ফাইভ-জি প্রযুক্তি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের চাপের মুখে পড়েছে চীনা প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান হুয়াওয়ে। যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের সন্তুষ্ট করতে ফাইভ-জি প্রযুক্তি নিয়ে দুর্দান্ত এক অফার দিলেন হুয়াওয়ের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রেন ঝেংফেই। তিনি বলেছেন, ফাইভ-জি প্রযুক্তির ক্রেতারা প্রয়োজনে হুয়াওয়ের সফটওয়্যার কোড বদলে ফেলতে পারবেন। হুয়াওয়ের কোনো সংশ্লিষ্টতা ছাড়াই এ প্রযুক্তিতে কোনো ত্রুটি বা ব্যাকডোর আছে কি না, তা পরীক্ষা করতে পারবেন। খবর বিবিসির।
যুক্তরাষ্ট্র ও অস্ট্রেলিয়া তাদের নেটওয়ার্কে হুয়াওয়ের যন্ত্রপাতি ব্যবহার নিষিদ্ধ করেছে। যুক্তরাজ্য এ ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়ার অপেক্ষায়।
হুয়াওয়ে বরাবরই চীন সরকারের পক্ষ হয়ে কোনো দেশের ওপর নজরদারি বা গোয়েন্দাগিরি করার অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে। তাদের দাবি, হুয়াওয়ে মূলত প্রাইভেট এন্টারপ্রাইজ প্রতিষ্ঠানের কর্মীরাই এটার মালিক।
এর আগে হুয়াওয়ের স্বাধীন ব্যবসা নিয়ে সন্দেহ পোষণ করা এক বিশেষজ্ঞ হুয়াওয়ের নতুন অফারটিকে দুর্দান্ত বলে মন্তব্য করেছেন।
ইকোনমিস্ট ও নিউইয়র্ক টাইমসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে নতুন অফারটির ঘোষণা দেন রেন। ফলে চুক্তি অনুযায়ী পশ্চিমা প্রতিষ্ঠানগুলো চাইলে হুয়াওয়ের পণ্য ব্যবহার করে প্রতিযোগিতামূলক ফাইভ-জি প্রযুক্তি তৈরি করতে পারবে। এতে তারা হুয়াওয়ের ফাইভ-জি পেটেন্ট, লাইসেন্স, কোড ও কারিগরি ব্লুপ্রিন্ট ব্যবহারের সুযোগ পাবে।
রেন নিউইয়র্ক টাইমসকে বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে ফাইভ-জি শেয়ারিংয়ের জন্য তাঁরা প্রস্তুত। এতে তাঁরা নিজেদের ফাইভ-জি শিল্প তৈরি করতে পারবেন। এতে চীন, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের মধ্যে ভারসাম্য আসবে।
ইকোনমিস্টকে হুয়াওয়ের প্রধান নির্বাহী বলেছেন, হুয়াওয়ের টিকে থাকার জন্য ফাইভ-জি প্রযুক্তির ভারসাম্যপূর্ণ বিভাজন হওয়া প্রয়োজন।
হুয়াওয়ের একজন কর্মকর্তা এ প্রস্তাবকে প্রকৃত বলে নিশ্চিত করেছেন।
বর্তমানে ইউরোপে হুয়াওয়ের বিকল্প হিসেবে নকিয়া ও এরিকসনকে বেছে নেওয়ার সুযোগ রয়েছে। এ ছাড়া দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতিষ্ঠান স্যামসাং ও চীনের জেডটিই ফাইভ-জি প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করছে।
যুক্তরাষ্ট্রে সিসকো, ডেল ইএমসি, হিউলেট প্যাকার্ডের মতো প্রতিষ্ঠান ফাইভ-জি প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করলেও তাদের পক্ষে অবকাঠামোগত বা যন্ত্রপাতি উন্নয়ন করা সম্ভব হয়নি।
লাইসেন্স ফি না নিলেও হুয়াওয়ের লাভ হতে পারে। কারণ, যুক্তরাষ্ট্র তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়ে তারা সেখান থেকে যন্ত্রপাতি কিনতে পারবে। এ ছাড়া হুয়াওয়ের অ্যান্ড্রয়েড ফোনের লাইসেন্স আটকে রয়েছে। হুয়াওয়ে নিষেধাজ্ঞা কাটাতে পারলে সবখানে তাদের ফাইভ-জি প্রযুক্তির বিস্তৃতি ঘটবে।