দেখতে মার্ক জাকারবার্গের মতো। কিন্তু আসলে তা কম্পিউটার প্রোগ্রামে তৈরি জাকারবার্গের একটি ভিডিও ক্লিপ। ওই ভিডিওতে জাকারবার্গের মতো কথা বলার বা মাথা নাড়ার দৃশ্য রয়েছে। ভিডিওটিতে জাকারবার্গের সফলতার পেছনে একটি গোয়েন্দা সংস্থার হাত রয়েছে বলে দাবি করা হচ্ছে। ভুয়া ও ভিডিও আবার ফেসবুকের মালিকানাধীন ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করা হয়েছে। সব জেনেশুনেও ফেসবুক কর্তৃপক্ষ বলছে ওই ভিডিও তারা সরাবে না। বিবিসি অনলাইনের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
ভিডিওটি মূলত ‘ডিপফেক’ ভিডিও, যা আর্টিফিশিয়াল ইনটেলিজেন্স (এআই) ব্যবহার করে তৈরি করা হয়েছে। এতে কোনো ব্যক্তির ছবি ব্যবহার করে তার বিভিন্ন অ্যাকশন তৈরি করতে পারে।
এর আগে ফেসবুকে এমনই এক ভুয়া ভিডিও পোস্ট করা হয়েছিল যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসের ডেমোক্রেটিক স্পিকার ন্যান্সি পেলোসিকে নিয়ে। ওই ভিডিও নিয়ে সমালোচনার মুখে পড়তে হয় ফেসবুক কর্তৃপক্ষকে।
লন্ডনে ৫০০ নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টির সিদ্ধান্তের সঙ্গে নতুন ভিডিও না সরানোর সিদ্ধান্তটির মিল রয়েছে। ফেসবুক কর্তৃপক্ষ বলছে, এখন অনেক পোস্ট মেশিন লার্নিংভিত্তিক সফটওয়্যারে তৈরি হবে, যা স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিও শনাক্ত করা ও ফেসবুকে ক্ষতিকর কনটেন্ট সরিয়ে ফেলতে পারবে। এ ছাড়া তারা এমন টুল বা কম্পিউটার প্রোগ্রাম তৈরি করবে, যা কর্মীদের সম্ভাব্য ক্ষতিকর উপাদান শনাক্ত করতে সাহায্য করবে।
জাকারবার্গের ওই ডিপফেক ভিডিওটি মূলত শেফিল্ডে স্পেক্টার নামের একটি প্রদর্শনীতে দেখানো হয়। এটি মূলত সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে নজরদারি ও কেমব্রিজ অ্যানালিটিকার মতো কেলেঙ্কারির ক্ষেত্রে কীভাবে এর অপব্যবহার করা হয় তা দেখাতেই তৈরি করা। এতে কম্পিউটারের তৈরি মার্ক জাকারবার্গের একটি ছবি ও শরীরের ফুটেজ ব্যবহার করা হয়। এতে এক অভিনেতার অডিও রেকর্ড যুক্ত করা হয়। ১৬ সেকেন্ডের ওই ক্লিপটি শনিবার ইনস্টাগ্রামে আপলোড করা হয়। গত মঙ্গলবার মাদারবোর্ডে এ ভিডিও নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করা হলে এটি সবার নজর কাড়ে।
ভিডিওটি ২৫ হাজারের বেশিবার দেখা হয়েছে। এর কপি ফেসবুকেও শেয়ার হয়েছে।
ফেসবুকের এক মুখপাত্র বলেছেন, ইনস্টাগ্রামে অন্য যেসব ভুয়া তথ্য যেভাবে দেখা হয়, এটি সেভাবে দেখা হবে। যদি থার্ড পার্টি ফ্যাক্ট চেকাররা একে ভুয়া বলে মত দেয়, তবে তা ফিল্টার করা হবে।
গত মাসে যুক্তরাষ্ট্রের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসির একটি নকল ভিডিও সরাতে অস্বীকৃতি জানায় ফেসবুক। এতে পেলোসি ক্ষিপ্ত হন। তখন ফেসবুক কর্তৃপক্ষকে জিজ্ঞেস করা হয়, পেলোসির জায়গায় যদি জাকারবার্গকে নিয়ে এমন ভিডিও তৈরি করা হতো, তাহলে কি একই আচরণ করা হতো?
জবাবে ফেসবুকের পাবলিক পলিসি বিভাগের পরিচালক নেইল পটস বলেন, একই ভিডিওতে যদি পেলোসির জায়গায় জাকারবার্গকে সংযুক্ত করা হতো, তাহলে ফেসবুক এমন সিদ্ধান্তই নিত।