সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকের করপোরেট প্রতিষ্ঠান মেটা জানিয়েছে, তারা সব ভুল তথ্য সরিয়ে ফেলে না। শারীরিকভাবে ক্ষতির কারণ হতে পারে, সংঘর্ষ, কারসাজি করা ভিডিও, কারও ক্ষতির উদ্দেশ্যে সম্পাদিত কোনো ভিডিওসহ মেটার নীতিবিরুদ্ধ কোনো কনটেন্ট হলেই কেবল তা সরিয়ে নেওয়া হয়।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে মেটার এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চল ‘ভুল তথ্যের বিরুদ্ধে লড়াই’–সম্পর্কিত এক ভার্চ্যুয়াল ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলা হয়।
এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের প্রোডাক্ট পলিসি টিমের অ্যালিস বুদিসাত্রিজো ভুল তথ্যের বিরুদ্ধে মেটা কী ধরনের পদক্ষেপ নিয়ে থাকে, তা তুলে ধরেন।
সব ভুল তথ্য না সরানোর কারণ হিসেবে মেটা বলেছে, সত্য নির্ধারণের বিচার মেটা করে না। এ ছাড়া মেটার কনটেন্ট মডারেটরদের পক্ষে সবকিছু সত্য কি না, তা জানা সম্ভব নয়। আর সব তথ্য নিশ্চিতভাবে সত্য বা মিথ্যা নয়। সত্যের মাপকাঠি আছে এবং কোনটা সত্য বা কোনটা মিথ্যা, তা নিয়ে মানুষের ভিন্ন ভিন্ন মতামত থাকতে পারে।
মেটা বলছে, বিশ্বে মেটার তিন বিলিয়নের বেশি গ্রাহক আছে। তার গ্রাহকদের সঠিক তথ্য জানার অধিকার আছে। তাই তারা ক্ষতিকর কনটেন্ট সরিয়ে নেয়। মেটার এশিয়া প্যাসিফিকের কর্মকর্তা বলেন, ‘মানুষ যদি ভাবে, ফেসবুকের সবকিছুই মিথ্যা বা বিভ্রান্তিকর, তাহলে তারা আমাদের সেবা নেওয়া বন্ধ করে দেবে।’
২০২০ সালের মার্চ থেকে করোনাভাইরাস সম্পর্কিত ২৪ মিলিয়ন ভুল তথ্য মেটা সরিয়েছে। এ ছাড়া করোনা নিয়ে ১৯৫ মিলিয়ন ভুল তথ্য সম্পর্কে সতর্ক করে কনটেন্টে লেবেল লাগিয়েছে মেটা।
মহামারিকালে বাংলাদেশ থেকে কী পরিমাণ ভুল তথ্য সরানো হয়েছে, সে বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে মেটা জানায়, দেশভিত্তিক আলাদা করে কোনো তথ্য তারা এখন দিতে পারছে না।
ভুল তথ্য বিষয়ে সারা বিশ্বে ৬০টি ভাষায় ৮০টি ফ্যাক্ট চেকার বা তথ্য যাচাই–সম্পর্কিত প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কাজ করে মেটা। বাংলাদেশে ফ্যাক্ট ওয়াচ, বুম এবং এএফপির সঙ্গে কাজ করে এই টেক জায়ান্ট প্রতিষ্ঠান।
মেটা জানিয়েছে, এই ফ্যাক্ট চেকাররা যখন কোনো কনটেন্ট মিথ্যা, পরিবর্তিত বা আংশিকভাবে মিথ্যা হিসেবে রেট করে, তখন মেটা তার ফেসবুক নিউজ ফিড ও ইনস্টাগ্রাম ফিডে এর প্রচার বা রিচ কমিয়ে দেয়, যাতে কম মানুষের কাছে তা পৌঁছায়।
এ ছাড়া ইনস্টাগ্রামে এক্সপ্লোর ও হ্যাশট্যাগ অপশন থেকে ফিল্টার করে দেয়। ফলে ওই কনটেন্ট খুঁজে পাওয়া কঠিন হয়। তারা বলছে, গ্রাহকদের কনটেন্ট সম্পর্কে জানিয়ে দেওয়া হয় এবং ভুল তথ্য–সংক্রান্ত কনটেন্ট হলে তাতে লেবেল দেওয়া থাকে। ফলে মানুষ নিজেরাই সিদ্ধান্ত নিতে পারে—কী পড়বে, বিশ্বাস করবে ও শেয়ার করবে।