টুইটারে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার (সিইও) পদ থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন জ্যাক ডরসি। তাঁর জায়গায় আসছেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত পরাগ আগরওয়াল, যিনি এত দিন প্রতিষ্ঠানটির প্রধান প্রযুক্তি কর্মকর্তা (সিটিও) হিসেবে কর্মরত ছিলেন। পদত্যাগের ঘোষণায় পরাগের নেতৃত্বে অগাধ বিশ্বাস থাকার কথা জানিয়েছেন ডরসি।
প্রতিষ্ঠার ১৬ বছর পর কেন টুইটার সিইওর পদ ছাড়ছেন এবং কেন পরাগ সে কাজের উপযুক্ত, তা জানিয়ে ডরসি বলেন, ‘আমি টুইটার ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি, কারণ আমি বিশ্বাস করি, প্রতিষ্ঠানটি এর প্রতিষ্ঠাতাদের ছাড়িয়ে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত। টুইটারের সিইও হিসেবে পরাগের ওপর আমার গভীর আস্থা রয়েছে। গত ১০ বছরে তাঁর কাজে নানা পরিবর্তন এসেছে। আমি তাঁর দক্ষতা, হৃদয় ও আত্মার জন্য গভীরভাবে কৃতজ্ঞ। এবার তাঁর নেতৃত্ব দেওয়ার সময়।’
এরপর এক বিবৃতিতে পরাগ বলেন, ‘আমার নেতৃত্বে আস্থা রাখার জন্য পরিচালনা পর্ষদকে এবং শিক্ষা, সমর্থন ও অংশীদারত্বের জন্য জ্যাককে ধন্যবাদ দিতে চাই। ডরসির নেতৃত্ব আমরা যা অর্জন করেছি, আমি সেটার ভিত্তিতেই সবকিছু গড়তে চাই।’
তবে কে এই পরাগ, যাঁকে এত দ্রুত পদোন্নতি দিয়ে টুইটারের প্রধান করা হলো? চলুন দেখা যাক, এখন পর্যন্ত যা যা জানা গেল।
পরাগ এক দশকের বেশি সময় ধরে টুইটারে কাজ করছেন। ২০১১ সালে তিনি সফটওয়্যার প্রকৌশলী হিসেবে যোগ দেন। প্রতিষ্ঠানটির নানা কাজ সফলভাবে করার জন্য টুইটারের প্রথম ‘ডিসটিংগুইশড ইঞ্জিনিয়ার’ হন তিনি। ২০১৭ সালের অক্টোবরে তাঁকে সিটিও করা হয়।
টুইটারের কারিগরি কৌশল নিয়ে কাজ করেছেন পরাগ। সফটওয়্যার উন্নয়নের ধারায় অগ্রগতি আনা এবং সর্বস্তরে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মেশিন লার্নিং প্রযুক্তির প্রয়োগের দায়িত্ব ছিল তাঁর ওপর।
২০১৯ সালের ডিসেম্বর থেকে ‘প্রোজেক্ট ব্লুস্কাই’ নামের প্রকল্পে কাজ করছেন পরাগ। সেটির কাজ টুইটারে অবমাননাকর ও ভুয়া তথ্যের প্রসার ঠেকানো হলেও দলটির সফটওয়্যার স্থপতি, প্রকৌশলী ও নকশাকার সদস্যরা সবাই স্বাধীনভাবে কাজের সুযোগ পান।
ব্লুস্কাই প্রকল্পে একধরনের বিকেন্দ্রীভূত প্রযুক্তি প্রচলনের কথা বলা হয়েছিল। প্রাথমিক পরিকল্পনায় টুইটারসহ অন্য বড় প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলো নিজেদের প্ল্যাটফর্মের মানোন্নয়নে ব্লুস্কাইয়ের গ্রাহক হতে পারবে বলে জানিয়েছিলেন ডরসি।
পরাগের লিংকডইন প্রোফাইল অনুযায়ী, টুইটারে যোগ দেওয়ার আগে তিনি মাইক্রোসফট, ইয়াহু ও এটিঅ্যান্ডটি ল্যাবসের গবেষণা দলে ইন্টার্ন হিসেবে কাজ করেছেন।
পরাগ ভারতের অ্যাটমিক এনার্জি সেন্ট্রাল স্কুলে পড়াশোনা করেছেন বলে জানিয়েছে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস। এরপর মুম্বাইয়ের ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব টেকনোলোজি (আইআইটি), বোম্বে থেকে কম্পিউটারবিজ্ঞান ও প্রকৌশলে স্নাতক শেষে পাড়ি জমান যুক্তরাষ্ট্রে। সেখানে স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটি থেকে স্নাতকোত্তর ও পিএইচডি করেন।