পাঁচভাইয়ের আপ্যায়ন

ভিড় এড়িয়ে বসে পড়ুন পাঁচভাইয়ে আর ফরমাশ দিন পছন্দের খাবারের। ছবি: লেখক
ভিড় এড়িয়ে বসে পড়ুন পাঁচভাইয়ে আর ফরমাশ দিন পছন্দের খাবারের। ছবি: লেখক

সিলেটে এসে নদী, চা-বাগান দেখা শেষে খাবেন কোথায়? একবাক্যে সবাই বলবেন একটা নাম—পাঁচভাই রেস্টুরেন্ট। ‘দুই ভাই, চার ভাই, ছয় ভাই মিলে হোটেল করার যেন হিড়িক পড়েছে। সিলেটে এখন ভাই রেস্তোরাঁর জয়-জয়কার।’ সিলেটে বসে কথা হচ্ছিল বিনয় ভদ্রের সঙ্গে। ‘এর শুরুটা করেছিল পাঁচভাই রেস্তোরাঁ। সেই থেকে এখন পর্যন্ত সিলেটে ভাই নামে মোটামুটি বেশ কয়েকটা হোটেল চালু হলেও, অন্যান্য ভায়েরা পাঁচভাইয়ের ধারে-কাছেও যেতে পারেনি।’
তাঁর সঙ্গে রিকশায় চড়ে রওনা দিলাম চোখে দেখা আর চেখে দেখা দুই উদ্দেশ্যে।

শহরের যানজট পেছনে ফেলে এ গলি ও গলি করে চলে এলাম দাঁড়িয়া পাড়ার মোড়ের পাঁচভাই রেস্তোরাঁয়। বেশ বড় সাইনবোর্ডে লেখা রেস্তোরাঁর নাম। ভেতরে ঢুকে চোখ ছানাবড়া। মহাযজ্ঞ চলছে যেন। ডান দিকে নানা রকম কাবাব আর ভাজাভুজির আয়োজন। আর একটু সামনের দিকে লাচ্ছি-জুসের কারবার। ভোজনরসিকদের ভিড় লেগেই থাকে। খাবারের টেবিল পেতে ছোটখাটো লাইনও হয়ে যাচ্ছে! একটা টেবিল খালি হতেই আমরা সেটাতে বসে পড়ি। দারুণ তৃপ্তি সহকারে ভূরিভোজের পর খাবার শেষ করে হোটেল মালিক রফিক মিয়ার সঙ্গে আলাপ জমাই।

ভিড় এড়িয়ে বসে পড়ুন পাঁচভাইয়ে আর ফরমাশ দিন পছন্দের খাবারের। ছবি: লেখক

 

‘আজ থেকে সাত বছর আগে জিন্দাবাজার এলাকায় একটা মেসের মতো ঘরে নামবিহীনভাবে চলত একটি হোটেল। বিক্রি করতাম ভাত, ভর্তা, সবজি, ডাল আর মাছ-মাংস। কর দিতাম তাই নাম দিতে হয়েছিল। আমরা পাঁচ ভাই মিলে মেস চালাতাম, তাই কাগজে নাম দিলাম পাঁচভাই। সে-ই শুরু, আর পেছন ফিরে তাকাতে হয় নাই। গত সাড়ে তিন বছর যাবত্ এখানে দাঁড়িয়া পাড়ার মোড়ে আমরা হোটেল ব্যবসা চালিয়ে আসছি। খাবারের মান আর সহনীয় মূল্য আমাদের জনপ্রিয়তার মূল কারণ।’ বললেন রফিক মিয়া।

তাঁর থেকেই জানলাম, কেউ ৬৫ টাকার মুরগির মাংস নিলে ডাল-ভাত যত ইচ্ছে খেতে পারেন বিনা মূল্যে। এ ছাড়া এখানে মাত্র ৩০ টাকায় পেটপুরে খাওয়ার ব্যবস্থা আছে। মেনু হচ্ছে বিভিন্ন রকম ভর্তা, ডাল, ভাজি, সবজি। তা ছাড়া এখানে পাবেন বড় মাছ, ছোট মাছ, মুরগি, কবুতর, কোয়েল, হাঁস ও রাজহাঁস ভুনা। সঙ্গে আছে গরুর মাংস ও খিচুড়িসহ নানা পদের খাবার। স্বাদবদল চাইলে চালের রুটি থেকে শুরু করে কাচ্চি বিরিয়ানি, স্যুপ, নেহারি, বিভিন্ন প্রকারের ভর্তা-ভাজি, লাচ্ছি, জুস, কাবাব, টিকিয়াসহ নানান খাবারের পসরা তো আছেই।
সব শেষে রফিক মিয়ার ভাষায় বলি, ‘গরিব-ধনী, রিকশাওয়ালাসহ সবে খাইতে পারে। মোট কতা ঐছে পাঁচভাই হুটেলে খাইতে আইয়া কেউ নিরাশ হোবেন না।’