অ্যান্ড্রয়েড ফোন ব্যবহারকারীদের জন্য আবার আতঙ্ক হয়ে দেখা দিয়েছে ‘জোকার’ ম্যালওয়্যার। অ্যান্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেমচালিত স্মার্টফোনে ম্যালওয়্যাটি গুগল প্লে স্টোরে প্রকৃত অ্যাপের ছদ্মবেশে ঢুকে পড়ে। যখন এটি কারও স্মার্টফোন বা অন্য ডিভাইসে আক্রমণ করে, তখন এটি এসএমএসের অ্যাকসেস নিতে পারে। এ ম্যালওয়্যার ছড়ানো দুর্বৃত্তরা জোকার ব্যবহার করে স্মার্টফোনের কন্টাক্ট লিস্ট ও ডিভাইসের সব তথ্য হাতিয়ে নিতে পারে।
এতে ব্যবহারকারীর প্রাইভেসি বা ব্যক্তিগত গোপন বিষয়গুলো হুমকির মুখে পড়ে যায়। সাইবার নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠান চেকপয়েন্টের বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, তাঁরা জোকার ড্রপার ও প্রিমিয়াম ডায়ালার স্পাইওয়্যার গুগল প্লে স্টোরে খুঁজে পেয়েছেন।
এ বছরের শুরুতে গুগলের পক্ষ থেকে প্লে স্টোরে জোকার ম্যালওয়্যার থাকার বিষয়টি জানানো হয়। ক্ষতিকর এ প্রোগ্রাম মূলত ২০১৭ সাল থেকেই গুগল প্লে স্টোরে রয়েছে। গুগল একে তাদের সবচেয়ে বেশি সময় ধরে মোকাবিলা করতে থাকা ঝুঁকি হিসেবে উল্লেখ করেছে।
ম্যালওয়্যারটি নিয়ে আতঙ্কের কারণ হচ্ছে, প্রাইভেসি নিয়ে দুশ্চিন্তা বাড়ানোর পাশাপাশি জোকার অনেকটাই গোপনে কোনো অ্যাপের সাবসক্রিপশন চালু করে দেয় বা কোনো ওয়েবসাইটের প্রিমিয়াম সেবা বা অ্যাপ কেনাকাটা করতে পারে।
গুগল ইতিমধ্যে ১১টি ক্ষতিকর অ্যাপে এ ম্যালওয়্যার পাওয়ার পর তা সরিয়ে দিয়েছে। নতুন ম্যালওয়্যার সম্পর্কে চেকপয়েন্টের মোবাইল রিসার্চের ব্যবস্থাপক অ্যাভিরান হাজুম বলেন, জোকার আবার রূপ বদল করে ফিরে এসেছে। যেসব অ্যাপ্লিকেশনে জোকার ম্যালওয়্যারটি ছিল, সেগুলো বিশ্লেষণ করে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য হাতিয়ে নিতে দেখা গেছে। এ ক্ষেত্রে গুগলের সুরক্ষা ব্যবস্থা যথেষ্ট নয়।
গুগল প্লে স্টোরে বেশ কিছু জোকার ম্যালওয়্যারযুক্ত অ্যাপ আপলোড হতে দেখা যায়। এগুলো অনেকেই ডাউনলোড করে ফেলেন। গত এপ্রিল মাস থেকে অবশ্য ১১টি অ্যাপ সরানো হলেও এ ম্যালওয়্যারের ঝুঁকি কমেনি। জোকার আবার রূপ বদল করতে পারে। তাই জোকার কীভাবে ক্ষতি করে, তা সবাইকে বুঝতে হবে।
গবেষকেরা বলেন, জোকার নীরবে বিভিন্ন বিজ্ঞাপনভর্তি ওয়েবসাইটের সঙ্গে যোগাযোগ করে এবং মোবাইল থেকে এসএমএস, কনটাক্ট লিস্ট ও ডিভাইসের নানা তথ্য হাতিয়ে নেয় বলে ব্যবহারকারীকেও সতর্ক থাকতে হবে।
অ্যাপ ইনস্টল করার আগে তা নিরাপদ কি না, বিবেচনা করতে হবে। ক্ষতিকর এসব অ্যাপ আপনার অ্যান্ড্রয়েড ফোনে ইনস্টল করা থাকলে তা ব্যক্তিগত তথ্য চুরি ছাড়াও অজান্তে মোবাইলের টাকা শেষ করে করে ফেলতে পারে। এর আগে গুগলের পক্ষ থেকে ক্ষতিকর কয়েকটি অ্যাপ সরিয়ে ফেলতে বলা হয়। সেগুলো হচ্ছে বিচ ক্যামেরা, মিনি ক্যামেরা, সার্টেন ওয়ালপেপার, রেডওয়ার্ড ক্লিন, এজ ফেস, অল্টার মেসেজ, সবি ক্যামেরা, ডিক্লেয়ার মেসেজ, ডিসপ্লে ক্যামেরা, র্যাপিড ফেস স্ক্যানার, লিফ ফেস স্ক্যানার, ব্রড পিকচার এডিটিং, কিউট ক্যামেরা, ড্যাজল ওয়ালপেপার, স্পার্ক ওয়ালপেপার, ক্লাইমেট এসএমএস, গ্রেট ভিপিএন, হিউমার ক্যামেরা, প্রিন্ট প্ল্যান স্ক্যান, অ্যাডভোকেট ওয়ালপেপার, রুডি এসএমএস মড, ইগনাইট ক্লিন, অ্যান্টিভাইরাস সিকিউরিটি-সিকিউরিটি স্ক্যান, অ্যাপ লক, কোলাট ফেস স্ক্যানার প্রভৃতি।