সৌদি টেনিস ফেডারেশনের সঙ্গে নিজেকে যুক্ত করেছেন রাফায়েল নাদাল
সৌদি টেনিস ফেডারেশনের সঙ্গে নিজেকে যুক্ত করেছেন রাফায়েল নাদাল

নাদালও সৌদি আরবে

সৌদি আরব তাহলে কোনো কিছুই বাদ রাখছে না!

কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা দিয়ে ইউরোপ থেকে তারকাদের উড়িয়ে আনা হয়েছে। তাতে আলাদা করে নজর কেড়েছে সৌদি প্রো লিগ। ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো, করিম বেনজেমা, নেইমার থেকে সাদিও মানে, কে নেই! চোখ পড়েছে গলফেও। সৌদির সার্বভৌম সম্পদ তহবিল ‘পাবলিক ইনভেস্টমেন্ট ফান্ডের’ (পিআইএফ) অর্থায়নে পেশাদার গলফের সবচেয়ে বড় টুর্নামেন্ট পিজিএ ট্যুরের প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে এলআইভি গলফ ট্যুর চালু করেছে, যা গলফ–বিশ্বকেই দুই ভাগে বিভক্ত করেছিল। বিনিয়োগ করেছে ফর্মুলা ওয়ানেও।

ক্রিকেটও সম্ভবত বাদ পড়ছে না। গত ডিসেম্বরেই ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম মেইল অনলাইন জানিয়েছে, আইপিএলের আদলে একটি ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্ট আয়োজনের কথা ভাবছে সৌদি আরব। খেলাধুলা দিয়ে বৈশ্বিকভাবে সৌদির ইমেজ বাড়ানোর এই প্রচেষ্টায় তাহলে টেনিস বাদ থাকবে কেন? না, সেটিও বাদ পড়ছে না। গতকাল সৌদি টেনিস ফেডারেশনের দূত হিসেবে রাফায়েল নাদালের নাম ঘোষণা করা হয়েছে। খেলাধুলার জগতে নিজেদের পদচারণ বাড়াতে আরও বেশি করে পেশাদার টুর্নামেন্ট আয়োজন করতে চায় সৌদি আরব। সে চেষ্টাতেও বেশ খানিকটা এগিয়ে গেছে দেশটি। এরই মধ্যে ২০৩৪ বিশ্বকাপের আয়োজক হিসেবে সৌদি আরবের নাম ঘোষণা করা হয়েছে।

সৌদি টেনিস ফেডারেশনের বিজ্ঞপ্তিতে ২২টি গ্র্যান্ড স্ল্যামজয়ী স্প্যানিশ কিংবদন্তি নাদাল বলেছেন, ‘সৌদি আরবের যেখানেই তাকান, সমৃদ্ধি এবং উন্নতি দেখতে পাবেন। আমি এর অংশ হতে পেরে রোমাঞ্চিত। আমি টেনিস চালিয়ে যাব, কারণ খেলাটাকে ভালোবাসি। কিন্তু নিজের খেলার বাইরে আমি চাই এই খেলাটা বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়ুক। সৌদি আরব এ ক্ষেত্রে সত্যিই সম্ভাবনাময় দেশ।’

সৌদি আরবের খুদে টেনিস শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নাদাল

প্রায় এক বছর বিরতির পর ব্রিসবেন ইন্টারন্যাশনাল দিয়ে কোর্টে ফিরেছিলেন নাদাল। এরপর তাঁর চলতি অস্ট্রেলিয়ান ওপেনে খেলার কথা থাকলেও ব্রিসবেনে কোয়ার্টার ফাইনালে পাওয়া চোটে বছরের প্রথম গ্র্যান্ড স্লাম থেকে ছিটকে পড়েন। নাদাল এর আগে বলেছিলেন, ২০২৪ সালে অস্ট্রেলিয়ান ওপেনকে বিদায় বলার ‘উচ্চ সম্ভাবনা’ আছে।

২০২৩ সালটা টেনিসে ব্যস্ত সময় কাটিয়ে নাদালকে নিজেদের দূত হিসেবে ঘোষণা করেছে সৌদি টেনিস ফেডারেশন। গত বছর প্রথম এটিপি ট্যুর ইভেন্ট আয়োজন করেছে সৌদি আরব। এ ছাড়া দুটি প্রদর্শনী ম্যাচও আয়োজন করা হয়েছে গত বছর—নোভাক জোকোভিচ বনাম কার্লোস আলকারাজ এবং আরিয়ানা সাবালেঙ্কা বনাম উনস জাবির।

নাদাল সম্প্রতি সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদে ছোটদের একটি টেনিস প্রশিক্ষণ সেন্টার দেখতে গিয়েছিলেন। গতকাল সৌদি টেনিস ফেডারেশন জানিয়েছে, দূত হিসেবে নতুন ভূমিকায় তিনি ‘প্রতিবছর সৌদিতে সময় দেবেন’ এবং খেলাটির উন্নয়নে সাহায্য করার পাশাপাশি রাফায়েল নাদাল টেনিস একাডেমি তৈরির অগ্রগতিও পর্যবেক্ষণ করবেন।

সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের ‘ভিশন ২০৩০’ সংস্কার প্রকল্পে খেলাধুলায় অনেক গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। সৌদি আরবকে পর্যটন এবং ব্যবসার অন্যতম প্রাণকেন্দ্রে রূপান্তরিত করতে চান তিনি। তবে সমালোচনাও চলছে। খেলাধুলাকে ব্যবহার করে সৌদির আন্তর্জাতিক খ্যাতি বাড়ানোর এই চেষ্টাকে ‘স্পোর্টস ওয়াশিং’ বলছেন সমালোচকেরা। অন্যদিকে সৌদি আরবে মানবাধিকার লঙ্ঘন নিয়ে বহু আগে থেকেই সোচ্চার উন্নত বিশ্ব।

খুদে টেনিস শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কুশল বিনিময়ও করেন নাদাল

গত বছর নভেম্বর-ডিসেম্বরে জেদ্দায় নেক্সট জেন এটিপি ফাইনালসের আয়োজন করেছিল সৌদি টেনিস ফেডারেশন। এ নিয়ে ফেডারেশনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এই টুর্নামেন্ট ‘ইঙ্গিত দেয় যে টেনিসকে আন্তর্জাতিক ক্যালেন্ডারের গুরুত্বপূর্ণ অংশ বানাতে চাই আমরা এবং এখানে আয়োজিত হতে যাওয়া অনেক পেশাদার টেনিস টুর্নামেন্টের শুরুটা হলো এটা (নেক্সট জেন এটিপি ফাইনালস) দিয়ে।’