নতুন সম্ভাবনা নিয়ে আসে নতুন বছর। পুরোনো বছরের সাফল্য-ব্যর্থতার কিছু হিসাব থেকে যায়। প্রযুক্তি বিশ্বে গত বছর কিছু প্রযুক্তি জনপ্রিয়তা পেয়েছিল। আবার কিছু প্রযুক্তি প্রত্যাশা পূরণে ব্যর্থ। গত বছর নেতিবাচক খবর হয়ে আলোচনার জন্ম দিয়েছিল, এমন কয়েকটি ঘটনার কথা প্রকাশ করেছে সিএক্সও টুডে। এর মধ্যে বাছাই করা ৫টি ঘটনা তুলে ধরা হলো:
মুখ থুবড়ে পড়ে নোট ৭: সবচেয়ে বুদ্ধিমান ফোনের তকমা দিয়ে ২০১৬ সালে স্যামসাং বাজারে এনেছিল গ্যালাক্সি নোট ৭ নামের একটি স্মার্টফোন। কিন্তু এ ফোনটিই ডুবিয়েছে তাদের। বাজারে আসার কিছুদিনের মধ্যেই স্যামসাংয়ের দুঃস্বপ্ন হয়ে আসে নোট ৭-এ আগুন ধরার ঘটনা। বেশ কয়েকটি ঘটনা ঘটার পর বাজার থেকে ওই ফোন ফেরত নেয় দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতিষ্ঠানটি। প্রযুক্তি বিশ্বে এ ঘটনাটি বড় প্রভাব ফেলবে বলে মনে করা হয়।
ইয়াহু অ্যাকাউন্ট হ্যাক: ২০০০ সালে ইয়াহুর মূল্যমান ছিল ১ হাজার ২৫০ কোটি মার্কিন ডলার। একসময় গুগলের সঙ্গে প্রতিযোগিতা হতো ইয়াহুর। অথচ গত বছরে ইয়াহুর দাম ওঠে মাত্র ৫০০ কোটি ডলার। ইয়াহুর কফিনে শেষ পেরেক ঠুকে দেওয়ার ঘটনাটি ঘটে হ্যাক হওয়ার ঘটনা জানাজানি হওয়ায়। ২০১৪ সালে প্রায় ৫০ কোটি ইয়াহু অ্যাকাউন্ট হ্যাকের ঘটনা প্রকাশ পায় গত বছরে। ইয়াহু কর্তৃপক্ষও বিপাকে পড়ে।
ফেসবুকে ভুয়া খবর: গত বছর ভুয়া খবর প্রকাশ করার জন্য দারুণভাবে সমালোচনার মুখে পড়ে ফেসবুক। ফেসবুকে ছড়ানো ভুয়া খবর মার্কিন নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের পক্ষে গেছে—এমন অভিযোগ ওঠে। ফেসবুকে ভুয়া খবর নিয়ন্ত্রণে কর্তৃপক্ষ কোনো ভূমিকা রাখছে না—এমন অভিযোগের মুখে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ। মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা পর্যন্ত সমালোচনা করেন। ভিত্তিহীন খবর প্রচার মোকাবিলায় সামাজিক যোগাযোগের অনলাইন মাধ্যম ফেসবুক কিছু পরিকল্পনা নেওয়ার কথা জানায়। প্রতিষ্ঠানটির প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জাকারবার্গ আশা করেন, তথ্যের সত্যাসত্য যাচাইয়ে আরও শক্তিশালী কৌশল ব্যবহার করবে ফেসবুক।
সাড়া ফেলেনি ম্যাকবুক প্রো: ২০১৬ সালে অ্যাপল অনেক চমক দেবে বলে জানিয়েছিল। অ্যাপলের একমাত্র চমকটি ছিল এ বছরের অক্টোবরে আসা টাচ বারযুক্ত ম্যাকবুক। অ্যাপলের এই কম্পিউটারে প্রথমবারের মতো কি-বোর্ডের ওপরের দিকে আলাদা একটি টাচস্ক্রিন যুক্ত ছিল। তবে বাজার বিশ্লেষকেদের চোখে নতুন ম্যাকবুক প্রো তেমন কোনো সাড়া ফেলতে পারেনি।
ব্ল্যাকবেরির হার্ডওয়্যার থেকে সরে যাওয়া: হার্ডওয়্যার তৈরি থেকে সরে দাঁড়িয়েছে ব্ল্যাকবেরি। ফোনের ব্যবসায় ১৪ বছরের উত্থান-পতন শেষে ব্ল্যাকবেরি ওই ঘোষণা দেয়। নিজস্ব নকশার ফোন তৈরির পরিবর্তে সফটওয়্যার উন্নয়নের দিকে বেশি গুরুত্ব দেওয়ার কথা জানায় প্রতিষ্ঠানটি। বিশ্বের প্রথম নিরাপদ অ্যান্ড্রয়েড স্মার্টফোন তকমা দিয়ে ‘ডিটেক ৫০’ নামের ফোনও আনে ব্ল্যাকবেরি। তবে ব্ল্যাকবেরির সব চেষ্টাই বিফলে গেছে। ক্রমেই কমেছে ব্ল্যাকবেরির ব্যবহার। তাই হার্ডওয়্যার নির্মাণ বাদ দিয়ে গত বছর চীনের টিসিএলের সঙ্গে চুক্তি করে ব্ল্যাকবেরি। অর্থাৎ, ব্ল্যাকবেরির ফোন তৈরি করছে টিসিএল।