আগামী বাজেটে ইন্টারনেট সংযোগদাতা (আইএসপি) প্রতিষ্ঠানগুলোকে তথ্যপ্রযুক্তি সেবা খাতের অন্তর্ভুক্ত করার দাবি জানিয়েছে আইএসপি অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ। স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলার সহযোগী হিসেবে ইন্টারনেট–সেবা সংশ্লিষ্ট যন্ত্রপাতির আমদানি শুল্ক প্রত্যাহার করার দাবিও জানিয়েছে তারা।
২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটে দেশের আইসিটি খাতের প্রত্যাশা নিয়ে ধারাবাহিক আয়োজনের তৃতীয় পর্বে আজ থাকছে বাজেটে আইএসপিএবির প্রত্যাশার কথা। লিখেছেন ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (আইএসপিএবি) সভাপতি মো. ইমদাদুল হক।
ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (আইএসপিএবি) ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সংযোগদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর সমন্বয়ে গঠিত একটি অলাভজনক সংগঠন। প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত ২০৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের লক্ষ্যে গঠিত টাস্কফোর্সের সক্রিয় সদস্য। ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার ক্ষেত্রে উন্নত ও নিরবচ্ছিন্ন ইন্টারনেট–সেবা প্রদানে আইএসপির গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল। বিশেষ করে কোভিড-১৯ মহামারির সময় সারা দেশব্যাপী ইন্টারনেট সংযোগ সচল রেখে স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষা কার্যক্রম চালু রেখে, বিভিন্ন অফিস, আদালত ও বাসাবাড়িতে ইন্টারনেট–সেবা সচল রাখার মাধ্যমে দেশের ভেতরে ও বহির্বিশ্বে যোগাযোগব্যবস্থা সচল রেখেছে, যা সব মহলে প্রশংসিত হয়েছে। ইন্টারনেট–সেবা প্রদানের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সব যন্ত্রপাতি তথ্যপ্রযুক্তি সেবা (আইটিইএস) হওয়া সত্ত্বেও বাংলাদেশের আইএসপিগুলোকে আইটিইএসে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। ফলে ইন্টারনেট সেবাদাতারা প্রথম থেকে আইটিইএসের সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়ে আসছে।
স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে গুরুত্বপূর্ণ নিয়ামক হলো ইন্টারনেট। বৈশ্বিক ইন্টারনেট প্রযুক্তির উন্নতি ও অগ্রগতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে বাংলাদেশে নেটওয়ার্ক যন্ত্রপাতির আধুনিকায়ন, উন্নতকরণ, সাইবার নিরাপত্তা, দ্রুতগতির দীর্ঘস্থায়ী ও সাশ্রয়ী ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছাতে সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা ও বাস্তবায়ন অত্যন্ত জরুরি ও গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট–সেবা ও ডেটা ট্রান্সমিশন সংশ্লিষ্ট সব যন্ত্রপাতি ও উপকরণ আমদানিতে উচ্চ হারে শুল্ক ও ভ্যাট আরোপ করা রয়েছে। আবার নতুন করে ইন্টারনেট–সেবার বিলের ওপর ১০ শতাংশ এআইটি আরোপ এবং এসআরও নম্বর ২১০-আইন/২০১৬, ৭৬৫ মূসক ১৫ শতাংশ সেবা কোড ০৭৪.০০ অফিস ও পপ ভাড়া ইত্যাদি স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে একটি বড় অন্তরায়। তাই ইন্টারনেট–সেবা ও ডাটা ট্রান্সমিশনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সব যন্ত্রপাতির ওপর শুল্ক ও ভ্যাট মওকুফ করে আইএলডিসি, আইআইজিসহ সব আইএসপিকে আইটিইএসের আওতায় নিবন্ধনের প্রস্তাব করছি।
প্রসঙ্গত, প্রধানমন্ত্রী ও ডিজিটাল বাংলাদেশ টাস্কফোর্সের চেয়ারপারসনের সভাপতিত্বে ৭ এপ্রিল অনুষ্ঠিত ডিজিটাল বাংলাদেশ টাস্কফোর্সের তৃতীয় সভায় প্রধানমন্ত্রী আইএসপি প্রতিষ্ঠানের সব সেবাকে আইটিইএস খাতে অন্তর্ভুক্ত করার উদ্যোগ গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে নির্দেশনা দেন। এ ছাড়া গত বছরের ১৩ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিবের সভাপতিত্বে স্মার্ট বাংলাদেশ টাস্কফোর্সের নির্বাহী কমিটির প্রথম সভায় আইএসপির কার্যক্রমকে আইটিইএসের অন্তর্ভুক্ত করার উদ্যোগ গ্রহণের জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে নির্দেশনা দেওয়া হয়। কিন্তু ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে এর প্রতিফলন দেখা যায়নি। আগামী ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটে আইএসপিকে আইটিইএস খাতে অন্তর্ভুক্ত করা হবে বলে প্রত্যাশা করি।
অনুলিখন: তারিকুর রহমান খান