চীনের টেলিকম যন্ত্রপাতি নির্মাতা হুয়াওয়ের মতো প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আগ্রাসী মার্কিন প্রচার কৌশল বাণিজ্যযুদ্ধের দিকে, এমনকি সত্যিকার যুদ্ধের দিকে ঠেলে দিতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। গতকাল শুক্রবার চীনা প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের সঙ্গে এক সংহতি জানানোর অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
পুতিন ওয়াশিংটনের বিরুদ্ধে ‘লাগামহীন অর্থনৈতিক অহমিকা’ দেখানোর অভিযোগ আনেন। তিনি ইউরোপে রাশিয়ার একটি গ্যাস পাইপলাইন ব্যর্থ করার ও বিভিন্ন দেশে হুয়াওয়ের টেলিকম যন্ত্রপাতি সরবরাহ ঠেকাতে চাপ দেওয়ার বিষয়ে ইঙ্গিত করেন।
পুতিন বলেন, যেসব দেশ আগে মুক্ত বাণিজ্য, সৎ ও মুক্ত প্রতিযোগিতার কথা বলত, তারা এখন বাণিজ্যযুদ্ধ ও নিষেধাজ্ঞার মতো সুরে কথা বলছে। অস্ত্রের টুইস্ট ও ভয় দেখানোর কৌশল নিচ্ছে। প্রচলিত বাজারপদ্ধতির বদলে প্রতিদ্বন্দ্বীকে সরিয়ে ফেলার চেষ্টা করছে।
পুতিন হুয়াওয়ের উদাহরণ দিয়ে বলেন, তারা প্রতিষ্ঠানটিকে চাপ দেওয়ার পাশাপাশি বৈশ্বিক বাজার থেকে সরিয়ে ফেলার চেষ্টা করছে। বিষয়টিকে ইতিমধ্যে কিছু মহলে উঠতি ডিজিটাল যুগের প্রথম প্রযুক্তি যুদ্ধ বলা হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রে তাদের বিচার সারা বিশ্বে ছড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে।
পুতিন সতর্ক করে বলেন, ‘যে পথে তারা চলছে, তা অন্তহীন সংঘর্ষের পথ। এটা শুধু বাণিজ্যযুদ্ধে আটকে থাকবে না, এটা যুদ্ধের পথে যেখানে কোনো নিয়মনীতি থাকবে না। যে যার ইচ্ছামতো চলবে।’
মার্কিন চাপের মধ্যেই রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে চীন। চীনের প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান হুয়াওয়েকে গত ১৫ মে ‘কালো তালিকাভুক্ত’ করে যুক্তরাষ্ট্র। এর মধ্যে রাশিয়ার টেলিকম সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান এমটিএসের সঙ্গে ফাইভজি প্রযুক্তি উন্নয়নে চুক্তি করেছে হুয়াওয়ে। গত বুধবার বিবিসি অনলাইনের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, রাশিয়ার সঙ্গে চুক্তি করে সামনের বছর দেশটিতে ফাইভজি নেটওয়ার্ক স্থাপনের কাজ শুরু করবে হুয়াওয়ে।
জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকির অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন কয়েকটি পশ্চিমা দেশ হুয়াওয়ের কার্যক্রমে বাধা দিচ্ছে।
এমটিএসের এক বিবৃতির কথা উল্লেখে করে বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, ফাইভজি প্রযুক্তির উন্নয়ন ও পরীক্ষা চালানোর জন্য চলতি বছর ও আগামী বছর সময় নির্ধারণ করা হয়েছে।
চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং তিন দিনের সফরে রাশিয়ায় যাওয়ার পর এ চুক্তি সই হয়েছে। চুক্তির বিষয়টি সম্প্রতি আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে হুয়াওয়ের ওপরে থাকা চাপ থেকে কিছুটা মুক্তি দেবে।