বিশ্বজুড়ে স্মার্টফোন বিক্রি কমার খবরের মধ্যেই অ্যাপল দাবি করেছে, তাদের আইফোন বিক্রির স্বাভাবিক ধারা বজায় আছে। এটি তাদের কাছে বেশ আশ্চর্যের তথ্য। গতকাল মঙ্গলবার অ্যাপল এ তথ্য জানিয়ে বিনিয়োগকারীদের আশ্বস্ত করেছে যে এক দশকের বেশি পুরোনো তাদের স্মার্টফোনের উদ্ভাবনে এখনো প্রাণ আছে।
অ্যাপলের প্রান্তিক ফলাফল ওয়াল স্ট্রিটের পূর্বাভাসকে ছুঁয়ে ফেলেছে। ওয়াল স্ট্রিটের পূর্বাভাসে আইফোন বিক্রি নিয়ে শঙ্কার কথা বলা হয়েছিল। তবে কুপারটিনো-ভিত্তিক প্রতিষ্ঠানটি বলছে, শুধু গত প্রান্তিক নয়, বর্তমান প্রান্তিক নিয়েও তারা আশাবাদী। বেশির ভাগ অর্থনৈতিক বিশ্লেষকের ধারণার চেয়ে বেশি বিক্রি হবে আইফোন।
সাধারণত অ্যাপলের লাভের বেশির ভাগ আসে আইফোন বিক্রি থেকে। তবে বিশ্বজুড়ে সরবরাহকারীরা স্মার্টফোন চাহিদা কমার কথা বলছেন।
বিবিসির এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, জানুয়ারি থেকে মার্চ—এ তিন মাসে ৫ কোটি ২২ লাখ আইফোন বিক্রি করেছে অ্যাপল। ওয়াল স্ট্রিট পূর্বাভাস দিয়েছিল, ৫ কোটি ২৩ লাখ আইফোন বিক্রি হতে পারে এ প্রান্তিকে।
অ্যাপল মিউজিক, অ্যাপ স্টোরসহ অ্যাপলের সেবা মিলিয়ে মোট আয় ৯১০ কোটি মার্কিন ডলার ছাড়িয়েছে।
আইফোন বিক্রি বাড়ার ঘোষণার পর শেয়ারের দাম ৩ শতাংশ বাড়ে।
বাজার গবেষণা প্রতিষ্ঠান ক্যানালিসের বিশ্লেষক বেন স্ট্যানটোন বলেন, অ্যাপল তাদের আগে বিক্রি হওয়া শেয়ার পুনরায় কিনে নেওয়ার ঘোষণা দেওয়া শেয়ারের বিক্রি বেড়েছে। সব মিলিয়ে পুরো প্রান্তিক ছিল চমৎকার। অ্যাপল সবদিক থেকেই এ প্রান্তিকে বিজয়ী।
গত বছরের অ্যাপল আইফোন টেনসহ নতুন মডেলের স্মার্টফোন বাজারে ছাড়ে। এ বছরের প্রথম তিন মাসেই অ্যাপলের ফোন বিক্রি ৩ শতাংশ বেড়েছে আর ফোন থেকে আসা আয় বেড়েছে ১৪ শতাংশ। এর পেছনে আইফোনের দামি মডেলগুলো থেকে আসা মুনাফা কাজ করেছে।
অ্যাপলের ভাষ্য, এক হাজার মার্কিন ডলার দাম হলেও গত প্রান্তিকের প্রতি সপ্তাহে সবচেয়ে বেশি বিক্রি হওয়া মডেল ছিল আইফোন এক্স।
অবশ্য আইফোনের গড় দাম গত প্রান্তিকে কিছুটা কমেছে। বিশ্লেষকেরা আশা করেছিলেন, গড়ে ৭৪২ মার্কিন ডলার প্রতি আইফোন থেকে আসবে, কিন্তু তা পূরণ হয়নি। গড়ে আইফোনের দাম এসেছে ৭২৮ ডলার। এর কারণ হচ্ছে, অ্যাপল তাদের পুরোনো মডেলের গুদাম খালি করেছে।
আইফোনের চাহিদা কমার শঙ্কা উড়িয়ে দিয়েছেন অ্যাপলের প্রধান নির্বাহী টিম কুক। তাঁর ভাষ্য, এখনো লাখো মানুষের হাতে আইফোন পৌঁছাতে বাকি। তিনি বলেন, ‘আমরা মনে করি, একসময় বিক্রি হওয়া প্রতিটি ফোন হবে স্মার্টফোন। এটা আমাদের জন্য বিশাল সুযোগ।’