অ্যাপলপ্রেমীদের জন্য সুখবর। মঙ্গলবার নতুন আইফোন, আইপ্যাড, ডেস্কটপ কম্পিউটারসহ বিভিন্ন পণ্য প্রদর্শন করেছে অ্যাপল। যুক্তরাষ্ট্রে অ্যাপলের নিজ কার্যালয়ে আয়োজিত ‘পিক পারফরম্যান্স’ অনুষ্ঠানে পণ্যগুলো উন্মোচন করেন প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) টিম কুক। অ্যাপলের নতুন পণ্যগুলোর বিস্তারিত তথ্য নিচে দেওয়া হলো—
আইফোন কিনতে চান অনেকেই, কিন্তু দাম বেশি হওয়ায় ইচ্ছা থাকলেও তা কেনা হয়ে ওঠে না। বিষয়টি মাথায় রেখে এবার সাশ্রয়ী মূল্যে নতুন আইফোন তৈরি করেছে অ্যাপল। আইফোন এসই মডেলের নতুন আইফোনটিতে রয়েছে শক্তিশালী এ১৫ বায়োনিক প্রসেসর। ফলে এটি ‘আইফোন ৮’ মডেলের তুলনায় প্রায় ২৬ গুণ দ্রুত কাজ করতে পারে। আইওএস ১৫ অপারেটিং সিস্টেমে চলা নতুন আইফোনটি ফাইভজি প্রযুক্তি সমর্থন করলেও স্ক্রিনের আকার তুলনামূলক কম, মাত্র ৪ দশমিক ৭ ইঞ্চি। এতে রেটিনা ডিসপ্লে ব্যবহার করায় আইফোন ১৩ বা আইফোন ১৩ প্রো মডেলের মতোই উন্নত রেজল্যুশনে ছবি বা ভিডিও দেখা যাবে। রয়েছে শক্তিশালী ব্যাটারির সুবিধাও। ফলে আইফোন এসই কাজে লাগিয়ে ১৫ ঘণ্টা পর্যন্ত ভিডিও দেখা বা ৫০ ঘণ্টা পর্যন্ত গান শোনা যাবে।
আইফোন এসই মডেলের আইফোনটির সামনে–পেছনে রয়েছে ৮ ও ১২ মেগাপিক্সেলের ক্যামেরা। ক্যামেরার ক্ষমতা কম হলেও এতে ডিপফিউশন প্রযুক্তি ও এইচডিআর সুবিধা থাকায় স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভালোমানের ছবি তোলার পাশাপাশি দেখাও যায়। পানিরোধক ও টাচ আইডি সেন্সর সুবিধার আইফোনটিতে ওয়্যারলেস চার্জিং প্রযুক্তি থাকায় দ্রুত চার্জ হয়। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আইফোনটি পাওয়া যাবে ১৮ মার্চ থেকে। মিডনাইট, স্টারলাইট ও লাল রঙে তৈরি আইফোনটির ধারণক্ষমতা ৬৪ গিগাবাইট। কিনতে গুনতে হবে ৪২৯ ডলার।
এমআই প্রসেসরে চলা ফাইভজি প্রযুক্তিনির্ভর আইপ্যাড এয়ার দুটি সংস্করণে পাওয়া যাবে। একটিতে শুধু ওয়াইফাইয়ের মাধ্যমে ইন্টারনেট ব্যবহারের সুযোগ মেলে। অন্যটিতে ওয়াইফাই ও সেলুলার উভয় সংযোগ কাজে লাগিয়েই ইন্টারনেট ব্যবহার করা যায়। ১০ দশমিক ৯ ইঞ্চি স্ক্রিনের আইপ্যাডটিতে আট কোরের জিপিইউ সুবিধা থাকায় আগের সংস্করণের তুলনায় দ্রুত কাজ করে। আইপ্যাডটির উভয় দিকেই রয়েছে ১২ মেগাপিক্সেলের ক্যামেরা।
সেন্টার স্টেজ সুবিধা থাকায় ভিডিও কলের সময় স্বয়ংক্রিয়ভাবে ফ্রেম ঠিক করে নেবে আইপ্যাডটি। ধূসর, গোলাপি, বেগুনি, নীল ও রুপালি রঙে বাজারে আসতে যাওয়া আইপ্যাডটির ধারণক্ষমতা ৬৪ ও ২৫৬ গিগাবাইট। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আইফোনটি পাওয়া যাবে ১৮ মার্চ থেকে। ওয়াইফাই সংস্করণের আইপ্যাডটির দাম ৫৯৯ ডলার এবং ওয়াইফাই ও সেলুলার সংস্করণটির দাম ৭৪৯ ডলার।
ম্যাক স্টুডিও নামের ডেস্কটপ কম্পিউটারটিতে ব্যবহার করা হয়েছে এমআই ম্যাক্স ও এমআই আলট্রা প্রসেসর। ৮ টেরাবাইট ধারণক্ষমতার কম্পিউটারটির মেমোরি ৬৪ গিগাবাইট, যা ১২৮ গিগাবাইট পর্যন্ত বৃদ্ধি করা সম্ভব। ৪টি থান্ডারবোল্ট ৪ পোর্ট, ১০ গিগাবাইট ইথারনেট পোর্ট, ৩টি ইউএসবি-এ পোর্টসহ এইচডিএমআই ও এসডি কার্ড সুবিধা রয়েছে ডেস্কটপ কম্পিউটার দুটিতে। ম্যাক স্টুডিওর এমআই ম্যাক্স সংস্করণটির দাম ১ হাজার ৯৯৯ ডলার থেকে শুরু এবং এমআই আলট্রা সংস্করণটির দাম ৩ হাজার ৯৯৯ ডলার। ১৮ মার্চ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পাওয়া যাবে।
২৭ ইঞ্চি স্ক্রিনের স্টুডিও ডিসপ্লে মনিটরটি ফাইভকে প্রযুক্তির ছবি প্রদর্শন করতে পারে। অ্যাপলের হালনাগাদ প্রযুক্তির মনিটরটিতে ভিডিও কল করার জন্য ১২ মেগাপিক্সেলের ক্যামেরাও রয়েছে। থান্ডারবোল্ট ৩ এবং ইউএসবি সি পোর্ট সুবিধার মনিটরটি সহজেই ম্যাক কম্পিউটারের সঙ্গে যুক্ত করা যায়। মনিটরটির দাম ১ হাজার ৫৯৯ ডলার।
আইফোন, আইপ্যাড, ডেস্কটপ কম্পিউটারের পাশাপাশি এমআই আলট্রা মডেলের প্রসেসর প্রদর্শন করেছে অ্যাপল। শক্তিশালী প্রসেসরটি ব্যবহারের জন্য ডিভাইসে কমপক্ষে ১২৮ গিগাবাইট র্যাম প্রয়োজন হবে। এরই মধ্যে প্রসেসরটি নতুন ম্যাক স্টুডিও ট্যাবলেট কম্পিউটারে ব্যবহার করেছে প্রতিষ্ঠানটি।