অনেকেই কিশোর বয়সী সন্তানের ক্ষেত্রে ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ব্যবহার নিয়ে চিন্তায় থাকেন। অনেকেই অতিরিক্ত সময় ধরে সামাজিক যোগাযোগের সাইট ব্যবহারে আসক্ত হয়ে পড়ে। সন্তানকে যথাযথভাবে গড়ে তুলতে তাকে শৃঙ্খলা শেখানোর ভূমিকা খুব গুরুত্বপূর্ণ। তবে শৃঙ্খলা মানেই কিন্তু শুধু বিধিনিষেধ নয়। তার সঙ্গে কোনো বিষয় নিয়ে খোলামেলা আলোচনা ও তাকে বুঝিয়ে বললে ভালো ফল পাওয়া যায়।
সাম্প্রতিক এক গবেষণায় দেখা গেছে, ছয় বছর বয়সী অনেক শিশুর হাতেই এখন স্মার্টফোন বা ট্যাবলেট পিসি চলে যাচ্ছে। অনলাইনে শিশুদের নিরাপত্তা বিষয়ে শেখানোর জন্য অভিভাবক হিসেবে ভূমিকা নিতে হবে। জেনে নিন এ–বিষয়ক কয়েকটি পরামর্শ:
পোস্ট করার আগে ভাবুন
ফেসবুকে কোনো কিছু পোস্ট করার আগে নিজে সতর্ক থাকুন। আপনার সন্তানও যাতে কোনো সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে আপত্তিকর কিছু পোস্ট না করে, সে বিষয়ে খেয়াল রাখুন। ফেসবুকে কিছু শেয়ার করার আগে তাদের সঙ্গে কথা বলতে পারে। কোনো পোস্ট ভুল ব্যাখ্যা দিচ্ছে কি না, বা কাউকে অপমান বা আঘাত করছে কি না, সে বিষয়ে অভিভাবক হিসেবে সতর্ক থাকা উচিত।
আদর্শ মডেল হন
কোনো কিছু পরামর্শ দেওয়ার আগে তা নিজেকে পালন করে দেখাতে হয়। অভিভাবক হিসেবে আগে নিজে দৃষ্টান্ত স্থাপন করুন। প্রবাদে বলা হয়—তুমি যা বলবে তাই করো, যা করবে না তা বলো না। এ কথাটি অনলাইন এবং অফলাইন উভয় ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। আপনি যদি সন্তানকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারের বিষয়ে সময় ঠিক করে দিতে চান, তাহলে আপনাকেও তা মেনে চলতে হবে।
গুরুত্বপূর্ণ মূহূর্তগুলো বেছে নেওয়া
সন্তানের হাতে মোবাইল তুলে দেওয়ার আগে তার সঙ্গে এর ব্যবহার সম্পর্কে আলোচনা করে নিন। আপনার সন্তান যখন ফেসবুক এবং অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে যোগ দেবে, তখন নিরাপদ শেয়ারিং নিয়ে তার সঙ্গে খোলামেলা আলোচনা করুন।
নিয়ন্ত্রণ শেখান
ফেসবুকের যেকোনো পোস্টের ওপরে ডান পাশে যে তিনটি ডট আছে, এতে ক্লিক করে আপনার সন্তান কীভাবে তাদের নিউজ ফিড নিয়ন্ত্রণ করতে পারে, সে বিষয়টি তাদের দেখিয়ে দিতে পারেন। এখান থেকে যদি পোস্ট বিরক্তির কারণ হয় তবে তা আড়াল করা যায়। যদি নির্দিষ্ট কোনো ব্যক্তির পোস্ট দেখতে না চায়, তারা সে ব্যক্তিকে আনফলো বা স্নোজ করার সুযোগ রয়েছে। হয়রানিমূলক কোনো পোস্ট দেখলে তার বিরুদ্ধে ফিডব্যাক দেওয়া বা রিপোর্টও করার মতো বিষয়গুলো নিজে শিখতে হবে ও সন্তানকে শেখাতে হবে।
লগইন পর্যালোচনা
ফেসবুক ব্যবহারকারীকে অনেক সময় বিভিন্ন ধরনের যন্ত্র যেমন ডেস্কটপ, ল্যাপটপ, ট্যাব, স্মার্টফোন প্রভৃতি থেকে ফেসবুকে ঢুকতে হয়। আবার একেকবার একেক রকম ব্রাউজার ব্যবহার করতে হয়। সেটিংসে গিয়ে সিকিউরিটিতে ঢুকে হোয়্যার ইউ আর লগড ইন দেখুন। সম্প্রতি কোথা থেকে ফেসবুকে লগইন করা হয়েছে, তা দেখতে পাবেন। এখান থেকে ডিভাইসের নাম ও সম্ভাব্য অবস্থানও দেখতে পাবেন। আপনার বা আপনার সন্তানের অ্যাকাউন্টে অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে কেউ ঢুকেছে কি না, তা-ও দেখতে পাবেন। সন্দেহজনক কিছু দেখলে দ্রুত তা মুছে দিন এবং ফেসবুকের পাসওয়ার্ড বদলে জটিল পাসওয়ার্ড দিন।