যুক্তরাষ্ট্রের প্রযুক্তি উদ্যোক্তা এলন মাস্কের নতুন রকেট ফ্যালকন হেভি যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডার কেনেডি স্পেস সেন্টার থেকে আকাশে পরীক্ষামূলক যাত্রা সফলভাবে শুরু করেছে। গতকাল মঙ্গলবার এ পরীক্ষা চালায় প্রতিষ্ঠানটি। বিশাল আকারের ওই রকেট মহাকাশযান ইতিহাসে সবচেয়ে শক্তিশালী হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।
বড় ধরনের কোনো ঝামেলা ছাড়াই আটলান্টিক মহাসাগরের ওপর দিয়ে একটি উড়ে যায়। পরীক্ষামূলক এই ফ্লাইটকে ঝুঁকিপূর্ণ মনে করা হচ্ছিল।
যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা প্রতিষ্ঠান স্পেসএক্সের প্রধান নির্বাহী এলন মাস্ক বলেন, নতুন রকেট তৈরির পর চ্যালেঞ্জ ছিল। কারণ, এর সফলতার হার ছিল ৫০-৫০। বিশাল এক বিস্ফোরণের আশঙ্কা ছিল। সৌভাগ্য যে এ রকম কিছু ঘটেনি। পরীক্ষা সফল হওয়ায় ফ্যালকন হেভি রকেটটি সবচেয়ে সক্ষম মহাকাশযান উৎক্ষেপণ যান হিসেবে গণ্য হবে। এর উদ্দেশ্যে হচ্ছে মঙ্গল গ্রহের কক্ষপথে যন্ত্রপাতি পাঠানো। এটি এমনভাবে নকশা করা হয়েছে, যাতে পৃথিবীর কক্ষপথে ৬৪ টন পেলোড পাঠানো যায়। অর্থাৎ, পাঁচটি ডাবল ডেকার বাস মহাকাশে পাঠানো যাবে এতে। এর আগে ডেল্টা ফোর হেভি রকেটের সক্ষমতা ছিল এর অর্ধেক। নতুন রকেটটিতে অনেক কম খরচে ‘ডেল্টা ফোর হেভি’ রকেটের চেয়ে বেশি রসদ পাঠানো যাবে বলে দাবি করেন এলন মাস্ক।
গতকাল পরীক্ষামূলকভাবে প্রথমবারের মতো আকাশে উড়ল ফ্যালকন হেভি। এলন মাস্কের ব্যক্তিগত মহাকাশযান নির্মাতা প্রতিষ্ঠান স্পেসএক্স এটি তৈরি করেছে। প্রায় ২৩ তলার সময় উঁচু বিশাল রকেটটিতে চেরি ফলের মতো লাল রঙের টেসলা রোডস্টার গাড়ি ছিল। পেলোড বা রসদ হিসেবে পরীক্ষামূলকভাবে গাড়িটি রকেটে করে পাঠানো হয়।
রকেট নিয়ে পরীক্ষা চালানোর আগে মাস্ক বলেছিলেন, এর সবচেয়ে চ্যালেঞ্জিং অংশ হচ্ছে রকেটের পাশে থাকা দুটি বুস্টার রকেট উৎক্ষেপণের তিন মিনিটের মধ্যে পৃথক হয়ে যাবে। খরচ কমাতে এতে পুনর্ব্যবহারযোগ্য রকেট প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে।
মাস্ক বলেন, এটি যদি উৎক্ষেপণ কেন্দ্র থেকে ওপরে উঠতে পারে, তবে তাকে সাফল্য হিসেবেই ধরতে হবে। ফ্যালকন হেভির প্রাথমিক ফলাফল হিসাব করলে দেখা যাবে, এটি কোনো ধরনের ঝামেলা ছাড়াই নিখুঁতভাবে উড়তে সক্ষম হয়েছে।
স্পেসএক্সের পক্ষ থেকে দাবি করা হচ্ছে, এ রকেট উৎক্ষেপণে সফল হওয়ায় ভবিষ্যতে মঙ্গল গ্রহের অভিযান চালানোর আশা করা যেতে পারে।
প্রতিবার উৎক্ষেপণে রকেটটিতে নয় কোটি মার্কিন ডলার খরচ হবে। এ সময় ৭০ টনের মতো রসদ মহাকাশে পাঠানো যাবে। ২৭টি রকেট ইঞ্জিনযুক্ত যানটি নিয়ে মহাকাশযাত্রার অনেক সম্ভাবনা দেখছেন উদ্যোক্তারা।