করোনাভাইরাসের উৎসকে কেন্দ্র করে কথা কাটাকাটির জেরে চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য সম্পর্ক আবার উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। তার ধাক্কা লেগেছে চীনা কোম্পানি হুয়াওয়ের ওপরে। চীনা প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান হুয়াওয়েসহ অন্য প্রতিষ্ঠানকে অযৌক্তিক চাপ দেওয়া বন্ধ করতে ওয়াশিংটনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বেইজিং। সম্প্রতি হুয়াওয়েকে সেমিকন্ডাক্টর সরবরাহ বন্ধে অন্য প্রতিষ্ঠানকে চাপ দিতে নতুন রপ্তানি নিয়ন্ত্রণ নীতিমালা ঘোষণা করেছে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য বিভাগ।
বার্তা সংস্থা এএফপির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রে গোয়েন্দাগিরির অভিযোগ থাকা বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম স্মার্টফোন নির্মাতার ওপর নতুন বিধিনিষেধ যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে বৈশ্বিক প্রযুক্তি আধিপত্যের লড়াইয়ে নতুন উত্তেজনা ছড়িয়েছে।
শনিবার চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়, চীন সরকার দৃড়ভাবে চীনা প্রতিষ্ঠানগুলো বৈধ ও আইনি অধিকার এবং স্বার্থকে সমর্থন করবে। আমরা যুক্তরাষ্ট্রকে হুয়াওয়েসহ চীনা কোম্পানিগুলোকে অযৌক্তিক দমন অবিলম্বে বন্ধ করার জন্য আহ্বান করছি। ট্রাম্প প্রশাসনের এ উদ্যোগ বৈশ্বিক উৎপাদন, সরবরাহ ও মূল্যের শৃঙ্খলকে ধ্বংস করবে।'
শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য বিভাগ বলেছে, তাদের ঘোষণা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রপ্তানি নিয়ন্ত্রণকে দুর্বল করার হুয়াওয়ের প্রচেষ্টা বন্ধ করে দিয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে বৈশ্বিক প্রযুক্তিগত আধিপত্যের লড়াইয়ের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে ওঠা হুয়াওয়ের ব্যাপক ব্যবহৃত স্মার্টফোন ও টেলিকম সরঞ্জামের জন্য সেমিকন্ডাক্টর প্রয়োজন।
চীন গুপ্তচরবৃত্তির জন্য হুয়াওয়ের যন্ত্রপাতি ব্যবহার করতে পারে এমন অভিযোগ তুলে যুক্তরাষ্ট্র তার মিত্রদের ৫জি নেটওয়ার্ক থেকে হুয়াওয়ের গিয়ার বাদ দেওয়ার জন্য বোঝানোর চেষ্টা করছে। হুয়াওয়ে চরবৃত্তির সব অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য বিভাগ বলছে, গত বছরের মে মাসে যুক্তরাষ্ট্রের কালো তালিকায় অন্তর্ভুক্তির পরেও হুয়াওয়ে মার্কিন সফটওয়্যার ও প্রযুক্তি ব্যবহার করে তৈরি চিপ ব্যবহার করেই যাচ্ছে। নীতিমালা পরিবর্তনের ফলে যেসব বিদেশি কোম্পানি যারা মার্কিন চিপনির্মাণ প্রযুক্তি ব্যবহার করে, তারা হুয়াওয়েকে চিপ সরবরাহ করলে অনুমতি নিতে হবে।
গত এক সপ্তাহ ধরে করোনাভাইরাস নিয়ে পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপের ঘোষণা দেওয়া হচ্ছে। আমেরিকার আইনজীবিদের চীনের বিরুদ্ধে করোনাভাইরাস মহামারির জন্য কয়েকটি মামলা দায়েরের জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধেও প্রতিশোধমূলক পদক্ষেপের হুমকি দিয়েছে বেইজিং।