মার্কিন গোপন নজরদারির তথ্য ফাঁস করে হইচই ফেলে দেওয়া মার্কিন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার (সিআইএ) সাবেক কর্মী এডওয়ার্ড স্নোডেন এবার ফেসবুক ও ফেসবুকের মালিকানাধীন ইনস্টাগ্রামের বিরুদ্ধে নজরদারির অভিযোগ তুলেছেন। গত বৃহস্পতিবার এই দুটি প্ল্যাটফর্মের ওপর গোয়েন্দাগিরির অভিযোগ তুলে স্নোডেন করপোরেট নজরদারির বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালানোর পদ্ধতি দেখিয়ে দেওয়ার কথা বলেছেন। প্রযুক্তিবিষয়ক ওয়েবসাইট সিনেটের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
টুইটার ও ইনস্টাগ্রামের এক পোস্টে স্নোডেন বলেছেন, ‘সামনের সপ্তাহগুলোয় আমি ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রামের মতো সামাজিক যোগাযোগের সাইট কীভাবে নজরদারি করছে, তা ব্যাখ্যা করার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছি। এসব সাইট যাতে ব্যবহারকারীর তথ্য খুব বেশি জানতে না পারে, তার পদ্ধতিও দেখিয়ে দেব। যাঁরা এসব সাইট ব্যবহার করেন, তাঁরা খেয়াল রাখবেন।’
‘পারমানেন্ট রেকর্ড’ নামের একটি বই লিখেছেন স্নোডেন। এ বইয়ের ঘোষণা দেওয়ার পরপরই তিনি ফেসবুকের নজরদারির বিষয়ে অভিযোগ তুললেন। সেপ্টেম্বরে স্নোডেনের বইটি বাজারে আসবে।
স্নোডেন একসময় সিআইএ ও এনএসএর সঙ্গে ঠিকাদার হিসেবে কাজ করতেন। তথ্যপ্রযুক্তির ক্ষেত্রে অসাধারণ দক্ষতার অধিকারী স্নোডেন এনএসএর গোয়েন্দা নজরদারি কর্মসূচির বেআইনি কার্যকলাপ ধরে ফেলেন, নিজের কম্পিউটারে গোপনে কপি করে নেন এনএসএর বিপুল পরিমাণ তথ্য। ২০১৩ সালে তাঁর যোগাযোগ ঘটে আমেরিকান আইনজীবী ও সাংবাদিক গ্লেন গ্রিনওয়াল্ডের সঙ্গে, যিনি তখন ব্রিটেনের দৈনিক গার্ডিয়ানের জন্য লিখতেন।
স্নোডেন সে সময় কর্মরত ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের হাওয়াই দ্বীপে, আমেরিকান নিরাপত্তা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান বাজ অ্যালান হ্যামিল্টনের কর্মী হিসেবে, যে প্রতিষ্ঠানটি ছিল এনএসএর ঠিকাদার। এনএসএর ‘টপ সিক্রেট’ শ্রেণির বিপুল পরিমাণ তথ্যের ভান্ডার দৈনিক গার্ডিয়ানের হাতে তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন স্নোডেন। তাঁর দেওয়া প্রামাণ্য তথ্যের ভিত্তিতে ২০১৩ সালের জুন মাসে গ্লেন গ্রিনওয়াল্ড গার্ডিয়ানে লিখতে শুরু করেন ধারাবাহিক প্রতিবেদন। আমেরিকান শাসকদের মাথায় বাজ পড়ে, ক্রোধে ফেটে পড়ে হোয়াইট হাউস। এডওয়ার্ড স্নোডেন হন তাঁর স্বদেশের সরকারের কাছে ‘মোস্ট ওয়ান্টেড আমেরিকান’। তাঁর বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক হুলিয়া জারি করে আমেরিকার সরকার।