অনলাইনে ফ্রিল্যান্স কাজের উপযোগী বিভিন্ন তথ্য পাওয়া যায়
অনলাইনে ফ্রিল্যান্স কাজের উপযোগী বিভিন্ন তথ্য পাওয়া যায়

ফ্রিল্যান্সিং প্রশিক্ষণ

বিনা মূল্যে ফ্রিল্যান্স কাজ শিখবেন যেভাবে

ফ্রিল্যান্স আউটসোর্সিং। এই মুক্ত পেশায় তরুণ প্রজন্মের আগ্রহ বেশি। ঘরে বসে বিদেশের তথ্যপ্রযুক্তির নানা কাজ করে আয় করেন ফ্রিল্যান্সার বা মুক্ত পেশাজীবীরা। কিন্তু শুরুটা কীভাবে করতে হবে, ফ্রিল্যান্সার হতে কী জানতে হবে—এ নিয়ে দ্বিধা অনেকের। অনেকে সঠিক দিকনির্দেশনাও পান না। ফ্রিল্যান্সিং করতে চান, এ ব্যাপারে আগ্রহ আছে—এমন পাঠকদের জন্য শুরু হলো ধারাবাহিক প্রশিক্ষণ ‘ফ্রিল্যান্সিং যেভাবে।’ আজ থাকছে ষষ্ঠ পর্ব।

পর্ব-৬

দুটি উপায়ে ফ্রিল্যান্স কাজ শেখা যায়—একটি অনলাইনে বিনা মূল্যে, অপরটি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে অর্থের বিনিময়ে কোর্স করে। এর পাশাপাশি অনলাইনেও অর্থের বিনিময়ে ফ্রিল্যান্স প্রশিক্ষণের সুযোগ মিলে থাকে। আজকে আমরা অনলাইনে বিনা মূল্যে ফ্রিল্যান্স প্রশিক্ষণের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করব।

আগের পর্বগুলো পড়ে আপনাদের ফ্রিল্যান্স কাজের ধরন সম্পর্কে বেশ ভালো ধারণা হয়েছে নিশ্চয়ই। অনেকেই ফ্রিল্যান্সিং কাজ শুরু করতে চাচ্ছেন। তবে কোন কাজ করবেন বা কীভাবে কাজ শিখলে সফল হওয়া যাবে, তা নিয়ে চিন্তায় রয়েছেন তারা। এ ক্ষেত্রে প্রথমেই মনস্থির করে নিন আপনি কোন ধরনের (গ্রাফিকস ডিজাইন, ওয়েব ডেভেলপমেন্ট, ডিজিটাল মার্কেটিং) কাজ করতে চাচ্ছেন। এবার নির্দিষ্ট বিষয়ে কাজ শুরুর আগে নিজেকে প্রশ্ন করুন, অনলাইনে কারও সাহায্য ছাড়া প্রশিক্ষণ নিয়ে আপনি শিখতে পারবেন কি না। যদি না পারেন, তবে আপনার আশপাশে থাকা কোনো প্রশিক্ষণ কেন্দ্র থেকে সরাসরি প্রশিক্ষণ নিতে হবে। চাইলে আপনার পরিচিত কোনো ফ্রিল্যান্সারের সহায়তাও নিতে পারেন।

বর্তমানে অনলাইনে খুঁজলেই ফ্রিল্যান্সকাজের উপযোগী বিভিন্ন তথ্য পাওয়া যায়। আর তাই আপনি যে বিষয়ে কাজ শিখতে আগ্রহী, সে বিষয়ে প্রাথমিক ধারণা নেওয়ার জন্য গুগল বা ইউটিউবে সার্চ করতে পারেন। প্রথম সপ্তাহে শুধু সার্চ করেই বিভিন্ন তথ্য জানার চেষ্টা করুন। আপনি যদি গ্রাফিকস ডিজাইন, ওয়েব ডেভেলপমেন্ট, ডিজিটাল মার্কেটিং শুরু থেকে শিখতে চান তবে প্রাথমিক পর্যায়ের কোর্সগুলো করার চেষ্টা করুন। যদি কিছুটা কাজ পারেন তবে মধ্যম পর্যায়ের কোর্সগুলো করতে হবে। অনলাইনে প্রয়োজনীয় তথ্য খোঁজার জন্য নিচের পদ্ধতিগুলো মেনে চললে উপকার পাবেন।

১. অনলাইনে সার্চ করার সময় গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেলেই সেগুলো বুকমার্ক বা সংরক্ষণ করে রাখতে হবে। এ জন্য ৫ থেকে ১০টি ওয়েবসাইট খুঁজে বের করুন, যেখানে আপনার নির্বাচিত বিষয়ে বিভিন্ন তথ্য রয়েছে এবং সেগুলো নিয়মিত হালনাগাদ করা হয়।
২. ওয়েবসাইটের পাশাপাশি ৫ থেকে ১০টি ইউটিউব চ্যানেল খুঁজে বের করুন, যেখানে আপনার নির্বাচিত বিষয় প্রশিক্ষণের ভিডিও রয়েছে।
৩. ফেসবুক বা অন্য কোনো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আপনার পছন্দের বিষয়ে চালু থাকা ২ থেকে ৫টি গ্রুপের সঙ্গে নিয়মিত যুক্ত থাকতে হবে আপনাকে। এতে বর্তমানে কোন ধরনের কাজের চাহিদা রয়েছে, সে বিষয়ে ধারণা পাওয়া সহজ হবে।
৪. অনলাইনে প্রায় সব বিষয়েই বিনা মূল্যে উন্নত মানের কোর্স করা যায়। আর তাই আপনার পছন্দের বিষয়ে ২ থেকে ৩টা কোর্সে নিবন্ধন করে প্রশিক্ষণ নিতে হবে।
৫. অনলাইনে প্রায় সব বিষয়েই বিনা মূল্যে ই-বুক পাওয়া যায়। অনলাইনে প্রশিক্ষণের পাশাপাশি আপনার পছন্দের বিষয়ে

ই-বুকগুলো কম্পিউটার বা ল্যাপটপে ডাউনলোড করে নিয়মিত পড়তে হবে।
কমপক্ষে এক থেকে তিন সপ্তাহ পর্যন্ত আপনার নির্বাচিত ওয়েবসাইট, ইউটিউব চ্যানেল বা ই-বুকগুলোর বিভিন্ন তথ্য ভালোভাবে আয়ত্তে আনতে হবে। তবে সবকিছুই যে আপনাকে শিখতে হবে, তা কিন্তু নয়। প্রাথমিক ধারণা নেওয়ার পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ তথ্যগুলো আলাদাভাবে লিখে রাখুন, যা পরবর্তী সময়ে আপনাকে সহায়তা করবে।

এক থেকে তিন সপ্তাহ প্রশিক্ষণ নেওয়ার পর আপনার নির্বাচিত ওয়েবসাইট, ইউটিউব চ্যানেল বা ই-বুকগুলোর গুরুত্বপূর্ণ তথ্যগুলো এক জায়গায় সংরক্ষণ করে নিজে নিজেই বিভিন্ন কাজ করতে শুরু করুন। এবার আপনি যেসব কমিউনিটি গ্রুপে যুক্ত আছেন, সেখানে নিজের করা কাজগুলো পোস্ট করতে হবে। কাজের মান সম্পর্কে অন্যদের মতামত দেওয়ার অনুরোধ করলেই দেখবেন অনেকে আপনার করা কাজের বিভিন্ন সমস্যা তুলে ধরবে। ফলে নিজের কাজের সমস্যাগুলো অন্যদের কাছ থেকে জানা যাবে। এবার সমস্যাগুলো সমাধান করে আবারও একই কাজ করে গ্রুপগুলোত পোস্ট করুন। এভাবে ধীরে ধীরে আপনার কাজের সমস্যা কম হবে এবং মান উন্নত হবে।

আমাদের দেশে ফ্রিল্যান্স কাজ করা ব্যক্তিদের নিয়ে অনলাইনে অনেকগুলো কমিউনিটি গ্রুপ রয়েছে, যারা ফ্রিল্যান্সবিষয়ক বিভিন্ন কনটেন্ট, সমস্যা সমাধানের উপায় নিয়ে আলোচনার পাশাপাশি অনলাইনে লাইভ প্রশিক্ষণও দিয়ে থাকে। ফলে প্রয়োজনীয় তথ্য জানার পাশাপাশি কাজ করার সময় বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতা সম্পর্কেও ধারণা পাওয়া যায়। তবে একটা বিষয় মনে রাখতে হবে, আপনি যখন যে বিষয়েই নতুন তথ্য পাবেন, সেটা লিখে রাখতে হবে। পরবর্তী সময়ে এসব তথ্য আপনার দক্ষতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করবে।

লেখক: আপ ওয়ার্ক টপ রেটেড প্লাস ফ্রিল্যান্সার


পরের পর্ব: অর্থের বিনিময়ে ফ্রিল্যান্স কাজ শিখবেন যেভাবে