টিকা আসবে কবে? করোনাভাইরাসে আক্রান্ত বিশ্ব এ প্রশ্নের উত্তর জানার অপেক্ষায়। টিকা নিয়ে দ্রুত এগিয়ে চলেছে গবেষণা। বিজ্ঞানীরা দিনরাত খেটে চলেছেন। চাইলেই তো হুট করে টিকা বাজারে আনা যায় না! এর নিরাপত্তা ও কার্যকারিতা প্রমাণে কয়েক বছর লেগে যায়। সেখানে গবেষকেরা কয়েক মাসের মধ্যেই টিকা আনার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন।
ধারণা করা হচ্ছে, আগস্ট থেকে সেপ্টেম্বরের মধ্যেই কয়েকটি টিকার কার্যকারিতার ফল জানা যাবে। অক্টোবর নাগাদ হয়তো কোনো টিকা পরীক্ষামূলক ব্যবহারের অনুমতিও পেয়ে যেতে পারে। মার্কিন বিশেষজ্ঞদের ধারণা, আগামী বছরের শুরুতে করোনাভাইরাস প্রতিরোধী কয়েকটি টিকা হাতে থাকবে। টিকা তৈরির দৌড়ে এখন পর্যন্ত এগিয়ে রয়েছে যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়, যুক্তরাষ্ট্রের মডার্নাসহ বেশ কয়েকটি টিকা তৈরির প্রতিষ্ঠান।
এখন পর্যন্ত বিশ্বে করোনাভাইরাসের টিকা তৈরিতে সবচেয়ে আলোচিত ও অগ্রগামী হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় ও অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকাকে। তাদের কাছ থেকেই প্রথম টিকা নিয়ে সুখবর পেতে পারে বিশ্ব। আজ বৃহস্পতিবারই তারা সে ‘সুখবর’ দিতে পারে। ব্রিটেনের একটি সংবাদ সংস্থার দাবি, তাদের প্রতিষেধক তৈরির সহযোগী ওষুধ কোম্পানি অ্যাস্ট্রাজেনেকাকে নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করতে পারে অক্সফোর্ড। তাদের এই গবেষণার নেতৃত্বে রয়েছেন ইবোলা প্রতিষেধক তৈরিতে দিশা দেখানো বিজ্ঞানী সারা গিলবার্ট। গবেষকদের একাংশ বলছে, সেপ্টেম্বরে ভ্যাকসিন আনার ব্যাপারে তাঁরা শতভাগ নিশ্চিত। আজ তাঁদের কাছ থেকে প্রথম ধাপের ইতিবাচক পরীক্ষার ফল পাওয়া যেতে পারে।
ব্রিটিশ সাময়িকী ‘দ্য ইকোনমিস্ট’-এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অক্সফোর্ডের তৈরি ভ্যাকসিনের তৃতীয় ধাপের ফলাফল বা কার্যকারিতার বিষয়টি আগস্ট মাসের শেষ নাগাদ জানা যাবে। অ্যাস্ট্রাজেনেকার প্রধান নির্বাহী প্যাসকল সারিওট বলেন, তাঁদের ভ্যাকসিন এক বছর পর্যন্ত কোভিড-১৯-এর বিরুদ্ধে সুরক্ষা দিতে সক্ষম হবে। সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী আগস্ট বা সেপ্টেম্বরে এর ফল জানা যাবে। ভ্যাকসিনের ফলের জন্য অপেক্ষার পাশাপাশি ভ্যাকসিন উৎপাদন চলছে। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে অক্টোবরেই ভ্যাকসিন সরবরাহ শুরু করা যাবে।
গত মাসেই ব্রাজিলে কয়েক হাজার স্বেচ্ছাসেবীর ওপর ‘চ্যাডক্স-১’ টিকার তৃতীয় পর্যায়ের পরীক্ষামূলক প্রয়োগ শুরু করেছিল অক্সফোর্ড। তাতে অভাবনীয় সাড়া মিলেছে। সব ঠিকঠাক চললে হয়তো সেপ্টেম্বর কিংবা তারও আগে বাজারে চলে আসবে টিকা। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম আইটিভির রাজনৈতিক বিভাগের সম্পাদক রবার্ট পেস্টন এক সূত্রের বরাতে বলেন, ‘সুখবর আসছে জেনে আর চেপে রাখতে পারলাম না। যেটুকু শুনেছি, তাতে অক্সফোর্ডের গবেষকদের আশামতোই এর প্রয়োগে যথাযথ অ্যান্টিবডি ও টি-সেল (ঘাতক কোষ) তৈরি হচ্ছে মানবশরীরে।’ অবশ্য অক্সফোর্ড তাদের ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের প্রথম পর্যায়ের কোনো প্রতিবেদন প্রকাশ করেনি বলে সমালোচনা হচ্ছিল। প্রাণী দেহে পরীক্ষার সে ফল জানা যেতে পারে। মেডিকেল সাময়িকী ‘ল্যানসেট’ ওই গবেষণার ফল প্রকাশ করতে পারে।
গবেষকেরা বলছেন, এ মুহূর্তে বিশ্বে শতাধিক টিকা নিয়ে গবেষণা চলছে। জুনে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান বিজ্ঞানী বলেছিলেন, অক্সফেোর্ড ও অ্যাস্ট্রাজেনেকার পরীক্ষামূলক টিকাটি সম্ভবত সবচেয়ে এগিয়ে। বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশের সঙ্গে ভ্যাকসিন সরবরাহের জন্য চুক্তি করেছে প্রতিষ্ঠানটি। এদিকে, টিকার ইতিবাচক ফলাফল আসার খবরে অ্যাস্ট্রাজেনেকার শেয়ারের দাম ৫ শতাংশ বেড়ে গেছে। বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে প্রতিষ্ঠানটির একজন মুখপাত্র ফলাফল মেডিকেল সাময়িকীতে প্রকাশ হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
অক্সফোর্ডের ইতিবাচক খবরের আগ দিয়েই মঙ্গলবার টিকা নিয়ে ইতিবাচক খবর শোনায় মডার্না। তারা দাবি করেছে, প্রথম ধাপের পরীক্ষায় ৪৫ জন স্বেচ্ছাসেবীর সবার শরীরেই ভাইরাসের বিরুদ্ধে অ্যান্টিবডি তৈরি হতে দেখা গেছে। মডার্নার গবেষণার ফলসংক্রান্ত নিবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে ‘দ্য নিউ ইংল্যান্ড জার্নাল অব মেডিসিন’ সাময়িকীতে।
‘নিউইয়র্ক টাইমস’-এর তথ্য অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব অ্যালার্জি অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজেস নামের প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যৌথভাবে তৈরি ভ্যাকসিনটি প্রথম ভ্যাকসিন হিসেবে মানবদেহে প্রয়োগ করা হয়েছিল। মঙ্গলবার মডার্না জানিয়েছে, ২৭ জুলাই থেকে ৩০ হাজার মানুষকে নিয়ে ভ্যাকসিনটির তৃতীয় ধাপের পরীক্ষা শুরু হতে যাচ্ছে। অক্টোবরের মধ্যে এ পরীক্ষা শেষ হবে। ভ্যাকসিনটি নিরাপদ ও কার্যকর কি না, তখন নিশ্চিতভাবে বলা যাবে। মডার্নার ভ্যাকসিন মূলত মেসেঞ্জার আরএনএ (এমআরএনএ) ভিত্তিক যা ভাইরাসের জেনেটিক উপাদান বহন করে এবং শরীরের প্রতিরোধ-ব্যবস্থাকে ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়তে শেখায়। এর আগে গত ১৮ মে প্রথম ইতিবাচক ফল প্রকাশ করেছিল মডার্না। কিন্তু ওই সময় বিস্তারিত তথ্য জানায়নি তারা। এ জন্য সমালোচনার মুখে পড়তে হয় তাদের। তবে বিস্তারিত ফল প্রকাশের পর দেখা গেছে, করোনাভাইরাস থেকে সেরা ওঠা ব্যক্তিদের মতোই ভ্যাকসিন পাওয়া ব্যক্তির শরীরে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে। এ ছাড়া টি-সেল সৃষ্ট বিশেষ প্রতিক্রিয়ার মতো প্রতিরোধী প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে এটি।
যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের টিকার ইতিবাচক খবরের মধ্যে চমকপ্রদ খবর দিয়েছে রাশিয়া। দেশটির বিজ্ঞানীরা বলেছেন, তাঁরা এক মাসের মধ্যে করোনার টিকা আনার ব্যাপারে আশাবাদী। মস্কোভিত্তিক ইংরেজি ভাষার অনলাইন সংবাদমাধ্যম ‘দ্য মস্কো টাইমস’-এর এক প্রতিবেদনে রাশিয়ার বিজ্ঞানীদের বরাত দিয়ে বলা হয়, বিশ্বের প্রথম করোনাভাইরাসের টিকা আগামী মাসেই রোগীদের শরীরে প্রয়োগ করা হবে। এর আগে মস্কোর এক মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় জানায়, তারা স্বেচ্ছাসেবীদের ওপর সম্ভাব্য ওই টিকার সফল প্রয়োগ করেছে। রাশিয়ার সম্ভাব্য টিকাটি উদ্ভাবন করেছে রাষ্ট্রপরিচালিত গামালি ন্যাশনাল রিসার্চ সেন্টার ফর এপিডেমিওলজি অ্যান্ড মাইক্রোবায়োলজি। মস্কোর দ্য সেচেনভ ফার্স্ট মস্কো স্টেট মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় গত জুনে ৩৮ জন স্বেচ্ছাসেবীর ওপর সম্ভাব্য ওই টিকার প্রয়োগ শুরু করে। একই সময়ে রাশিয়ার সেনাবাহিনী একই টিকার দুই মাসের পরীক্ষা চালায়।
রাশিয়ার পাশাপাশি ভারতেও টিকা তৈরিতে অগ্রগতি দেখা যাচ্ছে। দ্বিতীয় পর্যায়ে মানবদেহের ওপর কোভিড-১৯ ভাইরাসের সম্ভাব্য প্রতিষেধকের পরীক্ষা শুরু হয়েছে দেশটিতে। ওষুধ প্রস্তুতকারক সংস্থা জাইডাস ক্যাডিলার তরফে মোট দুই ধাপে এই পরীক্ষা করা হবে। তাতে ভারতের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ১ হাজারের বেশি মানুষ অংশ নিচ্ছেন। চলতি মাসের শুরুতে ড্রাগস কন্ট্রোলার জেনারেল অব ইন্ডিয়ার (ডিসিজিআই) কাছ থেকে জাইকোভ-ডি টিকার পরীক্ষামূলক প্রয়োগের অনুমোদন জোগাড় করে জাইডাস ক্যাডিলা। ইতিমধ্যেই এই টিকার পরীক্ষামূলক প্রয়োগ শুরু করেছে। এর আগে, ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিকেল রিসার্চ (আইসিএমআর) এবং ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ভাইরোলজির সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে ভারত বায়োটেক করোনার প্রতিষেধক কোভ্যাকসিন তৈরি করেছিল। পরীক্ষামূলকভাবে মানব শরীরে তারাও এই প্রতিষেধক প্রয়োগে অনুমতি পেয়েছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ওয়েবসাইটে সারা বিশ্বে টিকা তৈরির নানা উদ্যোগ নিয়ে একটি খসড়া তালিকা রয়েছে। গত সপ্তাহ পর্যন্ত এ তালিকায় ১৬০টি উদ্যোগের তথ্য ছিল। তালিকার তথ্য অনুযায়ী, ২১ টিকা মানবদেহে ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের পর্যায়ে পৌঁছেছে। আর ১৩৯টি প্রাক্-পরীক্ষামূলক পর্যায়ে রয়ে গেছে। অক্সফোর্ডের টিকা ও চীনের সিনোভেকের টিকাটি ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের তৃতীয় ধাপে গেছে। ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের বাকি ১৯টি টিকা প্রথম বা দ্বিতীয় ধাপে আছে।
এ ছাড়া জার্মান জৈবপ্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান বায়ো এন টেক ও যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কভিত্তিক ওষুধ উৎপাদনকারী ফাইজার ইনকরপোরেশন টিকা আবিষ্কারে যৌথভাবে কাজ করছে। তারা বলেছে, সবকিছু ঠিকঠাক এগোলে চলতি বছরের শেষ নাগাদ টিকা উৎপাদনের ব্যাপারে তারা আশাবাদী। তাদের ভ্যাকসিনের চূড়ান্ত ধাপ বা তৃতীয় পর্যায়ের পরীক্ষা এ মাসের শেষেই শুরু হচ্ছে। এ পরীক্ষায় ৩০ হাজার মানুষকে অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে। এর ফল চলতি বছরের মধ্যেই জানা যাবে। এরপর প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ভ্যাকসিনটির অনুমোদন চাওয়া হবে।
যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ সংক্রামক রোগবিশেষজ্ঞ অ্যান্টনি ফাউসি ফেসবুকের এক লাইভ অনুষ্ঠানে বলেছেন, এ বছরের মধ্যেই ভ্যাকসিন তৈরির লক্ষ্য অর্জনে জুলাই মাসটি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। এখন যেভাবে সবকিছু চলছে, এভাবে চলতে থাকলে যেকোনো একটি ভ্যাকসিন পরীক্ষার তৃতীয় ধাপে চলে যাবে।
যুক্তরাষ্ট্রের খাদ্য ও ওষুধ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বা এফডিএ বলেছে, কোনো ভ্যাকসিনের অনুমোদন পেতে হলে তাকে অবশ্যই সাধারণ ওষুধের চেয়ে ৫০ শতাংশের বেশি কার্যকর বলে প্রমাণ করতে হবে। এফডিএর সেন্টার ফর বায়োলজিকস ইভোলিউশন অ্যান্ড রিসার্চের পরিচালক পিটার মার্কস বলেন, তাঁর মতে, কোভিড-১৯ রোগ থেকে মুক্তি পেতে একটি ভ্যাকসিনকে কমপক্ষে ৭০ শতাংশ কার্যকর হতে হবে। ফিয়ার্সফার্মার তথ্য অনুযায়ী, ৭০ শতাংশ কার্যকর কোনো ভ্যাকসিন যদি ৭০ শতাংশ জনগণকে দেওয়া যায়, তবেই এ রোগ নির্মূল করা সম্ভব হতে পারে।
একনজরে উল্লেখযোগ্য টিকার বর্তমান পরিস্থিতি
ভ্যাকসিনের দৌড়ে এগিয়ে থাকা অন্য প্রতিষ্ঠানগুলো হচ্ছে ক্যানসিনো (চীন), উহান ইনস্টিটিউট অব বায়োলজিক্যাল প্রোডাক্টস (চীন), বেইজিং ইনস্টিটিউট অব বায়োলজিক্যাল প্রোডাক্টস (চীন), সিনোভ্যাক্স (চীন), নোভাভ্যাক্স (যুক্তরাষ্ট্র), ইনোভিও (যুক্তরাষ্ট্র)। এসব প্রতিষ্ঠান কয়েক সপ্তাহের মধ্যে তাদের ভ্যাকসিনের ফল জানাতে পারে। বিভিন্ন ট্রাকারে দেখানো টিকার বর্তমান অবস্থান তুলে ধরা হলো:
১. অক্সফোর্ডের টিকা এজেডডি ১২২২, তৃতীয় ধাপ
২. মডার্না এমআরএনএ ১২৭৩, দ্বিতীয় ধাপ
৩. ফাইজার, বায়োএনটেক বিএনটি ১৬২, প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপ
৪. উহান ইনস্টিটিউট অব বায়োলজিক্যাল প্রোডাক্টস (চীন), সিনোফার্ম, ইনঅ্যাক্টিভেটেড ভ্যাকসিন, প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপ
৫. বেইজিং ইনস্টিটিউট অব বায়োলজিক্যাল প্রোডাক্টস (চীন), সিনোফার্ম, বিবিআইবিপি-কোভ, প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপ
৬. ক্যানসিনো বায়োলজিকস (চীন), অ্যাড-৫ এনকোভ, দ্বিতীয় ধাপ
৭. ইনোভিও ফার্মাসিউটিক্যালস, আইএনও ৪৮০০, দ্বিতীয় ধাপ
৮. সিনোভ্যাক, করোনাভ্যাক, প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপ
৯. নোভাভ্যাক্স, এনভিএক্স-কোভ২৩৭৩, প্রিক্লিনিক্যাল
১০. কিউরভ্যাক, এমআরএনএ, প্রথম ধাপ
১১. ইম্পেরিয়াল কলেজ লন্ডন, সেলফ এম্পলিফায়িং আরএনএ, প্রথম ধাপ
১২. জনসন অ্যান্ড জনসন, অ্যাড২৬, কোভ-২এস, প্রিক্লিনিক্যাল