সাধারণের হাতে ফেসবুক তুলে দিয়ে মার্ক জাকারবার্গ নিশ্চিন্ত থাকেন কাগজের ‘বুক’ হাতে। ভার্চ্যুয়াল দুনিয়া থেকে নিজের সন্তানদের দূরে সরিয়ে রাখেন মাইক্রোসফটের বিল গেটস। তবে অ্যাপলের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা টিম কুক আলাদা। তিনি স্মার্টফোন তৈরি করেন, স্মার্টফোনে কাজ সারেন, স্মার্টফোনে ডুবে থেকেই তাঁর দিন কাটে। অ্যাপলের সফটওয়্যার নির্মাতাদের সম্মেলনে কুক বলেন, ‘আমার ধারণা ছিল আমি খুবই নিয়মতান্ত্রিক জীবন যাপন করি। অন্তত ডিভাইস ব্যবহারের দিক থেকে তো বটেই। তবে আমার ভুল ভেঙেছে।’
কিসে তাঁর ভুল ভাঙল? আইফোনের নতুন সুবিধা স্ক্রিন টাইমের মাধ্যমে। নিন্দুকেরা বলতে পারেন, এটা তাঁর বিপণন কৌশল। তা অবশ্য কিছুটা হলেও সত্য। তবে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বেশ গুরুগম্ভীর ভঙ্গিতেই নিজের আইফোন আসক্তি এবং তা থেকে উদ্ধারের ‘কাহিনি’ বলে গিয়েছেন।
স্ক্রিন টাইম নামের আইওএস অপারেটিং সিস্টেমের নতুন সুবিধায় আইফোন ও আইপ্যাড ব্যবহারকারীরা প্রতিদিন এবং সপ্তাহে কোন অ্যাপে কত সময় ব্যয় করছেন, তা জানতে পারবেন। আবার অ্যাপ ব্যবহারের সময়সীমাও নির্ধারণ করে দেওয়া যাবে। ব্যবহারকারীরা দিনে কতগুলো নোটিফিকেশন পান এবং কতবার তাঁরা ডিভাইস হাতে তুলে নেন, তাও জানা যাবে স্ক্রিন টাইম থেকে। টিম কুক বলেন, ‘নতুন এই সুবিধার মাধ্যমে আমার আইফোন ব্যবহারের পরিসংখ্যান দেখে খুব অবাক হলাম যে আমি নিজেই এতে অনেক বেশি সময় ব্যয় করছি।’ কুককে সঞ্চালক জিজ্ঞেস করেছিলেন, কোন অ্যাপগুলো তিনি সবচেয়ে বেশি ব্যবহার করেন। কুক সে প্রশ্ন এড়িয়ে যান।
টিম কুক নিজের অভিজ্ঞতা থেকে ‘ডু নট ডিস্টার্ব’ সুবিধা এনেছেন, এমনটা ভাবার কোনো কারণ নেই। স্মার্টফোন আসক্তি, বিশেষ করে কিশোর বয়সীদের মধ্যে মাত্রাতিরিক্ত স্মার্টফোন ব্যবহার নিয়ে বরাবরই প্রতিবাদ জানিয়ে এসেছেন অ্যাপলের বিনিয়োগকারীরা। গত জানুয়ারিতে শেয়ারহোল্ডারদের বৈঠকে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েন টিম কুক। এ ছাড়া প্রতিষ্ঠানটির বর্তমান ও সাবেক নির্বাহীরাও আইফোনের মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহার নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে এসেছেন।
মোখলেছুর রহমান, সূত্র: সিএনএন