প্রায় ১০ লাখ প্রাণী ও উদ্ভিদ প্রজাতি বিলুপ্তির হুমকিতে আছে। পৃথিবীর চার ভাগের তিন ভাগ স্থলভূমি ও সামুদ্রিক পরিবেশের তিন ভাগের দুই ভাগই মানুষের কর্মকাণ্ডের কারণে পরিবর্তিত হচ্ছে। মাত্র ৩০ বছরের মধ্যে শহরগুলোর জনসংখ্যা বেড়ে প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। ৮৫ শতাংশেরও বেশি জলাভূমি গেছে হারিয়ে। আর এসবের প্রতিক্রিয়ায় বিলুপ্তির হুমকিতে পড়েছে পৃথিবীর সামগ্রিক প্রাণী ও উদ্ভিদকুল।
ইন্টারগভর্নমেন্টাল সায়েন্স-পলিসি প্ল্যাটফর্ম অন বায়োডাইভারসিটি অ্যান্ড ইকোসিস্টেম সার্ভিসেসের প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে। ৬ মে এই প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। ১৫ হাজার গবেষণাপত্রের সমন্বয়ে তৈরি ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পৃথিবীর ৪০ শতাংশেরও বেশি উভচর প্রাণী বিলুপ্ত হয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় আছে। এক-তৃতীয়াংশ সামুদ্রিক স্তন্যপায়ী প্রাণী, হাঙর ও কোরালও হারিয়ে যাওয়ার শঙ্কায় আছে। এমনকি ১০ শতাংশ কীটপতঙ্গও বিলুপ্তির দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে।
ব্রিটিশ সাময়িকী দ্য ইকোনমিস্টে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ব্যাকটেরিয়া, ফাঙ্গাস ও অ্যামিবার মতো এককোষী প্রাণীদের হিসাবের বাইরে রাখলে পৃথিবীতে প্রায় ৮০ লাখ প্রজাতির জীবজন্তু ও উদ্ভিদ আছে বলে একমত বিজ্ঞানীরা। ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অব ন্যাচারের (আইইউসিএন) তথ্য ব্যবহার করে এই প্রতিবেদনে গবেষকেরা কত শতাংশ জীবজন্তু ও উদ্ভিদ বিলুপ্তির শঙ্কায় আছে, সেটিই দেখাতে চেয়েছেন।
আইইউসিএনের আশঙ্কা, প্রায় চার ভাগের এক ভাগ প্রজাতি বিলুপ্ত হয়ে যাওয়ার শঙ্কায় আছে। অনেক মেরুদণ্ডী প্রজাতি থাকলেও বিলুপ্তির শঙ্কায় থাকা প্রজাতিদের মধ্যে বেশির ভাগই অমেরুদণ্ডী। সে তুলনায় কীটপতঙ্গের বিলুপ্ত হওয়ার হার অনেকটা কম বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা। পৃথিবীতে থাকা ৮০ লাখ জীবজন্তু ও উদ্ভিদের প্রজাতির মধ্যে প্রায় ৫৫ লাখ প্রজাতিই পতঙ্গ। এই ৫৫ লাখের মধ্যে ১০ শতাংশ বা সাড়ে ৫ লাখ প্রজাতির পতঙ্গ বিলুপ্তির মুখে আছে বলে ওই প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।