বর্তমানে রোবট মানুষের মতো চলাফেরা করার পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের কাজ করতে পারে। তবে নিজ ইচ্ছায় নয়, মানুষের নির্দেশ মতোই কাজ করে থাকে রোবট। এ সমস্যা সমাধানে নতুন একটি পদ্ধতি উদ্ভাবন করেছেন যুক্তরাজ্যের কিংস কলেজ লন্ডনের গবেষকেরা। এই পদ্ধতিতে রোবট বিভিন্ন জটিল বিষয় নিজের মতো করে বিশ্লেষণ করতে পারবে। এর ফলে ভবিষ্যতে রোবটের মধ্যে মানুষের মতো চিন্তা করার ক্ষমতা তৈরি হবে বলে দাবি করেছেন গবেষকেরা।
রোবটের জ্ঞানের পরিধি বাড়াতে গবেষকেরা নতুন প্রযুক্তির একটি কমপ্যাক্ট সার্কিট তৈরি করেছেন। সার্কিটটি তরলের মধ্যে চাপের ভিন্নতা ব্যবহার করে কাজ করতে পারে। গবেষকদের তথ্যমতে, সার্কিটটির মাধ্যমে রোবট একাধিক কমান্ড বা নির্দেশনা দিতে পারবে। এর ফলে রোবটের আর্কিটেকচারের মধ্যে মানবিক সত্তা বিকাশের সুযোগ তৈরি হবে। তখন রোবট নিজেই চিন্তাভাবনা করে বিভিন্ন কাজ করতে পারবে।
এ বিষয়ে বিজ্ঞানী আন্তোনিও ফোর্ট বলেন, রোবট সিস্টেমের কাজ বিভিন্ন অংশে ভাগ করে দিলে সামগ্রিকভাবে গণনাগত প্রক্রিয়ার ওপর চাপ কমে আসে। তখন সার্কিটের মাধ্যমে রোবটের সামাজিক প্রেক্ষাপট বোঝার ও প্রতিক্রিয়া জানানোর ক্ষমতা বাড়তে পারে। এর ফলে রোবট আরও সূক্ষ্ম মিথস্ক্রিয়ার মাধ্যমে বড় আকারের দক্ষতা প্রদর্শন করতে পারবে। এমন অগ্রগতি রোবটকে ভবিষ্যতে মানুষের মতো চিন্তা করে বিভিন্ন কাজ করার উপযোগী করে তুলবে।
বর্তমানে রোবটের নিয়ন্ত্রণ প্রযুক্তি কম্পিউটার প্রসেসর ও বৈদ্যুতিক শক্তির ওপর নির্ভরশীল। ফলে তাদের কর্মক্ষমতাও সীমিত। কিন্তু নতুন এই সার্কিটের মাধ্যমে রোবট দীর্ঘসময় বিদ্যুৎহীন পরিবেশেও কাজ করার দক্ষতা অর্জন করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এ বিষয়ে আন্তোনিও ফোর্ট বলেন, বর্তমানে রোবটের সফটওয়্যারনির্ভর ক্ষমতা অনেক বাড়লেও হার্ডওয়্যার–সংক্রান্ত উদ্ভাবনে গতি আসছে না। নতুন সার্কিটের মাধ্যমে এমন একটি হার্ডওয়্যার ফ্রেমওয়ার্ক তৈরি করা যাবে, যা আলাদাভাবে কাজ করার স্বাধীনতা দেবে রোবটকে। মানব মস্তিষ্ক যেভাবে সরাসরি তত্ত্বাবধান ছাড়াই হৃৎস্পন্দনের মতো ফাংশনকে স্বায়ত্তশাসিতভাবে নিয়ন্ত্রণ করে, তেমনি রোবটও নিজের বিভিন্ন কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া