ফেসবুকের প্রধান নির্বাহী মার্ক জাকারবার্গকে ক্ষমতাচ্যুত করার একটি প্রচেষ্টা ভেস্তে গেছে। প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যানের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার জন্য চেষ্টা করেছিলেন ফেসবুকের পরিচালনা বোর্ডের কয়েকজন সদস্য। গত ৩০ মে ফেসবুকের বার্ষিক সাধারণ সভায় শেয়ারহোল্ডাররা জাকারবার্গের নেতৃত্বের বিরুদ্ধে ভোট দেওয়ার সুযোগ পান।
জাকারবার্গ বর্তমানে বিশ্বের বৃহত্তম সামাজিক যোগাযোগেমাধ্যমটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) এবং এর পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান পদে আছেন। তাঁর হাতে ৬০ শতাংশ ভোটিং নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা রয়েছে। তিনি যদি কেবল নিজের বিপক্ষে ভোট দেন, তবেই কেবল তাঁকে সরানো সম্ভব।
কয়েকজন বিনিয়োগকারী অবশ্য তাঁকে চেয়ারম্যান পদ থেকে সরে দাঁড়াতে বলেন। তাঁদের যুক্তি, এতে ফেসবুক পরিচালনার দিকে আরও বেশি মনোযোগী হতে পারবেন জাকারবার্গ।
এসব বিনিয়োগকারীর মধ্যে একটি প্রতিষ্ঠান হচ্ছে ট্রিলিয়াম অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট। তাদের ফেসবুকে ৭০ লাখ ডলারের মতো শেয়ার রয়েছে।
ট্রিলিয়ানের জ্যেষ্ঠ ভাইস প্রেসিডেন্ট জোনাস ক্রন বলেন, যদি সিইও হিসেবে তিনি মনোযোগী হন এবং অন্য কাউকে স্বাধীনভাবে পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান বানান, তবে ভালো হয়। গুগল ল্যারি পেজ, মাইক্রোসফটের বিল গেটসের কাছ থেকে অনুপ্রেরণা পেতে পারেন তিনি। ল্যারি পেজ ও বিল গেটস কোম্পানির প্রতিষ্ঠাতা হলেও এখন আর বোর্ডের চেয়ারম্যান পদে নেই।
এক বছরের বেশি সময় ধরে প্রাইভেসি ও তথ্য সুরক্ষার মতো বিষয়গুলোয় ফেসবুকের কেলেঙ্কারির পরেও ফেসবুকের ব্যবহারকারী ও আয় বাড়ছে।
বার্ষিক সাধারণ সভায় একজন শেয়ারধারী স্বাধীন চেয়ারম্যান নিয়োগ বিষয়ে জাকারবার্গকে প্রশ্ন করলেও তিনি তা কৌশলে এড়িয়ে যান। তিনি এর পরিবর্তে নিয়ন্ত্রকদের প্রাইভেসি ও কনটেন্ট বিষয়ে নীতিমালা তৈরির কথা বলেন। ফেসবুক সে নীতিমালা অনুসরণ করে চলবে বলে জানান তিনি।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, ফেসবুক সদর দপ্তরে শেয়ারমালিকদের বার্ষিক সাধারণ সভার বাইরে একদল মানুষ বিক্ষোভ করেন। প্রতিষ্ঠানটির পরিচালনা পর্ষদ থেকে চেয়ারম্যান মার্ক জাকারবার্গকে হটানোর জন্য বাইরে রাগ প্রকাশের ইমোজির বেলুন নিয়ে বিক্ষোভ করতে দেখা যায় তাঁদের।
ফেসবুকের শেয়ারধারীদের কেউ কেউ ফেসবুকের কর্মপরিবেশ নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। রক্ষণশীল মূল্যবোধের কর্মীদের জন্য এখনকার কর্মপরিবেশ প্রতিকূল বলে মন্তব্য করেন।
এর আগে ফেসবুকের সাবেক নিরাপত্তাপ্রধান অ্যালেক্স স্টামোস জাকারবার্গকে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান। গত মে মাসে কানাডায় ‘কলিসন’ সম্মেলনে স্টামোস বলেন, জাকারবার্গ অতিরিক্ত ক্ষমতা ধরে রেখেছেন বলে যৌক্তিক তর্ক করা যেতে পারে।
জাকারবার্গ অবশ্য ফেসবুকে তাঁর থাকার যৌক্তিকতা তুলে ধরেছেন। গত এপ্রিল মাসে জাকারবার্গ বলেছিলেন, ‘আপনি যখন ফেসবুকের মতো কোনো কিছু তৈরি করেন, তখন কিছুটা তালগোল পাকানোর মতো কিছু বিষয় থাকে। আমরা যেহেতু ভুল থেকে অনেক কিছু শিখছি, তাই মানুষ আমাদের দায়বদ্ধ ভাবতে পারে।’