ডিজিটাল এ যুগে প্রযুক্তি পণ্যের প্রসার ও ব্যবহার দুটিই বেড়েছে। যন্ত্রনির্ভরতা বেড়ে যাওয়ায় উদ্বেগ তৈরি হচ্ছে স্ক্রিন টাইম বা পর্দায় কাটানো সময় নিয়ে। বিশেষ করে শিশুদের ক্ষেত্রে অভিভাবকদের এই উদ্বেগ আরও বেশি। বিশ্বের শীর্ষ প্রযুক্তিবিদ ও উদ্যোক্তারা এর ব্যতিক্রম নন। তাঁদের সন্তানদের ক্ষেত্রে তাঁদের অবস্থান কী?
প্রযুক্তিবিশ্বে চাউর রয়েছে যে নিজেদের বাসায় যতটা সম্ভব কম যন্ত্র ব্যবহার করে ডিজিটাল যন্ত্র ব্যবহারে ভারসাম্য আনতে সচেষ্ট থাকেন শীর্ষ প্রযুক্তিবিদেরা। দ্য ইনফরমেশনের এক সমীক্ষাও তা-ই প্রমাণ করে। তাদের সমীক্ষায় দেখা গেছে, প্রযুক্তি বিশ্বের ‘রাজধানী’ হিসেবে খ্যাত যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালির শিশুরা দেশটির অন্যান্য অঞ্চলের শিশুদের তুলনায় উল্লেখযোগ্য হারে কম যন্ত্র ব্যবহার করে। এ সমীক্ষার ফলাফল শীর্ষ প্রযুক্তিবিদদের শিশুদের স্ক্রিন টাইম নিয়ে অবস্থান আরও স্পষ্ট করে তুলে ধরে। জানা গেছে, প্রযুক্তিপ্রতিষ্ঠানের অনেক প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নাকি শিশুদের স্ক্রিন টাইমে নজরদারি ও সীমাবদ্ধ করার জন্য লোকও নিয়োগ দিয়ে রেখেছেন। কয়েকজন শীর্ষ প্রযুক্তিবিদের অবস্থান দেখে নেওয়া যাক।
মাইক্রোসফটের সহপ্রতিষ্ঠাতা বিল গেটস তাঁর সন্তানের প্রযুক্তি ব্যবহারে বেশ কঠোর ছিলেন। ১৪ বছরের আগে তিনি তাঁর সন্তানদের স্মার্টফোন দেননি। এমনকি তাঁর বাড়িতে খাবার টেবিলে বসে যন্ত্র ব্যবহার নিষিদ্ধ। মিররকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এসব তথ্য জানিয়েছেন বিল গেটস।
শিশুদের স্ক্রিন টাইম নিয়ে বেশ উদ্বেগ রয়েছে ফেসবুকের সহপ্রতিষ্ঠাতা মার্ক জাকারবার্গের। আত্মীয়দের সঙ্গে তাঁর সন্তানেরা ভিডিও কলে কথা বলার সুযোগ পেলেও বিনোদনের জন্য কত সময় যন্ত্র ব্যবহার করা হবে, তা তিনি বেঁধে দিয়েছেন। ডিজিটাল পর্দার ব্যবহার যাতে আসক্তি না হয়ে অর্থবহ হয়, সেদিকেই তাঁর প্রচেষ্টা।
গুগলের সিইও শিশুদের স্ক্রিন টাইম কম রাখার পক্ষে যে অবস্থান করেন, তা খোলাসা করেছেন বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে। ডিজিটাল জগতে বেড়ে ওঠা শিশুদের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে তিনি উদ্বেগও প্রকাশ করেন সেই সাক্ষাৎকারে। অবশ্য স্ক্রিন টাইম বেঁধে দেওয়ার বদলে তিনি তার সন্তানদের ডিজিটাল সাক্ষরতায় উদ্বুদ্ধ করেন এবং নিজের সীমা নিজেকেই তৈরির স্বাধীনতা দেন।
ফেসবুকের সাবেক শীর্ষ কর্মকর্তা চামথ পালিহাপিটিয়াও শিশুদের প্রযুক্তি যন্ত্র ব্যবহারে বেশ কঠোর। তিনি তাঁর সন্তানদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার থেকে বিরত রেখেছেন। এর ফলে তাদের ডিজিটাল যন্ত্রের ব্যবহার কমে গেছে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম রেডিটের সহপ্রতিষ্ঠাতা অ্যালেক্সিস ওহানিয়ান শিশুদের ডিজিটাল যন্ত্র ব্যবহারের বিকল্প রেখেছেন। তিনি তাঁর সন্তানের জন্য ‘অফলাইন’ কার্যক্রমকে প্রাধান্য দেন। এমনকি ভিডিও গেমসের বদলে বিভিন্ন খেলনা দিয়ে খেলতে দেন।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া