ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মেহতাব খানম। তিনি আপনার মানসিক বিভিন্ন সমস্যার সম্ভাব্য সমাধান দেবেন। অল্প কথায় আপনার সমস্যা তুলে ধরুন। আপনার সঠিক পরিচয় না দিতে চাইলে অন্য কোনো নাম ব্যবহার করুন।—বি. স.
সমস্যা
আমি মধ্যবিত্ত ঘরের একমাত্র মেয়ে। ছোটবেলা থেকে সবাই আমাকে খুব ভালোবাসত। কিন্তু এখন আর আগের মতো কেউ আমাকে ভালোবাসে না। ছোটবেলা থেকেই বাবা-মা কারও সঙ্গে মিশতে দিতেন না। এখনো মানুষের সঙ্গে ভালোভাবে মিশতে পারি না। আমার কোনো বন্ধু নেই। আমি মনের কষ্টগুলো কাউকে বলতে পারি না। আমার দুজন সহপাঠী আছে। তারা সব সময় আমাকে খুব সাহায্য করে। তাদের আমি বন্ধু না, বড় ভাইয়ের মতো মনে করি। তারা মাঝে মাঝে বাসায় এলে, আমার পরিবার অসন্তুষ্ট হয়। এতে আমার ভীষণ কষ্ট হয়। কিন্তু কাউকে কিছু বলি না, শুধু কাঁদি। আমার সব সময় মাথাব্যথা করে। অনেক চিকিৎসা করেও কোনো লাভ হচ্ছে না।
আঁখি, রংপুর।
পরামর্শ
মনে হচ্ছে, শৈশব থেকে তুমি পরিবারে একাই বড় হয়েছ। অনেক সময় ভাইয়েরা থাকলেও তাদের সঙ্গে সব কথা বলা যায় না। তোমার বাবা-মায়ের উচিত ছিল তোমাকে ভালো কিছু বন্ধু-বান্ধব তৈরি করতে উৎসাহিত করা। এতে করে তোমার একাকিত্ব দূর হতো। তুমি সামাজিক দক্ষতা অর্জন করতে পারতে। তোমার বয়স উল্লেখ করোনি, তবে ধরে নিচ্ছি নিজের ভেতরে ইতিবাচক পরিবর্তন ঘটানোর উদ্যোগ নেওয়ার মতো মানসিক পরিপক্বতা তোমার আছে। তুমি একা একা না কেঁদে তোমার মনের কথাগুলো সুন্দরভাবে গুছিয়ে বাড়ির বড়দের বলতে শুরু করো। প্রথমে কথাগুলো তোমার নোটবইতে লিখে বেশ কয়েকবার অনুশীলন করো। যদি দেখো একটু একটু করে তুমি তোমার অধিকারগুলো প্রতিষ্ঠা করতে পারছ তাহলে নিজেই নিজেকে বলবে, এই তো আমি পেরেছি, কেমন? তোমার মাথাব্যথার কারণটি সম্পূর্ণ মানসিক। মানসিক চাপ কমানোর জন্য নিয়মিত শরীরচর্চা করতে পারো। মন ভালো রাখার জন্য প্রতিদিন খুব পছন্দের কিছু কাজ করবে। তুমি নিঃশ্বাস-প্রশ্বাসের একটি ব্যায়াম করতে পারো। বিছানায় শুয়ে কিংবা আরাম করে চেয়ারে বসে সমস্ত শরীর শিথিল করে নাক দিয়ে অনেক বড় করে শ্বাস নেবে, কয়েক সেকেন্ড ধরে রেখে তারপর ধীরে ধীরে মুখ দিয়ে ছাড়বে। এই ব্যায়াম খুব মনোযোগ দিয়ে আন্তরিকভাবে প্রতিদিন করলে তুমি উপকৃত হবে।