আপনি হয়তো ভাবছেন এটা তো সবাই জানে।নতুন করে জানার কী আছে, তাই না? আসলে এর ভেতর অনেক কিছু জানা বোঝার আছে। সাধারণভাবে আমরা জানি, গাছের আপেলটি আকাশের দিকে না উঠে মাটিতে পড়ে, কারণ পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণ শক্তি আপেলটিকে মাটির দিকে টেনে নামায়, ওপরের দিকে যেতে দেয় না। এ টুকুই আইজ্যাক নিউটনের আবিষ্কার বলে আমরা হয়তো জানি। এটা ভুল না, তবে আরও কথা আছে।
তিনি আসলে আবিষ্কার করেন যে, বিশ্বের যেকোনো বস্তু একে অপরকে আকর্ষণ করে।সুতরাং শুধু পৃথিবী আপেলকে টানছে তা-ই নয়, আপেলও পৃথিবীকে তার দিকে টানছে। কিন্তু কে কাকে কত জোরে টানছে? সেটা নির্ভর করে বস্তুগুলো কোনটা কত বড় তার ওপর। বড় বস্তু বেশি জোরে, ছোট বস্তু কম জোরে টানছে। তাই আমরা বলব, আপেলটিও পৃথিবীকে একটু হলেও টানছে। অবাক হবেন শুনলে যে সেই টানে পৃথিবী একটুখানি হলেও এগিয়ে যায়, সেটা যত কমই হোক। এগিয়ে যাওয়ার এই দূরত্ব একটি মৌলিক পদার্থের পরমাণুর কেন্দ্রের (অ্যাটমিক নিউক্লিয়াস) আকারের চেয়েও কম। হাজার রকম হিসাব করেও এই সামান্য সরে আসার পরিমাণ আমরা ধরতে পারব না।
কিন্তু খাতা-কলমের হিসাবে পৃথিবীও নড়ে যায়, যত সামান্যই হোক। তাই আমরা বলতে পারি, নিউটন গাছ থেকে আপেল পড়তে দেখে যে আবিষ্কারটি করেছিলেন, তা হলো মহাকর্ষ বলের সাধারণ সূত্র। এটি বলছে, বিশ্বের প্রতিটি বস্তু যার যার ভরের (ওজন নয়) সমানুপাতে পরস্পরকে আকর্ষণ করে। এই আকর্ষণ বল হলো বস্তু দুটির ভরের গুণফলকে তাদের কেন্দ্রের দূরত্বের বর্গফল দিয়ে ভাগ করলে যে সংখ্যাটি পাওয়া যাবে তার আনুপাতিক। অর্থাৎ বস্তু দুটির ভর যদি M ও m হয় এবং তাদের দুই কেন্দ্রের দূরত্ব যদি d হয় তাহলে তাদের মধ্যে কার্যকর মহাকর্ষ বল α (M×m) / (d)২ । এখানে α হচ্ছে সমানুপাতের প্রতীক। অথবা সরাসরি সূত্রটি হলো: মহাকর্ষ বল = G (M×m) / (d)২ । এখানে G হলো সাধারণ মহাকর্ষ বলের নিউটন ধ্রুবক (নিউটনস কনস্ট্যান্ট অব ইউনিভার্সাল গ্র্যাভিটি)।
আগামী রোববার অনলাইনে দেখুন ‘কৃত্রিম সূর্য’ সম্পর্কে চমকপ্রদ তথ্য।
আব্দুল কাইয়ুম, সম্পাদক, মাসিক ম্যাগাজিন বিজ্ঞানচিন্তা
quayum@gmail.com