তরুণ প্রজন্মের ব্যাপক আগ্রহ

‘বেসিস সফটএক্সপো ২০১৯’ মেলায় একটি স্টলে রোবট দেখছে এক শিশু। গতকাল বিকেলে রাজধানীর বসুন্ধরার আন্তর্জাতিক কনভেনশন সেন্টারে। ছবি: প্রথম আলো
‘বেসিস সফটএক্সপো ২০১৯’ মেলায় একটি স্টলে রোবট দেখছে এক শিশু। গতকাল বিকেলে রাজধানীর বসুন্ধরার আন্তর্জাতিক কনভেনশন সেন্টারে।  ছবি: প্রথম আলো

বাংলাদেশের সফটওয়্যার খাতের উন্নতির বিষয়টি স্বচক্ষে দেখার সুযোগ পাওয়া গেল বেসিসের সফটএক্সপোতে। ‘প্রযুক্তিতেই সমৃদ্ধি’ স্লোগানে রাজধানীর আন্তর্জাতিক কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় (আইসিসিবি) তিন দিনের এ প্রযুক্তি মেলার পর্দা নামল গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে। এবারের আয়োজনে দেশের সফটওয়্যার ও তথ্যপ্রযুক্তি সেবা খাতের বিশেষ উন্নতির বিষয়টি দেখা যায়। মেলায় চারটি হলজুড়ে প্রযুক্তির সাম্প্রতিকতম উদ্ভাবন ও আইসিটিতে বাংলাদেশে সক্ষমতার নমুনা প্রদর্শিত হয়।

গতকাল মেলার শেষ দিন বিকেলে অনুষ্ঠিত হয় ‘বিজনেস লিডারশিপ মিট’। এতে বক্তারা দেশের সমৃদ্ধির জন্য সব ক্ষেত্রে প্রযুক্তির ব্যবহারের ওপর গুরুত্ব দেন। এ আয়োজনে প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিক সম্পর্কবিষয়ক উপদেষ্টা গওহর রিজভী বলেন, ‘প্রযুক্তি খাতে আমরা দেরি করে কাজ শুরু করলেও এখন জানি যে বিশ্বের প্রযুক্তিকে আমরা কোথায় নিয়ে যেতে পারি। আমরা প্রযুক্তিকে যেভাবে গ্রহণ করেছি, একইভাবে এর সব চ্যালেঞ্জ আমাদের গ্রহণ করতে হবে।’
এ সময় বক্তৃতা করেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. নজিবুর রহমান, ইউসেপ বাংলাদেশের চেয়ারপারসন পারভীন মাহমুদ, ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি ওসামা তাসির, ইনসেপ্টা লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুল মোক্তাদির প্রমুখ। 

মেলায় ১০টি আলাদা জোনে ২৫০টি প্রতিষ্ঠান তাদের পণ্য ও সেবা প্রদর্শন করেছে। সেখানে ৩০টির মতো সেমিনার, বিজনেস লিডারশিপ মিট, তথ্যপ্রযুক্তি পেশা নিয়ে আইটি ক্যারিয়ার ক্যাম্প, গেমিং ফেস্ট ইত্যাদি আয়োজন করা হয়। মেলার প্রথম দিন থেকেই নতুন সফটওয়্যার ও সেবা খাত নিয়ে তরুণ প্রজন্মের আগ্রহ দেখা যায়। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, ইন্টারনেট অব থিংস (আইওটি) ইত্যাদি নতুন নতুন প্রযুক্তির মাধ্যমে বিশ্বে যে চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের ধারা শুরু হয়েছে, সেই ধারায় বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠানগুলোর কার্যক্রমও দেখা গেছে মেলায়। প্রযুক্তির নতুন নতুন উদ্ভাবন, ব্যবহারের অভিজ্ঞতা নেওয়ার সুযোগ পেয়েছেন দর্শনার্থীরা। 
মেলায় অংশ নেওয়া সফটওয়্যার নির্মাতা প্রতিষ্ঠান প্রাইডসিসের উদ্যোক্তা মনোয়ার ইকবাল বলেন, ‘মেলায় ইআরপি সেবার পাশাপাশি বিগডেটা, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, ক্লাউড কম্পিউটিংসহ নানা সেবা আমরা প্রদর্শন করেছি।’ 
সফটএক্সপোতে প্রথমবার সফটওয়্যার নিয়ে হাজির হয়েছে ওয়ালটন। ডিজিসফট নামের ব্যবসায়িক সফটওয়্যার প্রদর্শন করেছে তারা। গৃহস্থালির কাজে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি ঘরের নিরাপত্তা দিতে গ্রামীণফোন ডেটাসফট সিস্টেমসের সঙ্গে ‘স্মার্ট হোম’ সল্যুশন তৈরি করেছে। তা এ মেলায়ই উদ্বোধন করা হলো। 

মেলার আইটি ক্যারিয়ার ক্যাম্পে দুই হাজারের বেশি শিক্ষার্থী অংশ নেন। তরুণদের পেশা নির্বাচন ও তথ্যপ্রযুক্তি খাতে তাঁদের সম্ভাবনার কথা উঠে আসে এবারের আয়োজনে। বেসিস সফটএক্সপোর আহ্বায়ক ফারহানা এ রহমান বলেন, ‘১২৪টির মতো বিটুবি (বিজনেস টু বিজনেস) ম্যাচমেকিং হয়েছে। দারুণ সাড়া পেয়েছি। তরুণদের অংশগ্রহণ ছিল চোখে পড়ার মতো। তিন দিনে প্রায় দেড় লাখ মানুষ এসেছেন।’
বেসিসের সভাপতি সৈয়দ আলমাস কবীর বলেন, এখানে আসা প্রস্তাবগুলো সরকারের কাছে তুলে ধরা হবে।
রাতে সমাপনী অনুষ্ঠানের মাধ্যমে শেষ হয় ১৫তম বেসিস সফটএক্সপো। এবারের আয়োজনে অংশীদার ছিল তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগ। 
সমাপনী অনুষ্ঠানে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, ‘আগামী দিনের প্রযুক্তির জন্য আমাদের প্রস্তুত হতে হবে।’