বিশ্বজুড়ে আইফোনের চাহিদা কমছে। ২০১৯ সালের প্রথম প্রান্তিকে আইফোনের চাহিদা আরও কমবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চিটি রিসার্চের বিশ্লেষণে আইফোনের চাহিদা কমতে দেখা হেছে। বিশেষ করে ২০১৯ সালের প্রথম তিন মাসে আইফোন এক্সএস ম্যাক্সের চাহিদা কমবে।
চিটি রিসার্চ জানিয়েছে, বছরের প্রথম প্রান্তিকে আইফোনের চাহিদার যে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছিল, প্রকৃতপক্ষে তা কমে যাবে। ওই সময় পাঁচ কোটি ইউনিটের পরিবর্তে সাড়ে চার কোটি ইউনিট আইফোনের চাহিদা থাকবে। এর মধ্যে সাড়ে ছয় ইঞ্চি মাপের আইফোন এক্সএস ম্যাক্সের চাহিদা ৪৮ শতাংশ কমবে।
চিটির বিশ্লেষক উইলিয়াম ইয়াং বলেছেন, আইফোনের চাহিদা কমবে, যা সাপ্লাই চেইন ব্যবসায়ীদের জন্য সুখবর নয়।
আইফোন এক্সএস ম্যাক্স অ্যাপলের সবচেয়ে দামি ফোন। এর দাম শুরু হচ্ছে ১ হাজার ৯৯ মার্কিন থেকে।
এর আগেও আইফোনের চাহিদা কমার খবর প্রকাশ করেছিল প্রযুক্তিবিষয়ক সাইটগুলো। এর আগে ব্লুমবার্গের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, অ্যাপলের পণ্য সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর অন্যতম জাপান ডিসপ্লে। প্রতিষ্ঠানটির মোট রাজস্বের অর্ধেকের বেশি আসে অ্যাপলের কাছে সরঞ্জাম বিক্রির মাধ্যমে। আইফোনের চাহিদা কমে যাওয়ায় প্রতিষ্ঠানটি তাদের রাজস্ব পূর্বাভাস কমিয়েছে। এ ছাড়া আইফোনের ফেসিয়াল রিকগনিশন সেন্সর সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান লুমেনটাম হোল্ডিংসও তাদের দ্বিতীয় প্রান্তিকে রাজস্ব পূর্বাভাস কমিয়েছে।
ব্লুমবার্গ ইন্টেলিজেন্সের বিশ্লেষক উ জিন হো বলেন, অ্যাপলের ওপর তাঁদের পণ্য সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানগুলো বেশি নির্ভরশীল। এর ফলে সাপ্লাই চেইনে ক্রমবর্ধমানভাবে ঝুঁকি বাড়ছে।
গত নভেম্বরে বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, সাশ্রয়ী দামের আইফোন হিসেবে বাজারে আসা এক্সআর মডেলের চাহিদা কম। নতুন আইফোনের নির্মাতা ফক্সকন ও পেগাট্রনকে উৎপাদন কমাতে বলেছে অ্যাপল কর্তৃপক্ষ। বড় প্রতিষ্ঠানগুলোর পাশাপাশি প্রয়োজনে ছোট প্রতিষ্ঠানকে প্রস্তুত রেখেছে অ্যাপল। শুরুতে আইফোন এক্সআর মডেলের জন্য ৬০টি প্রডাকশন লাইন প্রস্তুত রেখেছিল ফক্সকন। কিন্তু চাহিদা কম থাকায় বর্তমানে ৪৫টি প্রডাকশন লাইনে কাজ হচ্ছে।
শুধু আইফোন এক্সআর মডেল নয়, ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল বলছে, গত সেপ্টেম্বর মাসে যে নতুন তিন মডেলের আইফোনের ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল, সব কটির উৎপাদন কমিয়েছে অ্যাপল।
ওয়াল স্ট্রিটের বিশ্লেষকেরা নতুন আইফোনের চাহিদা সম্পর্কে যে পূর্বাভাস দিয়েছিলেন, অ্যাপল তার চেয়েও কম ডিভাইস বিক্রির ঘোষণা দিয়েছে। বিষয়টি বিভিন্ন যন্ত্রাংশ নির্মাতাদের জন্যও সতর্কবার্তা হিসেবে এসেছে। নতুন ফোনের চাহিদা কমে যাওয়ায় স্ক্রিন নির্মাতা জাপান ডিসপ্লে ইনকরপোরেশন তাদের পুরো বছরের পরিকল্পনা পরিবর্তন করেছে।
অ্যাপলের তিনটি মডেলের নতুন আইফোনের মধ্যে সবচেয়ে চাহিদা কম আইফোন এক্সআরের। অ্যাপল এ মডেলের আইফোনের উৎপাদন এক-তৃতীয়াংশ কমিয়েছে। গত অক্টোবর মাস থেকে এই মডেলের আইফোন বিক্রি শুরু করে অ্যাপল। সেপ্টেম্বর থেকে বিক্রি শুরু হয় আইফোন এক্সএস ও আইফোন এক্সএস ম্যাক্সের।