চাঁদের দক্ষিণ মেরু অন্ধকারাচ্ছন্ন একটি অঞ্চল। অঞ্চলটি পর্যবেক্ষণ করার লক্ষ্যে মহাকাশে সম্প্রচারকাজের উপযোগী একটি কৃত্রিম উপগ্রহ পাঠিয়েছে চীন। আজ সোমবার সিচুয়ান রাজ্যের শিচ্যাং উৎক্ষেপণ কেন্দ্র থেকে দ্য কুয়িকিয়াও নামের ওই সম্প্রচার স্যাটেলাইট পাঠানো হয়। চীনের মহাকাশ গবেষণা কর্তৃপক্ষ (সিএনএসএ) বলছে, এ বছরে অভূতপূর্ব এক মিশনে পাঠানো হচ্ছে বিশেষ ওই কৃত্রিম উপগ্রহ।
লং মার্চ-৪সি নামের একটি রকেটে করে কৃত্রিম উপগ্রহটি পাঠানোর ২৫ মিনিট পর সেটি পৃথক হয়ে যায় এবং সৌর প্যানেল ও যোগাযোগ অ্যানটেনা চালু করে। এটি গন্তব্যের দিকে যেতে শুরু করেছে।
কৃত্রিম উপগ্রহ প্রকল্পের ব্যবস্থাপক ঝ্যাং লিহুয়ার বরাতে বার্তা সংস্থা সিনহুয়া বলেছে, চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে অবতরণ এবং ওই অঞ্চল পর্যবেক্ষণে চীনের এই উপগ্রহ পাঠানোর বিষয়টিকে গুরুত্বপূর্ণ ধাপ বলে বিবেচনা করা হচ্ছে। পৃথিবীতে বসানো কন্ট্রোলারের সঙ্গে ওই কৃত্রিম উপগ্রহটি চাঁদের ওই মেরুর বিভিন্ন তথ্য সম্প্রচার করতে পারবে। ওই সম্প্রচার করা তথ্যের ভিত্তিতে এ বছরের শেষ দিকে চেঞ্চ-৪ নামের একটি চন্দ্র রোবট পাঠানো হবে। রোবটটির নাম রাখা হয়েছে চীনের রূপকথার চাঁদের দেবীর নামের সঙ্গে।
চাঁদের অন্ধকার দিক হিসেবে পরিচিত দক্ষিণ মেরুর পৃথিবী থেকে সরাসরি দেখা যায় না। ১৯৫৯ সালের প্রথম ছবি পাওয়ার পর থেকেও ওই অঞ্চলে অভিযান চালানো হয়নি। চেঞ্চ-৪ নামের ওই রোবট দক্ষিণ মেরুর আইকন বেসিনে অভিযান চালাবে। এটি হবে চাঁদে অবতরণকারী চীনের দ্বিতীয় চন্দ্রযান। এর আগে ২০১৩ সালে ইয়তু নামের একটি চন্দ্রযান পাঠিয়েছিল দেশটি।
ইয়তু যানটি শুরুতে যোগাযোগবিচ্ছিন্ন হলে তা ব্যর্থ বলেই ধরে নিয়েছিল চীনা গবেষকেরা। তবে পরে এটি সক্রিয় হয়ে পৃথিবীতে সংকেত পাঠাতে শুরু করে এবং ৩১ মাস পর্যন্ত চন্দ্রপৃষ্ঠ থেকে সংকেত পাঠায়। এরপর থেকে সিএনএসএ চেঞ্চ-৫ নামের আরেকটি চন্দ্রযান পাঠানোর পরিকল্পনা শুরু করেছে চীন। এটি চাঁদ থেকে নমুনা সংগ্রহ করে পৃথিবীতে আনতে সক্ষম হবে।
চীন তাদের সেনাবাহিনী পরিচালিত মহাকাশ কর্মসূচিতে কোটি কোটি ডলার খরচ করছে। ২০২২ সাল নাগাদ স্পেস স্টেশন তৈরি করে ভবিষ্যতে চাঁদে মানুষ পাঠানোর পরিকল্পনা করছে দেশটি।