আজ শুক্রবার গুগলের হোমপেজ খুললেই চোখে পড়ছে অতিপরিচিত একটি মুখ। মাথায় টুপি, হাতে গিটার। বাংলাদেশের কিংবদন্তি সংগীতশিল্পী লাকী আখান্দের চিরচেনা এই ভঙ্গি দিয়েই ডুডল করেছে গুগল। লাকী আখান্দের ৬৩তম জন্মদিন গুগল তাদের হোমেপেজে নতুন ডুডলের মাধ্যমে উদযাপন করছে।
বাংলাদেশের কণ্ঠশিল্পী, সুরকার, সংগীত পরিচালক ও মুক্তিযোদ্ধা লাকী আখান্দ ১৯৫৬ সালের ৭ জুন জন্ম নেন। ক্যানসারে আক্রান্ত এই শিল্পীর মৃত্যু হয় ২০১৭ সালের ২১ এপ্রিল।
আজ শুক্রবার প্রথম প্রহর থেকেই গুগলের হোমপেজে এ ডুডল দেখতে পাচ্ছেন ব্যবহারকারীরা। গুগল তাদের ডুডল পাতায় লাকী আখান্দের জীবন-সম্পর্কিত তথ্য তুলে ধরেছে। এ ছাড়া ডুডলের ওপর ক্লিক করলে লাকী আখান্দ–সংক্রান্ত তথ্য পাতায় নিয়ে যাচ্ছে।
‘এই নীল মনিহার’, ‘আবার এল যে সন্ধ্যা’, ‘আমাকে ডেকো না’—গানের এই শিল্পীর বাবার হাত ধরে পাঁচ বছর বয়সে গানে হাতেখড়ি হয়। ১৯৬৩ থেকে ১৯৬৭ সাল পর্যন্ত তিনি রেডিও ও টেলিভিশনে শিশুদের গানের অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছেন। মাত্র ১৪ বছর বয়সেই এইচএমভি পাকিস্তানের সুরকার এবং ১৬ বছর বয়সে এইচএমভি ভারতের সংগীত পরিচালক হিসেবে নিজের নাম যুক্ত করেন। পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশ বেতারের সংগীত পরিচালক হিসেবে তিনি দায়িত্ব পালন করেন।
লাকী আখান্দ স্বাধীন বাংলা বেতারকেন্দ্রের শিল্পী ছিলেন। ১৯৮৪ সালে তাঁর প্রথম একক অ্যালবাম বের হয়। সেই অ্যালবামের ‘আগে যদি জানতাম’, ‘আমায় ডেকো না’, ‘মামোনিয়া’, ‘এই নীল মনিহার’ এবং ‘হৃদয় আমার’ গানগুলো ছিল মানুষের মুখে মুখে। তাঁর রচিত ‘আবার এল যে সন্ধ্যা’ এবং ‘কে বাঁশি বাজায় রে’ গান দুটি তাঁর ভাই হ্যাপি আখান্দের কণ্ঠে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পায়। ১৯৮৭ সালে ভাই হ্যাপি আখান্দের মৃত্যুর পর গানের জগৎ থেকে নিজেকে গুটিয়ে নেন লাকী আখান্দ। এক দশক পর তিনি ১৯৯৮ সালে ফিরে আসেন ‘পরিচয় কবে হবে’ এবং ‘বিতৃষ্ণা জীবনে আমার’ অ্যালবাম দুটি নিয়ে।
গুরুতর অসুস্থ হয়ে ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) ভর্তি হলে ফুসফুসে ক্যানসার ধরা পড়ে লাকী আখান্দের। এরপর ব্যাংককে ছয় মাস চিকিৎসাধীন ছিলেন। অবস্থার একটু উন্নতি হলে ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে দেশে এনে তাঁকে ভর্তি করানো হয় বিএসএমএমইউতে। ওই বছরের ২১ এপ্রিল শিল্পীর শারীরিক অবস্থা আরও গুরুতর হলে আরমানিটোলার বাসা থেকে তাঁকে মিটফোর্ড হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে সেখানকার চিকিৎসকেরা শিল্পীকে মৃত ঘোষণা করেন।