সাফজয়ী ওঁরা ২৩ জন

মণিকা চাকমা

সাফ ফুটবলে পাঁচ ম্যাচেই অপরিবর্তিত একাদশ নিয়ে মাঠে নেমেছে বাংলাদেশ। আরও ছয়জন খেলেছেন বদলি হিসেবে। ছয়জন মাঠে নামার সুযোগ পাননি। তারপরও সবাই এই বিজয়ের অংশীদার। সাফজয়ী বাংলাদেশ দলের ২৩ খেলোয়াড়ের সংক্ষিপ্ত পরিচিতি লিখেছেন বদিউজ্জামান

মণিকা চাকমা, মিডফিল্ডার
মণিকা চাকমা, মিডফিল্ডার

২০১৯ সালে বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে আয়োজিত হয়েছিল অনূর্ধ্ব-১৯ বঙ্গমাতা আন্তর্জাতিক গোল্ডকাপ। সেমিফাইনালে মঙ্গোলিয়ার বিপক্ষে ৩-০ গোলে জয়ের ম্যাচে চোখধাঁধানো ১টি গোল করেন মণিকা চাকমা। ওই সপ্তাহে ফ্যানস ফেবারিট নামের ক্যাটাগরিতে ফিফা যে গোলকে উল্লেখ করেছিল ‘ম্যাজিক্যাল চাকমা’ বলে।

বাংলাদেশের ফুটবলে মণিকার জাদুকরি ছোঁয়া অবশ্য এর আগে থেকেই শুরু হয়েছে। বয়সভিত্তিক দলের মতো জাতীয় দলেও মাঝমাঠে আস্থার প্রতীক মণিকা। এবারের মেয়েদের সাফও এর ব্যতিক্রম ছিল না। 

মণিকার বাড়ি খাগড়াছড়ির লক্ষ্মীছড়ি উপজেলার দুর্গম সুমন্তপাড়া গ্রামে। কিন্তু বেড়ে ওঠা রাঙামাটির কাউখালী উপজেলার ঘাগড়াতে। ২০১০ সালে লক্ষ্মীছড়ির মরাচেঙ্গী সরকারি স্কুলের হয়ে প্রথম খেলেন বঙ্গমাতা স্কুল ফুটবলে।

এরপর ২০১২ সালে চট্টগ্রামে বিভাগীয় পর্যায়ে খেলতে আসেন। সেখানেই রাঙামাটির মগাছড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বীর সেন চাকমার নজরে পড়েন। মণিকাকে তিনি ভর্তি করে নেন মগাছড়ি স্কুলে। ২০১৩ সালে এই স্কুল বঙ্গমাতা ফুটবল টুর্নামেন্টে রানার্সআপ হয়। ২০১৪ সালে রাঙামাটিতে অনূর্ধ্ব-১৪ ফুটবলার বাছাই হয়েছিল বাফুফের। ওই বাছাইয়ে টিকে জাতীয় বয়সভিত্তিক দলে ডাক পান। এরপর আর পেছনে তাকাতে হয়নি।

বাবা বিন্দু কুমার কখনোই চাইতেন না মেয়ে ফুটবল খেলুক। কিন্তু মণিকাকে যে তখন পেয়ে বসেছে ফুটবলের নেশা। বাবার চোখ ফাঁকি দিয়ে পাড়ার ছেলেদের সঙ্গে তাই ফুটবল খেলতে বেরিয়ে পড়তেন মণিকা। সঙ্গী হতেন বড় বোন অনিকা চাকমাও। এখন আর ফুটবল খেলায় কোনো বাধা নেই। আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশে স্নাতকে পড়া মণিকার নামেই বরং এখন জেগে ওঠে রাঙামাটি।