চীনা স্মার্টফোন নির্মাতা হুয়াওয়ের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রেন ঝেংফেই যুক্তরাষ্ট্রকে সতর্ক করেছেন, তাদের তৈরি হারমনি অপারেটিং সিস্টেম একবার কার্যকর হয়ে গেলে যুক্তরাষ্ট্রের গুগলের মতো প্রতিষ্ঠানের ওপর প্রভাব পড়বে। হুয়াওয়ে ভিন্নপথে হাঁটা শুরু করলে তা থেকে আর ফেরার পথ থাকবে না।
জাতীয় নিরাপত্তার অভিযোগে ওয়াশিংটন হুয়াওয়ের ওপর যে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে, তা প্রতিষ্ঠানটির ক্ষতি করছে বলে স্বীকার করেছে হুয়াওয়ে কর্তৃপক্ষ। হুয়াওয়ের স্মার্টফোনে গুগলের অ্যান্ড্রয়েড সফটওয়্যার, প্লেস্টোর, সার্চ ও ম্যাপের মতো জনপ্রিয় অ্যাপগুলোর অনুপস্থিতি ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে।
গত মঙ্গলবার বার্তা সংস্থা সিএনএনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে রেন বলেন, যুক্তরাষ্ট্র সে দেশের প্রতিষ্ঠানগুলোকে বাণিজ্যে বাধা দেওয়ার মাধ্যমে মূলত প্রতিদ্বন্দ্বীদের সাহায্য করার পথই বেছে নিচ্ছে। হুয়াওয়ে যদি মার্কিন সরবরাহকারীদের সঙ্গে কাজের সুযোগ না পায়, তবে বিকল্প পথে হাঁটতে বাধ্য হবে। একবার যদি ওই বিকল্পগুলোর একটি উপযুক্ত হয়ে ওঠে, তখন আর পেছনে ফিরে তাকানোর সুযোগ থাকবে না। হুয়াওয়েকে যদি গুগলের বিকল্প নিতে হয়, তবে তা মার্কিন কোম্পানিগুলোর ক্ষতিই করবে। এটা আমাদের সবার জন্যই জটিল একটি সময়। আশা করি, মার্কিন সরকার তার দেশের প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য কোনটি ভালো তা বিবেচনা করবে।
হুয়াওয়ের প্রধান নির্বাহী বলেন, অ্যান্ড্রয়েডের রাজত্বে এক নম্বর হওয়া কঠিন কিছু নয়। তবে এ জন্য কিছুটা সময় লাগবে।
হুয়াওয়ের দাবি, যুক্তরাষ্ট্র সরকার তাদের বিরুদ্ধে যে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে, তা আইনবহির্ভূত। বাছাই করা তথ্য, শ্লেষ ও ভুল অনুমানের ভিত্তিতে মার্কিন সরকার হুয়াওয়ের ওপর নিষেধাজ্ঞার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। হুয়াওয়ে তাদের দেশের জন্য কীভাবে নিরাপত্তা ঝুঁকি তৈরি করছে, তার কোনো প্রমাণ পর্যন্ত দিতে পারেনি। যুক্তরাষ্ট্রের প্রত্যন্ত অঞ্চলে নেটওয়ার্ক সুবিধা দিতে এতে মারাত্মক অসুবিধার সম্মুখীন হতে হবে দেশটিকে। হুয়াওয়ের পণ্যের ওপর দেশটির অনেক নেটওয়ার্কিং কোম্পানি নির্ভর করে।
গত সপ্তাহে মার্কিন সরকারের পক্ষ থেকে হুয়াওয়েকে যুক্তরাষ্ট্রের পণ্য ও সেবা পেতে তিন মাসের বর্ধিত লাইসেন্সের অনুমোদন দেওয়া হয়।
চলতি বছরের মে মাসে হুয়াওয়েকে কালো তালিকাভুক্ত করার পরও সাময়িক লাইসেন্সের মাধ্যমে মার্কিন প্রতিষ্ঠানগুলোকে তাদের যন্ত্রাংশ ক্রয়ের অনুমতি দেয় মার্কিন বাণিজ্য বিভাগ।
কারণ হিসেবে বাণিজ্যমন্ত্রী উইলবার রস জানান, যুক্তরাষ্ট্রের প্রত্যন্ত অঞ্চলে কিছু মোবাইল নেটওয়ার্ক সেবাদাতা হুয়াওয়ের থ্রি-জি ও ফোর-জি নেটওয়ার্ক প্রযুক্তির ওপর নির্ভরশীল। সেসব ব্যবহারকারীর কথা বিবেচনা করেই লাইসেন্সের মেয়াদ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।