'সারাহাহ' নিয়ে কেন এত মাতামাতি?

সারাহাহ ব্যবহার করে ফেসবুকে পোস্ট করা একটি বার্তা।
সারাহাহ ব্যবহার করে ফেসবুকে পোস্ট করা একটি বার্তা।

নতুন অ্যাপ সারাহাহতে বার্তা পেয়েছেন আফরিন। তাতে লেখা, ‘আপনিও একা, আমিও একা। চলেন আমরা বেড়াতে যাই একা একা, যাবেন কি?’ কিন্তু এ বার্তা কে পাঠিয়েছেন, তিনি তা জানেন না। আফরিনের মতো অনেকেই এখন সারাহাহ ব্যবহার করছেন। কী এই সারাহাহ?

সারাহাহ নিয়ে এখন চলছে মাতামাতি। যাঁরা সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ব্যবহার করেন, তাঁরা নিশ্চয়ই ‘সারাহাহ’ থেকে পোস্ট করা বার্তা নিউজফিডে খেয়াল করেছেন। সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে প্রায়ই কোনো না কোনো অ্যাপ আলোচনায় আসে। এর আগে ফেসঅ্যাপ, প্রিজমা নামের অ্যাপ্লিকেশনগুলো নিয়েও মাতামাতি হয়েছিল। এখন আলোচনা হচ্ছে সারাহাহ নিয়ে।

সারাহাহ আরবি শব্দ। এর অর্থ সৎ বা অকপটতা। কর্মক্ষেত্রে প্রতিক্রিয়া জানানোর ওয়েবটুল হিসেবে সারাহাহর ব্যবহার শুরু হয়েছিল। তরুণদের কাছে ইতিমধ্যে অ্যাপটি দারুণ জনপ্রিয়তা পেয়েছে।

সারাহাহ হচ্ছে নাম-পরিচয় গোপন করে বার্তা পাঠানোর অ্যাপ। যখন কোনো ব্যবহারকারী অ্যাপটিতে নিবন্ধন করেন, তাঁরা বন্ধুদের লিংক পাঠাতে বা অনলাইনে তা পোস্ট করতে পারেন। ওই লিংক ব্যবহার করে যে-কেউ গোপন বার্তা পাঠাতে পারেন। প্রেরকের পরিচয় জানার কোনো সুযোগ প্রাপকের কাছে থাকবে না। প্রাপক সরাসরি অ্যাপের মাধ্যমে কোনো জবাব দিতে পারবেন না। অ্যাপের মাধ্যমে পাওয়া বার্তাটির উত্তর দিতে হলে অন্য কোনো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বার্তাটি শেয়ার করে তারপর তাঁকে উত্তরটি দিতে হবে।

অ্যাপটি তৈরি করেছেন সৌদি আরবের তরুণ ডেভেলপার জায়ান আল-আবিদিন তৌফিক। তাঁর ভাষ্য, খুব সরল উদ্দেশ্যে তিনি এটি তৈরি করেছেন। অ্যাপটি ব্যবহার করে যাতে কোনো প্রতিষ্ঠানের কর্মীরা তাঁর চাকরিদাতা বা ঊর্ধ্বতনের কাছে পরিচয় গোপন করে প্রতিক্রিয়া জানাতে পারেন, সে লক্ষ্যে এটি তৈরি। যাঁরা চাকরি হারানোর ভয়ে সামনাসামনি কিছু বলতে পারেন না, তাঁদের কিছু বলার সুযোগ করে দিতে অ্যাপটি তৈরি করা হয়েছে। পরে অবশ্য তৌফিক ভাবেন, অ্যাপটি শুধু কর্মীদের মধ্যেই নয়, ব্যক্তিগত পর্যায়েও ব্যবহার করা যেতে পারে। বন্ধু ও পরিচিতজনেরা গোপনে একে অন্যকে প্রতিক্রিয়া জানাতে পারবেন।

সারাহাহ অ্যাপ

শুরুতে ওয়েবসাইট হিসেবে সারাহাহ তৈরি করেন তৌফিক। মধ্যপ্রাচ্য ও আফ্রিকা অঞ্চলে এটি জনপ্রিয়তা পেয়েছিল। তবে পশ্চিমা দেশগুলোয় জনপ্রিয়তা পেতে আরও বাড়তি কিছু করার প্রয়োজন ছিল তৌফিকের। এ বছরের ১৩ জুন সারাহাহ অ্যাপটি আইওএস প্ল্যাটফর্মে অ্যাপ স্টোর ও গুগল প্লেতে উন্মুক্ত করেন। অ্যাপটি দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। দ্রুততম সময়ে বিনা মূল্যের অ্যাপ হিসেবে দুটি প্ল্যাটফর্মের শীর্ষ তিনে উঠে আসে। অ্যাপটির স্ন্যাপচ্যাট সংযুক্তির ফলে এটি তরুণদের মধ্যেও জনপ্রিয় হয়।

সারাহাহ অ্যাপটি নিয়ে সমালোচনাও হচ্ছে। এই প্ল্যাটফর্মকে সাইবার নিপীড়নের টুল হিসেবেও মনে করছেন অনেকে। পরিচয় গোপন করা যায় বলে অনেকে সারাহাহ ব্যবহার করে যা খুশি তাই লিখতে পারেন। অনেক অভিভাবক ও ব্যবহারকারী এমন অভিযোগ করছেন। আবার অনেকে এর প্রশংসাও করছেন।

আরও  পড়ুন...
চেহারা বদলে দিচ্ছে ফেসঅ্যাপ