অভিষেকেই চমকে দিলেন কনস্টাস
অভিষেকেই চমকে দিলেন কনস্টাস

উইকিপিডিয়ায় ‘ফাদার অব বুমরা–কোহলি’ কনস্টাস

কবি ও চিন্তক ফরহাদ মজহারের বিখ্যাত একটি কবিতার লাইন, ‘আমাকে তুমি দাঁড় করিয়ে দিয়েছ বিপ্লবের সামনে।’ সেই লাইনটিকে একটু বদলে যশপ্রীত বুমরা আজ বলতে পারেন, ‘আমাকে তুমি দাঁড় করিয়ে দিয়েছ কনস্টাস–ঝড়ের সামনে।

এক ওভারে ১৮ রান দেওয়া খুব বড় কিছু নয়। ‘বাজবল’ ও টি–টোয়েন্টি যুগে এর চেয়ে বেশি রানও বোলারদের দিতে দেখা যায়। কিন্তু বোলারের নাম যদি বুমরা ও ব্যাটসম্যান যদি হন ১৯ বছর বয়সী অভিষিক্ত তরুণ, তবে ঘটনাটা নড়েচড়ে বসার মতোই।

আজ মেলবোর্নে তেমন ঘটনার জন্ম দিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ান ওপেনার স্যাম কনস্টাস। এই মুহূর্তে অনেকের চোখে বিশ্বসেরা বোলারকে যে অবলীলায় চার–ছক্কা মেরেছেন, তা হজম করতে বুমরার আরও অনেক দিন লেগে যেতে পারে। এমনকি সেই ঝড়ে এলোমেলো হয়েছে কনস্টাসের উইকিপিডিয়া পাতাও।

আজ এমসিজিতে ইনিংসের শুরুতে বুমরার করা প্রথম ওভার মেডেন দিয়েই শুরু করেছিলেন কনস্টাস। দ্বিতীয় ওভারে নিলেন ২ রান। এরপর বুমরার করা তৃতীয় ওভারেও মেডেন দেন কনস্টাস। বিশ্বের অন্যতম সেরা পেসারের সামনে অভিষিক্ত ব্যাটসম্যানের এমন হাঁসফাঁস দশা মোটেই অতিরিক্ত কিছু মনে হয়নি। বুমরার প্রথম ১৮ বলে কনস্টাস করলেন মাত্র ২ রান।

যশপ্রীত বুমরার এক ওভারে ১৮ রান নিয়েছেন স্যাম কনস্টাস
এএফপি

কিন্তু ঝড় উঠল বুমরার করা ম্যাচের সপ্তম ওভারে। প্রথম বলে স্কুপ করে চার মেরে শুরুটা করলেন কনস্টাস। সেই ওভারে ২ চার ও ১ ছক্কায় আসল ১৪ রান। টেস্ট ক্যারিয়ারে মাত্র তৃতীয়বার এক ওভারে ১৪ বা এর বেশি রান খরচ করার অভিজ্ঞতা হলো বুমরার। টেস্টে নিজের সর্বশেষ ৪৪৮৩ বলের মধ্যে প্রথম ছক্কা খাওয়ার অভিজ্ঞতাও। কিন্তু সেটা ছিল শুধু ‘ট্রেলার’।

১১তম ওভারে ফের বুমরাকে পেয়ে কনস্টাস যেন আরও আগ্রাসী। সেই ওভারে বুমরার ওপর ঝড়ের গতি আরও বাড়িয়ে ১৮ রান নেন তরুণ এ ওপেনার, যা এক ওভারে বুমরার দেওয়া সর্বোচ্চ রান। এই ওভারে ২ চার ও ১ ছক্কার সঙ্গে ছিল দুটি ডাবলসও। তবে কত রান নিয়েছেন তার চেয়েও বড় হয়ে উঠেছেন, যেভাবে নিয়েছেন সেটির জন্য।

বুমরার বিপক্ষে স্কুপ, রিভার্স স্কুপ এবং র‍্যাম্প শটে যেভাবে রীতিমতো মুগ্ধতা ছড়িয়েছেন। কে বলবে আজকেই অভিষেক হলো তাঁর! যে বোলারের বিপক্ষে উইকেট বাঁচিয়ে রাখাকেই অনেকে সাফল্য মনে করেন, তাঁকেই কিনা এমন তুলাধোনা করলেন!

ফিফটির পর স্যাম কনস্টাস

কনস্টাসের এই ঝড়ের প্রভাব পড়ল উইকিপিডিয়ার পেজেও। কনস্টাসকে নিয়ে তথ্য হালনাগাদ করার পাশাপাশি যোগ করা হলো বিশেষণও। যেমন বুমরার বিপক্ষে ঝোড়ো ব্যাটিংয়ের পর লেখা হলো, ‘সে যশপ্রীত বুমরার বাবা।’

উইকিতে অবশ্য যে কেউ তথ্য সংযোজন–বিয়োজন করতে পারেন। ফলে কনস্টাসের ব্যাটিং ঝড় দেখে নেটিজেনরা রীতিমতো ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন। বিরাট কোহলি যখন তাঁকে কাঁধ দিয়ে ধাক্কা দিয়ে দ্বন্দ্বে জড়ালেন, তখন লেখা হলো, ‘সে বিরাট কোহলিরও বাবা।’

উইকপিডিয়ার সম্পাদকেরা অবশ্য এসব তথ্য দ্রুত সরিয়ে নিয়েছেন। কিন্তু তার আগেই ভাইরাল হয়ে যায় সংশোধনের আগের তথ্য। ফলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এখনো ঢুকলে দেখা যাচ্ছে কনস্টাসের ‘কোহলি–বুমরার বাবা হওয়া’র স্ক্রিনশট।

‘ফাদার অব কোহলি–বুমরা’ কনস্টাস অবশ্য রবীন্দ্র জাদেজার বলে থেমেছেন ৬৫ বলে ৬০ রান করে। এর আগে ৫২ বলে তুলে নেন ফিফটি। যার ফলে অভিষেকে অস্ট্রেলিয়ার হয়ে তৃতীয় দ্রুততম হাফ সেঞ্চুরিয়ানও এখন কনস্টাস।