মানুষের বয়সভিত্তিক দৈহিক পরিবর্তন সবার এক রকম হয় না। কেউ অল্প বয়সেই বুড়িয়ে যেতে পারে। আবার অনেক বয়সেও কারও শরীরে থাকে যৌবনের ছাপ। এর কারণ মানুষের দুটি বয়সের ভিন্নতা। জন্ম থেকে সময়-দিন গণনা করে হিসাব করা বয়সকে শুধু বয়স বলা হলেও এটি আসলে মানুষের কালানুক্রমিক বয়স। আরেকটি হলো মানুষের শারীরবৃত্তীয় বা জৈবিক বয়স। এই জৈবিক বয়সই নির্ধারণ করে মানুষের বুড়িয়ে যাওয়া বা ফিট থাকা। এই বয়স থামিয়ে দিতে পারলে বা এর গতি উল্টো করে দিলে প্রকৃত অর্থেই কমে যাবে মানুষের বয়স এবং বিলম্বিত হবে বার্ধক্য।
‘এপিজেনেটিক ঘড়ি’ দিয়ে মানুষের জৈবিক বয়স হিসাব করা যায়। যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলেসে অবস্থিত ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বংশগতিবিদ স্টিভ হরভাট প্রথম এই ঘড়ি তৈরি করেন। তিনিই এবার একটি যুগান্তকারী গবেষণায় দেখিয়েছেন, মানুষের জৈবিক বয়সের গতি উল্টো দিকে ঘুরিয়ে দেওয়া সম্ভব। এ জন্য তিন প্রকারের ওষুধ একত্রে প্রয়োগ করেছেন হরভাট। এ নিয়ে ছোট পরিসরে একটি পরীক্ষাও চালিয়েছেন তিনি। যুক্তরাজ্যের দুটি বিখ্যাত বিজ্ঞান গবেষণা সাময়িকী এজিং সেল ও নেচার গবেষণাটি গত মঙ্গলবার প্রকাশ করেছে।
হরভাট এক বছর ধরে নয়জন সুস্থ-সবল স্বেচ্ছাসেবকের শরীরে ওই তিন ধরনের ওষুধের একটি মিশ্রণ প্রয়োগ করেন। এর একটি গ্রোথ হরমোন। বাকি দুই ওষুধ দুই প্রকারের ডায়াবেটিসের চিকিৎসায় ব্যবহার হয়। পরীক্ষায় দেখা যায়, অংশগ্রহণকারীদের জৈবিক বয়স গড়ে আড়াই বছর করে কমে গেছে।
এপিজেনেটিক ঘড়িতে শরীরের এপিজিনোম হিসাব করা হয়। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এটি মানুষের ডিএনএতে ডিএনএ-মেথালেশন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে প্রতিনিয়ত পরিবর্তন হতে থাকে। এর প্যাটার্ন থেকেই জৈবিক বয়স জানা যায়। এই প্যাটার্নের ওপরই ওষুধ প্রয়োগ করেছেন হরভাট।