাফল করতে তিন–চার বছর ধরে প্রস্তুতি ও প্রশিক্ষণ প্রয়োজন বলে মনে করেন ড. কায়কোবাদ। তিনি বলেন, ‘চূড়ান্ত পর্বের আয়োজন নিয়ে আমরা তিন–চার বছর ধরে বিদেশে আইসিপিসি ফাউন্ডশনে যাতায়াত করছি। যাতায়াতে বিনিয়োগ কমিয়ে আমরা যদি শিক্ষার্থী ও প্রতিযোগীদের পেছনে বিনিয়োগ করতাম, তাহলে অনেক ভালো হতো। শিক্ষার্থীরা মাত্র এক মাস বা তার কিছু বেশি দিন সময় পেয়েছে। উচিত ছিল প্রতিযোগীদের পেছনে বিনিয়োগ করা।’
কিছুদিন আগে রুশ কোচ এনে মাত্র ১০ দিনের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে প্রতিযোগীদের। এটা যথেষ্ট নয় বলেই মনে করেন ড. কায়কোবাদ। তিনি বলেন, ‘আশা করব, বাংলাদেশের প্রতিযোগীরা ভালো করবেন। এই আয়োজন বাংলাদেশের ভাবমূর্তির জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।’
এশিয়ায় চতুর্থবারের মতো আয়োজিত হতে যাচ্ছে এই প্রতিযোগিতা। আর সেটা ঢাকায়। বিশ্বের বাঘা বাঘা বিশ্ববিদ্যালয় অংশ নিচ্ছে এ আয়োজনে।

আইসিপিসির চূড়ান্ত পর্বে বাংলাদেশের আট দল

আইসিপিসির ১৪২টি দলের মধ্যে বাংলাদেশের যে আটটি দল এবার অংশ নিচ্ছে, তার তালিকা নিচে দেওয়া হলো—
১. আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ‘এআইইউবি ক্যাপচার্ড’। এই দলের প্রতিযোগী—সাদি মো. আজিজ খান, আবদুল্লাহ আল মুজাহিদ ও হাফিজুর রহমান। কোচ ইমরান জিয়াদ।
২. বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের  ‘বুয়েট নার্ডহার্ড’ (ইফতেখার হাকিম, নোশিন নাওয়াল ও অপূর্ব সাহা এবং কোচ মোহাম্মদ সোহেল রহমান‍)।
৩. জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘জেইউ গ্লাস হাফ ফুল’ (সাকিব হাসান, চয়ন কুমার রায় ও অনিক সরকার এবং কোচ মো. এজহারুল ইসলাম)।
৪. রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘রুয়েট অ্যাসার্ট’ (শাহওয়াত হাসনাইন, তৌহিদুল ইসলাম ও রিসাল শাহরিয়ার এবং কোচ বর্ষণ সেন)।
৫. নর্থসাউথ ইউনিভার্সিটির ‘এনএসইউ স্টোলিচনায়া’ (আকাশ নালার্ড, সালমান সাহেল ও মেহরান সিদ্দিকী এবং কোচ সিলভিয়া আহমেদ)।
৬. শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘বার্লকাম্পমেসি’ (সৈকত হোসেন, মো. শাহজালাল সোহাগ ও ফাহিম তাজওয়ার এবং কোচ এনামূল হাসান)।
৭. ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘ডিইউ ফ্লেয়ারব্লিৎজ ৪.০’ (রিয়াদ হোসেন, আসিফ জাওয়াদ ও নাইমুল ইসলাম এবং কোচ মো. মাহমুদুর রহমান)।
৮. আয়োজক ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিকের ‘ইউএপি লুমস’ (আশরাফুল ইসলাম, মো. কবির সাদি ও অমিত সরকার এবং কোচ বিলকিস জামাল ফেরদোসি)।