ফ্রিল্যান্স আউটসোর্সিং। এই মুক্ত পেশায় তরুণ প্রজন্মের আগ্রহ বেশি। ঘরে বসে বিদেশের তথ্যপ্রযুক্তির নানা কাজ করে আয় করেন ফ্রিল্যান্সার বা মুক্ত পেশাজীবীরা। কিন্তু শুরুটা কীভাবে করতে হবে, ফ্রিল্যান্সার হতে কী জানতে হবে—এ নিয়ে দ্বিধা অনেকের। অনেকে সঠিক দিকনির্দেশনাও পান না। ফ্রিল্যান্সিং করতে চান, এ ব্যাপারে আগ্রহ আছে, এমন পাঠকদের জন্য শুরু হলো ধারাবাহিক প্রশিক্ষণ ‘ফ্রিল্যান্সিং যেভাবে’। আজ থাকছে ১২তম পর্ব।
বাংলাদেশে জনপ্রিয় মার্কেটপ্লেসগুলোর মধ্যে ফাইভার অন্যতম। আর তাই প্রতিদিনই বাংলাদেশ থেকে অনেকে মার্কেটপ্লেসটিতে অ্যাকাউন্ট খুলছেন। তবে অনেকেই সঠিক পদ্ধতিতে অ্যাকাউন্ট না খোলায় মার্কেটপ্লেসটিতে ভালোভাবে কাজ করতে পারেন না। আজকে আমরা ফাইভার মার্কেটপ্লেসের জন্য সঠিক নিয়মে অ্যাকাউন্ট খোলার কৌশল নিয়ে আলোচনা করব।
ফাইভার (fiverr.com) মার্কেটপ্লেসে প্রবেশ করে প্রথমেই ওয়েবসাইটের ডান দিকের ওপরে থাকা ‘Become a Seller’ বাটনে ক্লিক করে করতে হবে। এখানে ই-মেইল ঠিকানা, ইউনিক ইউজার নাম এবং পাসওয়ার্ড দিয়ে জয়েন বাটনে ক্লিক করতে হবে। এবার আপনার দেওয়া ই-মেইল ঠিকানা যাচাই করতে ফাইভার একটি ই-মেইল পাঠাবে। পাঠানো ই-মেইল বার্তায় ক্লিক করলেই আপনার দেওয়া ই-মেইল ঠিকানা যাচাই হয়ে যাবে। এবার ফাইবার প্রোফাইলের অ্যাকাউন্ট সেকশনে প্রবেশ করে আপনার নাম (জাতীয় পরিচয়পত্রে থাকা নাম), টেলিফোন নম্বর দেওয়ার পাশাপাশি বেশ কিছু প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে। টেলিফোন নম্বর যাচাই হয়ে গেলে স্টার্ট সেলিং বাটনে ক্লিক করে নিচের তথ্যগুলো বিস্তারিতভাবে লিখতে হবে।
ফাইভারের অ্যাকাউন্ট খোলার জন্য ‘পার্সোনাল ইনফো’ বিভাগে নিজের নাম, প্রোফাইল ছবি, নিজের এবং কাজের বিস্তারিত বর্ণনা, ভাষা ও লেভেল নির্বাচন করে কনটিনিউ অপশন নির্বাচন করতে হবে। ভাষা নির্বাচনের সময় অবশ্যই ইংরেজি নির্বাচন করতে হবে। চাইলে ইংরেজির পাশাপাশি বাংলাসহ একাধিক ভাষাও নির্বাচন করা যাবে।
পাসপোর্ট আকারের, সাধারণ ভঙ্গি ও বাঁকাভাবে দাঁড়ানো ছবি দেওয়ার বদলে ফ্রন্ট ফেসিং বা সামনে থেকে পুরো চেহারা ভালোভাবে দেখা যাওয়া ছবি দিতে হবে। এ ক্ষেত্রে ক্যামেরার দিকে সুন্দর করে তাকানো হালকা হাসিমুখের ছবি দেওয়ার চেষ্টা করবেন।
ফাইভারে অ্যাকাউন্ট খোলার জন্য জীবনী বিভাগটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, ক্লায়েন্টরা আপনার প্রোফাইলে প্রবেশ করে আপনার সম্পর্কে কিছু জানতে এই বিভাগে প্রবেশ করবে। আর তাই আপনার ব্যক্তিগত জীবন, কাজ ও অভিজ্ঞতা সম্পর্কে সব তথ্য ভালোভাবে লিখতে হবে। এ জন্য বিভাগটিতে আপনার কাজের দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা তুলে ধরার পাশাপাশি ক্লায়েন্টরা কেন আপনাকে কাজ দেবে, তার একটি বিবরণ লিখতে হবে। আপনার করা কাজের উল্লেখ্যযোগ্য তথ্যও যুক্ত করতে পারেন।
জীবনী লেখার পরবর্তী ধাপে প্রফেশনাল ইনফো বিভাগে আপনার পেশা নির্বাচন করতে হবে। আপনি কত বছর এই পেশায় কাজ করছেন, তা জানানোর পাশাপাশি পেশাসংশ্লিষ্ট বিষয়ে আপনার দুই থেকে পাঁচটি দক্ষতা উল্লেখ করতে হবে। এরপর স্কিলস বিভাগে আপনি কোন কোন বিষয়ে দক্ষ, তা উল্লেখ করে দক্ষতার লেভেলও জানাতে হবে।
শিক্ষা বিভাগে আপনার শিক্ষাগত যোগ্যতার বিস্তারিত তথ্য জানাতে হবে। এ জন্য চাইলে শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ জমা দিতে পারেন। এবার কনটিনিউ বাটনে চাপ দিলেই আসবে লিংকড অ্যাকাউন্টস বিভাগ। এখানে আপনি চাইলে আপনার ফেসবুক, টুইটার ইত্যাদি অ্যাকাউন্ট যুক্ত করতে পারবেন। এরপর কনটিনিউ বাটনে চাপ দিলে দেখা যাবে অ্যাকাউন্ট সিকিউরিটি বিভাগ। আপনার ই–মেইলে এবং টেলিফোন নম্বর যাচাই করা থাকায় এখানে আপনাকে আর বাড়তি কোনো তথ্য দিতে হবে না। এবার কনটিনিউ এবং গিগ তৈরির বাটনে ক্লিক করলেই ফাইভারে অ্যাকাউন্ট তৈরির পাশাপাশি গিগ তৈরির পেজ চালু হবে।
লেখক: আপওয়ার্ক টপ রেটেড প্লাস ফ্রিল্যান্সার
পরের পর্ব: ফাইভারে গিগ তৈরির পদ্ধতি