>
২৬ এপ্রিল মুক্তি পেল অ্যাভেঞ্জার্স: এন্ডগেম ছবিটি। মুক্তি পাওয়ার আগে থেকেই দুনিয়া জুড়ে তৈরি হয়েছিল উন্মাদনা। প্রথম সপ্তাহেই ১২০ কোটি ডলার ব্যবসা করে সিনেমাটি। এই ছবি নির্মাণের পেছনে রয়েছে প্রযুক্তির ব্যাপক আয়োজন। অ্যাভেঞ্জার্স: এন্ডগেম ছবির পেছনের কথা নিয়েই প্রচ্ছদ প্রতিবেদন। লিখেছেন ওয়াহিদ ইবনে রেজা।
কিছুদিন আগে মুক্তি পেল অ্যাভেঞ্জার্স: এন্ডগেম। ২১টি সিনেমার মাধ্যমে যে বিশাল মার্ভেল সিনেমাটিক ইউনিভার্স সৃষ্টি হয়েছিল, তার একটা চমৎকার সমাপ্তি হলো এর মধ্য দিয়ে। প্রথম সপ্তাহেই সারা পৃথিবীতে ১২০ কোটি মার্কিন ডলার ব্যবসা করে সিনেমাটি। সমালোচক থেকে দর্শক, প্রায় সবারই মন জয় করে নিয়েছে সিনেমাটি। এত বিশাল একটি সিনেমা কী করে পর্দায় উঠে আসে ভিএফএক্সের প্রতিটি ধাপের হাত ধরে, তার একটা ছোট্ট ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করব এই লেখায়।
সুচারু পরিকল্পনা
এমন বিশাল একটি আয়োজন সম্পন্ন করতে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যে জিনিসটা লাগে তা হচ্ছে পরিকল্পনা, পরিকল্পনা এবং পরিকল্পনা। পাঠক জানলে অবাক হবেন যে যখন আমাদের স্টুডিও মেথডে ইনফিনিটি ওয়ার–এর কাজ মাত্র শুরু হচ্ছে ২০১৭–এর শুরুর দিকে, তখনই একটা খুব গোপন সভা হয় আমাদের সঙ্গে মার্ভেলের। সভার মূল বিষয়বস্তু ছিল এন্ডগেম–এর জন্য গবেষণা শুরু করা। চরিত্ররা দেখতে কেমন হবে, কেমন পোশাক (কস্টিউম) পরবে, পরিবেশ কেমন হবে, কোয়ান্টাম জগৎ যে দেখানো হবে, তা দেখতে কেমন হবে ইত্যাদি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয় সেই সভায়। যেহেতু এই ধরনের কাজ বেশ কষ্টকর, স্টুডিও চেষ্টা করে যতটা সম্ভব গবেষণা রিসার্চ আগেভাগে করে ফেলতে, যাতে মূল কাজের সময় পরিস্থিতি বেশি কঠিন না হয়ে যায়।
ভিএফএক্স কোম্পানিগুলো কাজ শুরু করার আগে ক্লায়েন্ট বা স্টুডিও কাজ শুরু করে। এ ক্ষেত্রে মার্ভেল কিছু কাজ করে রাখে। পরিচালক, প্রোডাকশন ডিজাইনার, শিল্প নির্দেশক আর কনসেপ্ট আর্টিস্ট মিলে কনসেপ্ট ড্রয়িং করেন। খুব ডিটেইল ড্রয়িং করা হয়। আয়রনম্যানের স্যুট থেকে ক্যাপ্টেন আমেরিকার শিল্ড, সব আঁকা হয়। প্রতিটি নতুন সিনেমার জন্য নতুন করে এবং সেই কনসেপ্টেরও বেশ ধাপ থাকে। চকচকে আয়রন ম্যান থেকে শুরু করে মার খেয়ে ভাঙাচোরা আয়রনম্যানের কনসেপ্ট, সব করা হয়। এই কনসেপ্টগুলো রেফারেন্স হিসেবে কাজ করে ভিএফএক্স কোম্পানিগুলোর কাছে।
এই রেফারেন্স নিয়ে যে বিভাগগুলো কাজ করে, তাদের একত্রে বলা হয় অ্যাসেট ডিপার্টমেন্ট। অ্যাসেট ডিপার্টমেন্টের মধ্যে অন্য ধাপগুলো, মানে অন্য মডেলিং, টেক্সচারিং, লুকডেভ ও রিগিং থাকে। মডেলিং বিভাগের কাজ তো নামেই বোঝা যাচ্ছে। এই মডেল আবার দুই ধরনের হয়, হার্ড সারফেস মডেল ও অর্গানিক মডেল। আয়রনম্যান বা ওয়ার মেশিনের স্যুটগুলো বা মহাকাশযানগুলো হচ্ছে হার্ড সারফেসের মডেল। অন্যদিকে থেনোস বা হাল্কেরটি হবে অর্গানিক মডেল।
চরিত্রের রং–রূপ
মডেল তৈরি হয়ে গেলে কাজ শুরু করে টেক্সচারিং। যেকোনো বস্তুর গায়ে যে বৈশিষ্ট্য মানে ডিটেইলটা থাকে, টেক্সচারিংয়ের কাজ হচ্ছে সেই ডিটেইলটা দেওয়া। থেনোসের খসখসে চোয়াল, ক্যাপ্টেন আমেরিকার শিল্ডের গায়ে দাগ, এগুলো সব টেক্সচারিংয়ে করা হয়।
টেক্সচারিংয়ের পর কাজ শুরু হয় লুকডেভের। যে মডেলটি করা হয়েছে, তার লুক আর ফিল ঠিক করাই হচ্ছে এই বিভাগের কাজ। এখন চিন্তা করে দেখেন, আয়রন ম্যানকে দেখতে যদি প্লাস্টিক ম্যানের মতো লাগে, তাহলে কি মানাবে? বা হাল্ক যদি হঠাৎ সবুজের বদলে বেগুনি হয়ে যায়, তাহলে চলবে? এটাই নিশ্চিত করে লুকডেভ বিভাগ।
এরপর এই অ্যাসেটগুলোর মধ্যে যেগুলো অ্যানিমেট করতে হবে, সেগুলো চলে যায় রিগিংয়ে। অন্যগুলো চলে যায় সরাসরি শটে। যে অ্যাসেটগুলো সেটের এক্সটেনশন, যেমন বিভিন্ন গ্রহ, ঘরবাড়ি, দালানকোঠা, যেসব অবকাঠামো নড়ছে না সিনেমার পর্দায়, সেগুলো রিগিংয়ের মধ্য দিয়ে যেতে হয় না। কিন্তু আয়রন ম্যানের স্যুট থেকে থেনোস এবং থেনোসের স্পেস শিপ, এই সবকিছুর মডেল যেতে হয় রিগিংয়ের মধ্য দিয়ে।
রিগিং বিভাগের কাজটা একটা উদাহরণ দিয়ে কিছুটা হয়তো বোঝানো যায় সহজ করে। ধরুন আমরা যদি আমাদের হাত নাড়াতে চাই, কী হয়? আমাদের মস্তিষ্ক আমাদের হাত নাড়াতে একটা সংকেত পাঠায়। স্নায়ু বা নার্ভ সিস্টেম দিয়ে সংকেতটা আসে। হাতের মাংসপেশি এবং হাড়ের সাহায্যে আমরা এই সংকেত কার্যকর করতে পারি, মানে হাতটা নাড়াতে পারি। ভিএফএক্সের ভাষায় হাতটাকে অ্যানিমেট করতে পারি। রিগিংয়ের কাজ হচ্ছে হাড় এবং পেশির মতো অঙ্গে অ্যানিমেট করার জন্য অ্যানিমেটরদের টুল বা উপাদান দেওয়া। যখন আয়রনম্যান উড়ছে বা থেনোস মুখের অভিব্যক্তি দিচ্ছে, জানবেন তা সম্ভব হচ্ছে রিগিংয়ের দেওয়া নিয়ন্ত্রণের জন্য।
শুটিং যেভাবে
এর মধ্যে কিন্তু সিনেমার শুটিং হয়ে গেছে। শুটিংয়ে যাওয়ার আগে স্টোরিবোর্ড থেকে এমন বড় মাপের সিনেমা যা করে তা হচ্ছে, খুব কম বাজেটের মধ্যে পুরো সিনেমাটির থ্রিডি অ্যানিমেটেড সংস্করণ তৈরি করে ফেলে। খুব সাধারণ প্রাথমিক স্তরের অ্যানিমেশন। এর মাধ্যমে ক্যামেরা কেমন হবে, লেন্স কী থাকবে, কোথায় কোন চরিত্র থাকবে ইত্যাদি সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা পাওয়া যায়। এই স্টেপকে বলে প্রি-ভিজ্যুয়ালাইজেশন, সংক্ষেপে প্রি-ভিজ। পরিচালকেরা প্রি-ভিজ নিয়ে সিনেমা শুটিং শুরু করেন। তাই এমন বিশাল দক্ষযজ্ঞ কিছুটা সামলানো যায়।
প্রি-ভিজ দেখে ভিএফএক্স কোম্পানিগুলোও ধারণা পায় কী ধরনের কাজ সিনেমাতে থাকবে। শুটিংয়ের পরে পরিচালক ও স্টুডিওর লোকজন আরেকটা ভিজ্যুলাইজেশন করেন। একে বলে পোস্ট ভিজ্যুয়ালাইজেশন, সংক্ষেপে পোস্ট ভিজ। প্রি-ভিজে তো সবই ত্রিমাত্রিক (থ্রিডি) অ্যানিমেশন। পোস্ট ভিজে আমরা দেখি আসল অভিনেতাদের, আসল সেটগুলোকে। সঙ্গে থাকে রাফ অ্যানিমেশন করে দেখানো কোথায় কোথায় কেমন ভিএফএক্সের কাজ করতে হবে। এরপর শুরু হয় শটের কাজ, মানে একটি একটি দৃশ্য তৈরির কাজ।
ধাপে ধাপে দৃশ্যায়ন
সিনেমার শটের কাজগুলোকে মূলত তিন ভাগে ভাগ করা হয়। আপ স্ট্রিম, মিড স্ট্রিম ও ডাউন স্ট্রিম বিভাগ। আপ স্ট্রিমে থাকে ম্যাচমুভ, রাফ লে–আউট, অ্যানিমেশন ও ফাইনাল লে–আউট। মিড স্ট্রিমে থাকে সিএফএক্স, এফএক্স, ম্যাট পেইন্টিং এবং ডাউন স্ট্রিমে থাকে লাইটিং, রোটো, পেইন্ট, কম্পোজিটিং ও স্টেরিও। ম্যাচমুভের কাজটা খুব কারিগরি। এই জন্য ম্যাচমুভের অধিকাংশ কাজ বাইরে থেকে করানো হয় (আউটসোর্সিং)। আসলে আমরা যখন শুটিং করি, তখন তো আমাদের সঙ্গে কম্পিউটারের তৈরি হওয়া উপাদান (কম্পিউটার জেনারেটেড বা সিজি এলিমেন্ট) কী কী হবে তা আমরা জানি না। ম্যাচমুভের কাজটা হচ্ছে শট আসার পর, যাকে ভিএফএক্সের ভাষায় প্লেট বলে, সেই প্লেটের ত্রিমাত্রিক পরিসরটা বুঝিয়ে দেওয়া এবং ক্যামেরা নির্ধারণ করে দেওয়া। ম্যাচমুভের পর কাজ শুরু হয় রাফ লে–আউটের। এই কাজ খুব গুরুত্বপূর্ণ। বিশাল আয়োজনের এই যে যুদ্ধের দৃশ্য আমরা এন্ডগেম–এ দেখি, তার কোথায় কোন অবস্থানে কোন কোন চরিত্র থাকবে তার সবই নির্ধারণ হয় এই রাফ লে–আউটে। এরপর শুরু হয় অ্যানিমেশন। ততক্ষণে মডেলের রিগ হয়ে গেছে। অ্যানিমেশন করার জন্য সব চরিত্র প্রস্তুত। তা সে থেনোস হোক বা আয়রন ম্যান। অ্যানিমেশন শেষ হলে চূড়ান্ত লে–আউট কাজ শুরু করে।
চূড়ান্ত লে–আউট নিশ্চিত করে যে অ্যানিমেশনের পর ক্যামেরা আর পরিবর্তন করতে হবে না, চরিত্রদের চূড়ান্ত অবস্থানও নিশ্চিত করে এই বিভাগ। ধরুন একটা শটে মারামারি করছে আয়রন ম্যান আর থেনোস। রাফ লে–আউটে পজিশন আর ক্যামেরা এক রকম ছিল। অ্যানিমেশনে গিয়ে পরিচালক বা ভিএফএক্সের সুপারভাইজারদের নির্দেশনায় দেখা গেল, মারামারি করতে করতে তারা ক্যামেরার বাইরেই চলে যাচ্ছে, তাহলে? এই জন্য চূড়ান্ত লে–আউট নিশ্চিত করে যে ক্যামেরা আর অবস্থান যেন সৃজনশীলভাবে সবার মনমতো হয় এবং পরবর্তী বিভাগগুলোর যেন কোনো সমস্যা না হয় কাজ এগিয়ে নিয়ে যেতে।
পোশাক ও সূক্ষ্ম উপাদান তৈরি
এরপর শুরু হয় মিড স্ট্রিম বা সিএফএক্স, এফএক্স ও ম্যাট পেইন্টিং বিভাগের কাজ, যা একই সঙ্গে সমান্তরালভাবে চলে। সিএফএক্সের বিভাগটি একেক স্টুডিওতে একেক নামে পরিচিত। মূলত কাপড় এবং চুল বা পশমের অ্যানিমেশনের কাজ এখানে হয়। বুঝতেই পারছেন, তাই যখনই এন্ডগেম–এ রকেট ড়্যাকুনকে দেখা যায়, তখন এই বিভাগ ছিল খুবই ব্যস্ত। এফএক্সের কাজটা বেশ মজার এবং কঠিনও। শৈল্পিক হওয়ার পাশাপাশি প্রোগ্রাম লেখার (কোডিং) ধারণাও লাগে এফএক্সে। বিস্ফোরণ থেকে শুরু করে ধুলো উড়ছে বা আগুনের গোলা বের হচ্ছে, আয়রনম্যানের হাত থেকে সবই হচ্ছে এফএক্সের কাজ। ম্যাট পেইন্টিং কাজটি খুব শৈল্পিক। দূরে দেখা যাচ্ছে গ্রহ বা সভ্যতার চিহ্ন, ক্যামেরা নড়ছে না, তাই প্যারালাক্সের ভয় নেই, এমন জায়গায় ম্যাট পেইন্টিং বসে যায় সুন্দর করে। ভিএফএক্সের এই বিভাগের কল্যাণে সিনেমার প্রায় সব আকাশই এখন কম্পিউটারে আঁকা হয়। এরপর শুরু হয় ডাউন স্ট্রিম ডিপার্টমেন্টের কাজ। এই পর্যায়ে রোটোস্কোপিং আর পেইন্টিংয়ের অধিকাংশ কাজ বাইরে থেকে করিয়ে আনা হয়। সিজি উপাদান থাকুক আর না থাকুক, প্রায় সব শটেই এই দুই বিভাগ বেশি কাজ করে। মূলত এই ধরনের কাজ হচ্ছে ক্লিন আপ কাজ। ক্যামেরার প্রতিফলন মোছা থেকে শুরু করে কোনো দৃশ্য থেকে সবুজ পর্দা মোছা, অনেক কাজ থাকে এই দুই বিভাগের।
এদিকে সমান্তরালভাবে চলতে থাকে আলোর কাজ। লাইটিং বিভাগের কাজের সুবিধার জন্য শুটিং চলাকালে ভিএফএক্স দল প্রতিটি শটে আলোর সেটআপ কী রকম ছিল, তার তথ্য নিয়ে আসে। এই তথ্য মোতাবেক ভিএফএক্স আলো নির্দেশকেরা তাঁদের সেটআপ শুরু করেন সিজি চরিত্রগুলোকে আলোকিত করার জন্য। যাতে দেখে মনে হয়, একটি দৃশ্যের সবকিছুতে একইভাবে আলোর কাজ করা হয়েছে। আর তাই তো একই সঙ্গে যখন সব অ্যাভেঞ্জার্স সত্যিকারের সব অভিনেতার পাশাপাশি দাঁড়ায়, কম্পিউটারে বানানো আয়রনম্যান বা হাল্ককে তখন মনে হয় না যে আলাদা করে বসানো হয়েছে। তাদেরকেও একই রকম বাস্তব লাগে।
আর্টিস্টিং ভিএফএক্সের জায়গা থেকে এর পরের ধাপটা হচ্ছে শেষ, যাকে বলে কম্পোজিটিং বা কম্প। এই কম্প বিভাগে এতক্ষণ ধরে হয়ে আসা সব বিভাগের কাজগুলো আসে। কম্প আর্টিস্টরা নিশ্চিত করেন লুক এবং ফিলের দিক থেকে সব ঠিক লাগছে। নিশ্চিত করেন যে সিজি ও বাস্তব উপাদানের মধ্যে কোনো পার্থক্য থাকছে না।
কম্পের কাজ শেষ হলে বোঝা যায়, সিনেমাটা দেখতে কেমন হবে। তারপরও অবশ্য শেষ হইয়াও হইল না শেষ। থাকে স্টেরিও ডিপার্টমেন্টের কাজ। স্টেরিও একটি সিনেমাকে ত্রিমাত্রিক (থ্রিডি) বানিয়ে ফেলে। যাতে চশমা পরে সেই সংস্করণ আমরা হলে বসে দেখতে পারি। কম্পে এসে যখন একটি শটের কাজ একে একে জমা হয়ে বিভিন্ন উপাদান একেকটা স্তর হয়ে যায়, স্টেরিওতে এসে সেই উপাদানগুলোর গভীরতা বা ডেপথ নিয়ে খেলা হয়। এই জন্যই কোনো কোনো বিেস্ফারণের দৃশ্যে মনে হয় পর্দা থেকে বের হয়ে আমাদের গায়ে এসে কিছু একটা লাগবে।
মহাযজ্ঞে একসঙ্গে অনেকে
এন্ডগেম–এর মতো বড় সিনেমাগুলোতে সাধারণত অনেক ভিএফএক্স স্টুডিও একসঙ্গে সমান্তরালভাবে কাজ করে। যাতে সময় বাঁচে এবং একসঙ্গে অনেক কাজ করা যায়। একেক স্টুডিও একেক অ্যাসেটের দায়িত্ব পায় এবং সেই অ্যাসেট যেই দৃশ্যগুলোতে থাকে, সেই দৃশ্যগুলোতে কাজ করার সুযোগ পায়। আবার এই সব স্টুডিওর মধ্যে বিভিন্ন অ্যাসেটের আদান–প্রদানও হয়। সবাই নিশ্চিত করে যেন সব কোম্পানিতে শটগুলো দেখতে এক রকম হয়, যাতে পুরো ছবিতে খাপছাড়া ব্যাপার না থাকে।
এতক্ষণ ধরে যে ডিপার্টমেন্টগুলোর কথা বললাম, এই পুরো ব্যাপারটা ম্যানেজ করার বা সামলানোর কাজ হচ্ছে প্রোডাকশন ডিপার্টমেন্টের। আমি নিজে এই বিভাগে কাজ করি। আমাদের মূল লক্ষ্য থাকে গাড়ি (এ ক্ষেত্রে সিনেমার শট) যে স্টেশনে যাওয়ার কথা, সে স্টেশনেই যেন সময়মতো পৌঁছায়। হাজার হাজার মানুষ কাজ করে এ রকম একেকটি সিনেমায়। সেটে এবং ভিএফএক্সে মিলিয়ে। প্রত্যেকের কাজ আলাদা আলাদা করে গুরুত্বপূর্ণ। কোনো কাজ আপাতদৃষ্টিতে ছোট মনে হলেও আসলে সবই সমান। কারণ, ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বালুকণা বিন্দু বিন্দু জল থেকেই তো মহাসাগর হয়, তা–ই না? আশা করি আপনারা কিছুটা হলেও ভিএফএক্স কাজের মহাসাগর সম্পর্কে এই লেখা থেকে কিছুটা ধারণা পেলেন।
লেখক: অ্যাসোসিয়েট প্রোডাকশন ম্যানেজার, সনি পিকচারস ইমেজওয়ার্কস, কানাডা