যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার বাধ্যবাধকতা মেনে জাপানের প্রযুক্তিপণ্য নির্মাতা প্যানাসনিক চীনের প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান হুয়াওয়ের সঙ্গে ব্যবসা বন্ধ করে দিয়েছে। হুয়াওয়ের জন্য এটি আরেক বড় ধাক্কা। গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্র হুয়াওয়েকে ‘কালো তালিকাভুক্ত’ করে। এ কারণে দেশটিতে লাইসেন্স ব্যতীত কোনো পণ্য কেনাবেচা করার সুযোগ পাবে না হুয়াওয়ে। যুক্তরাষ্ট্র আরোপিত ওই নিষেধাজ্ঞা যেসব কোম্পানি যুক্তরাষ্ট্রের ২৫ শতাংশ পর্যন্ত পণ্য ব্যবহার করে, তারা মানতে বাধ্য।
আজ বৃহস্পতিবার বিবিসি অনলাইনের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
হুয়াওয়েকে আটকানোর প্রচেষ্টার আরেকটি অংশ হিসেবে দেখা হচ্ছে একে। যুক্তরাষ্ট্র হুয়াওয়েকে তাদের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি হিসেবে উল্লেখ করেছে।
প্যানাসনিকের পক্ষ থেকে অভ্যন্তরীণভাবে বলা হচ্ছে, মার্কিন সরকারের নিষেধাজ্ঞায় থাকা হুয়াওয়ে ও তার সহযোগী ৬৮ প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ব্যবসায়িক সম্পর্ক তারা বন্ধ করবে।
১৫ মে ট্রাম্প প্রশাসন আনুষ্ঠানিকভাবে হুয়াওয়েকে যুক্তরাষ্ট্রে কালো তালিকাভুক্ত করে। এর ফলে সরকারি অনুমোদন ছাড়া মার্কিন সংস্থা থেকে প্রযুক্তিসেবা নেওয়ার পথ বন্ধ করা হয় হুয়াওয়ের জন্য।
আসলে চীনা বাণিজ্য নিয়ে দ্বন্দ্বে বরাবরই হুয়াওয়েকে জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি বলে আসছেন ট্রাম্প। গত বছর থেকে হুয়াওয়ের বিরুদ্ধে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগ আনে যুক্তরাষ্ট্র। যুক্তরাষ্ট্রে ফাইভজি সেবার কাজে হুয়াওয়েকে ‘নিষিদ্ধ’ও ঘোষণা করা হয়। এতে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ে টেলিকম নেটওয়ার্কে হুয়াওয়ের যন্ত্রপাতি ব্যবহার করা দেশগুলো।
হুয়াওয়ের প্রধান নির্বাহী রেন ঝেংফেই যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞায় হুয়াওয়ের ওপর তেমন কোনো প্রভাব পড়বে না বলে মন্তব্য করেছেন। তবে প্রাথমিক ইঙ্গিত সে কথা বলছে না।
হুয়াওয়ের পণ্যে নিষেধাজ্ঞার প্রভাব ইতিমধ্যে পড়তে শুরু করেছে। গত সোমবার যুক্তরাষ্ট্র সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী মার্কিন টেক জায়ান্ট গুগল ঘোষণা দেয়, এখন থেকে হুয়াওয়ের অ্যান্ড্রয়েড অপারেট সিস্টেমে কিছু সেবার আর কোনো আপডেট ভার্সন দেবে না তারা। এর ফলে নতুন হুয়াওয়ে স্মার্টফোনগুলোয় জিমেইল, ইউটিউব, গুগল ম্যাপসের মতো অ্যাপগুলো আর থাকবে না।
জাপানের সফটব্যাংক ও কেডিডিআই হুয়াওয়ের নতুন হ্যান্ডসেট বিক্রি করবে না বলে ঘোষণা দিয়েছে।
প্রতিষ্ঠানটির অস্বস্তি আরও বাড়িয়ে দিয়েছে চিপ ডিজাইনার কোম্পানি এআরএম। যুক্তরাজ্যভিত্তিক কোম্পানিটি নিজেদের কর্মীদের জানিয়েছে, মার্কিন নিষেধাজ্ঞা মেনে হুয়াওয়ের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করবে তারা। এ কারণে চিপের নকশা নিয়েও বিপদে পড়তে যাচ্ছে হুয়াওয়ে।